Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

হিন্দু হস্টেল খুলল না, ধর্না প্রেসিডেন্সিতে

কিন্তু সময় ঘোষণার পরেও হস্টেল ফিরিয়ে দেওয়া গেল না কেন? উপাচার্য জানান, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সংস্কার করে হিন্দু হস্টেলে আবাসিকদের থাকতে দেওয়া সম্ভব বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। এ কথা তিনি জানাননি।

হিন্দু হস্টেল এখন যেমন। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুমন বল্লভ

হিন্দু হস্টেল এখন যেমন। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৩৭
Share: Save:

দীর্ঘ আন্দোলনের পরে হিন্দু হস্টেল ফেরত পাওয়ার আশায় ছিলেন ছাত্রেরা। কিন্তু তারিখ জানানোর পরেও বৃহস্পতিবার আবাসিকদের জন্য ওই হস্টেল খুলে দেওয়া গেল না। ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা আবার অবস্থানে বসে পড়েছেন। বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিয়েছেন উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া।

কিন্তু সময় ঘোষণার পরেও হস্টেল ফিরিয়ে দেওয়া গেল না কেন? উপাচার্য জানান, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সংস্কার করে হিন্দু হস্টেলে আবাসিকদের থাকতে দেওয়া সম্ভব বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। এ কথা তিনি জানাননি।

হিন্দু হস্টেলের একটি অংশ ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সংস্কার করে আবাসিকদের থাকতে দেওয়া সম্ভব বলে অক্টোবরে প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। তার পরে আন্দোলন স্থগিত রাখেন পড়ুয়ারা। হস্টেলের দু’টি ঘরে জিনিসপত্রও রাখতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ এ দিন জানান, হস্টেল এখনই খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। হস্টেল খুলতে আরও দিন পনেরো সময় লাগবে।

সংস্কারের জন্য হিন্দু হস্টেল বন্ধ করে দেওয়া হয় ২০১৫ সালের জুলাইয়ে। আবাসিকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয় রাজারহাটে। কথা ছিল, ১১ মাসের মধ্যে সংস্কার শেষ করে চালু হয়ে যাবে হিন্দু হস্টেল। কিন্তু এত দিনেও তা হয়নি। অগস্টের গোড়ার দিকে রাজারহাটের হস্টেল থেকে ক্যাম্পাসে এসে অবস্থান শুরু করেন আবাসিকেরা। পরে অনশনেও বসেন তাঁরা। উচ্চশিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে পূর্ত দফতর এবং বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষকে নিয়ে হিন্দু হস্টেলের বিষয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু সুরহা না-হওয়ায় কিছু দিন আগেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী।

উপাচার্য জানান, পূর্ত দফতর এ দিন হিন্দু হস্টেল নিয়ে যে-রিপোর্ট তাঁকে দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কিছু কাজ বাকি। এ দিন হস্টেলের যে-অংশ পড়ুয়াদের দেওয়ার কথা ছিল, সেই বিল্ডিং ওয়ানেও সংস্কারের কাজ বাকি আছে। মেঝের কাজ, নিকাশি, ভিতরে রঙের কাজ শেষ হয়নি। লন সংস্কারের কাজও বাকি। শেষ হয়নি আরও কিছু কাজ। হস্টেল বসবাসের উপযুক্ত হয়েছে, এমন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। অগ্নি নির্বাপক ব্যবস্থা যথাযথ কি না, তারও সার্টিফিকেট মেলেনি। নিরাপত্তা সার্টিফিকেটও দেয়নি পূর্ত দফতর। উপাচার্য বলেন, ‘‘১৫ নভেম্বরের মধ্যে হস্টেল সংস্কার করে আবাসিকদের থাকতে দেওয়া সম্ভব বলে সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল। আমরা কোনও ডেডলাইন দিইনি।’’ তাঁর দাবি, জানুয়ারির আগে যে হস্টেল খুলে দেওয়া সম্ভব নয়, তাঁরা সেটা বারে বারেই জানিয়েছেন। কিন্তু সরকার চেয়েছিল, তাড়াতাড়ি হস্টেল খুলে দেওয়া হোক।

শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, সরকারের দিকে আঙুল তুলে লাভ নেই। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘হস্টেল দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ। কেন দেওয়া গেল না, সেটা দেখব। বিশ্ববিদ্যালয়ের গাফিলতি আছে, নাকিযারা কাজ করছে, সেই পূর্ত দফতরের দিক থেকে দেরির কোনও কারণ আছে— সবই খতিয়ে দেখা হবে।’’

হস্টেল না-পাওয়ায় কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দেন পড়ুয়াদের একাংশ। ক্যাম্পাসে অবস্থান শুরু করেন তাঁরা। ধর্না চালিয়ে যান সারা রাত। অন্যতম আন্দোলনকারী শুভজিৎ সরকার বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ আমাদের কথা দিয়েও রাখতে পারেনি। তাই আমরা আবার আন্দোলনের পথে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest Hindu Hostel Presidency University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE