Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ধোম জলাধারে মৃত্যু মানকুণ্ডুর গবেষকের

শনিবার বন্ধুদের সঙ্গে তিনি গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের সাতারার ধোম জলাধারে। কিন্তু ফেরা হল না। স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃত্যু হল মানকুণ্ডুর বাসিন্দা সৌম্যজিৎ সাহার (২৫)। একই ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর বন্ধু, আর এক গবেষক ছত্তীসগঢ়ের অবনীশ শ্রীবাস্তবেরও (২৭)।

সৌম্যজিৎ।

সৌম্যজিৎ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানকুণ্ডু শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৭
Share: Save:

পড়াশোনার পাশাপাশি ভালবাসতেন বেড়াতে। তাই মুম্বইতে টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর)-এ ক্যানসার নিয়ে গবেষণার ফাঁকে সুযোগ পেলেই পাড়ি দিতেন পাহাড় বা সমুদ্রে। শনিবার বন্ধুদের সঙ্গে তিনি গিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রের সাতারার ধোম জলাধারে। কিন্তু ফেরা হল না। স্নান করতে নেমে জলে ডুবে মৃত্যু হল মানকুণ্ডুর বাসিন্দা সৌম্যজিৎ সাহার (২৫)। একই ভাবে মৃত্যু হয় তাঁর বন্ধু, আর এক গবেষক ছত্তীসগঢ়ের অবনীশ শ্রীবাস্তবেরও (২৭)।

ওই রাতেই জলাধারে সৌম্যজিতের নিখোঁজ হওয়ার কথা এসে পৌঁছয় মানকুণ্ডুর তেঁতুলতলা লেনে তাঁর বাড়িতে। সৌম্যজিতের বাবা হরিপ্রসাদ সাহা বিশিষ্ট চিকিৎসক। রাতেই তিনি স্ত্রী নিবেদিতাদেবীকে নিয়ে মুম্বই চলে যান। রবিবার সকালে জলাধারে ফের তল্লাশি চালায় স্থানীয় প্রশাসন। ওই পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে সৌম্যজিতের দেহ মেলে। কিছুক্ষণ পরে মেলে অবনীশের দেহ। দেহ দু’টি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়।

এলাকার কৃতী ছেলেটির এ ভাবে মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা তেঁতুলতলা লেন। সৌম্যজিতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে চন্দননগরের অরবিন্দ স্কুল, তারপরে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে তাঁর পড়াশোনা। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএসসি। এর পরে ২০১৩ সালে পাড়ি দেন মুম্বই। ক্যান্সার নিয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পান টিআইএফআর-এ। কোলাবায় ইনস্টিটিউটেরই ছাত্রাবাসে থাকতেন। তাঁর গবেষণার এটা ছিল পঞ্চম বছর। তা আর শেষ হল না।

শোকার্ত পরিজনেরা।

সৌম্যজিৎ শেষবার মানকুণ্ডু এসেছিলেন গত বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়। প্রতিদিন বাবা-মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। তাঁর কাছ থেকেই পরিবারের লোকেরা জানেন, শনিবার দুপুরে দু’টি মোটরবাইকে ইনস্টিটিউটের চার বন্ধুর সঙ্গে সাতারার ওয়াই এলাকায় ধোম জলাধারে যাওয়ার পরিকল্পনার কথা। তার পরে? সৌম্যজিতের কাকা গুরুপ্রসাদবাবু জানান, ওখানে দুপুরের খাওয়ার আগে ওঁরা জলাধারে স্নান করতে নামেন। সৌম্যজিৎ সাঁতার জানতেন না। তাঁকে তলিয়ে যেতে দেখে অবনীশ এগিয়ে যান। কিন্তু দু’জনেই তলিয়ে যান। বাকি দুই বন্ধু সমীর মিশ্র এবং শ্রীকান্ত মূর্তি ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষকে দুর্ঘটনার কথা জানান। তার পরেই শুরু হয় তল্লাশি।

রবিবার সৌম্যজিতের বাড়িতে পাড়া-পড়শির ভিড়। সৌম্যজিতের বোন আত্রেয়ী কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। সৌম্যজিতের খুড়তুতো দাদা শুভাশিস বলেন, ‘‘ভাই সাঁতার জানত না। সে জন্য গভীর জলে নামত না। কিন্তু এখানে যে কী ঘটল বুঝতে পারছি না। বেড়াতে ভালবাসত। বেড়াতে গিয়ে আর ফিরল না।’’

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE