Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Traffic Jam

থিকথিকে ভিড়, জ্যাম, ক্যাব চাইছে ৬০০ টাকা, সোদপুর থেকে ধর্মতলা এলাম আজ যে ভাবে

একটার আগেই বাড়ি থেকে বেরোলাম। সোদপুর স্টেশনের কাছেই বাড়ি। মিনিট পাঁচেকের হাঁটা। যেতে যেতেই টের পাচ্ছিলাম পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি।

এ ভাবেই দীর্ঘক্ষণ জ্যামে নাজেহাল হল বিটি রোড। —ফাইল চিত্র।

এ ভাবেই দীর্ঘক্ষণ জ্যামে নাজেহাল হল বিটি রোড। —ফাইল চিত্র।

সুচরিতা সেন চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৭:৫৬
Share: Save:

খবর পেয়েছিলাম, সোদপুর স্টেশনে যাত্রী বিক্ষোভ এবং রেল অবরোধ চলছে। সেই সকাল ১০টা থেকে। এমনিতেই সিগন্যালিং-এর কাজের জন্য শুক্র থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত প্রচুর ট্রেন বাতিল করেছে রেল। তার উপর অবরোধ!

চাঁদনি চকের অফিসে ঢুকতে হবে দুপুর ২টোর মধ্যে। পরে খবর পেলাম, সাড়ে ১২টা নাগাদ অবরোধ উঠে গিয়েছে বা উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাই হোক... নিশ্চিন্ত হলাম।

একটার আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম। সোদপুর স্টেশনের কাছেই বাড়ি। মিনিট পাঁচেকের হাঁটা পথ। যেতে যেতেই টের পাচ্ছিলাম পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। প্ল্যাটফর্মে পা দিতেই বুঝতে পারলাম, ট্রেনে যেতে গেলে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। থিকথিক করছে লোক। পুলিশও রয়েছে। ট্রেনের কোনও ঘোষণা নেই। ট্রেন এলেও, তাতে যে ওঠা যাবে না, সেটা ভাল মতোই বুঝতে পারছিলাম। তাই একটুও অপেক্ষা না করেই বিটি রোডের দিকে এগিেয়ছিলাম।

স্টেশন থেকে টোটো করে সোজা চলে বিটি রোড। সোদপুর ট্র্যাফিক মোড়ে বেশ কয়েকটা ট্যাক্সি দাঁড়িয়ে। কিন্তু, সবাইকে দেখলাম যাত্রী প্রত্যাখ্যান করতে। আর কিছু পাই না-পাই ওলা-উব্‌র তো পাব! সেই ভরসায় মোবাইল ঘাঁটতে শুরু করি। উব্‌র-এ শেয়ার গাড়ি নেই। মিনি উব্‌র ৬০০র উপর টাকা চাইছে। এমনিতে যা ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করে। ওলাও একই অবস্থা। শেয়ারে ভাড়া ২৩৫ টাকা। মিনি ওলার ভাড়াও উব্‌রের কাছাকাছি। তাও সই... ভেবে যখন বুক করতে গেলাম, তখন জানিয়ে দেওয়া হল— কোনও গাড়ি নেই।

আরও পড়ুন
আড়াই ঘণ্টা চরম দুর্ভোগ, শেষে যাত্রীরাই তেড়ে এসে অবরোধ তুললেন সোদপুরে

এ বার অটোই ভরসা। সেখানেও অন্য সমস্যা। রাস্তায় এতই জ্যাম যে, বেশির ভাগ অটোই রথতলা পর্যন্ত যাচ্ছে। এর মধ্যেই একটি অটো পাওয়া গেল। সোদপুর থেকে ডানলপ পৌঁছতে সাধারণ ভাবে সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ মিনিট। আজ লাগল এক ঘণ্টার মতো।

ভাবছিলাম ডানলপ পৌঁছে গিয়েছি, আর টেনশন নেই। কিন্তু, তখনও অপেক্ষা করছিল আরও বিড়ম্বনা। বাসে মানুষ যেন বাদুড়ঝোলা। ট্যাক্সি বলছে, ডাবল টাকা দিতে হবে। আবারও ওলা, উবর খুঁজতে শুরু করলাম। না, কোনও পরিবর্তন নেই। অনেক কষ্টে একটা শেয়ার ওলা পাওয়া গেল। ডানলপ থেকে চাঁদনি চকের শেয়ারে ভাড়া ১৯০ টাকা। তাই সই। বুক করে ফেললাম। ড্রাইভারকে ফোন করলাম। তিনি ফোনটি কেটে দিলেন। আবার করলাম, আবারও কেটে দিলেন। অগত্যা বুকিং ক্যানসেল করতে বাধ্য হলাম। আবার অপেক্ষা। ট্যাক্সির যাত্রী প্রত্যাখ্যান এখানেও অব্যাহত।

সৌভাগ্যক্রমে হঠাত্ই একটা ট্যাক্সি পেয়ে গেলাম। চালকের দাবি, ‘‘মিটারের থেকে ২০ টাকা বেশি দেবেন ম্যাডাম।’’ এ তো দারুণ পাওনা! লাফিয়ে উঠে পড়লাম। ট্যাক্সিতে বসেই ফোনে এক জনকে পুরো পরিস্থিতির কথা বলছিলাম। ফোন ছাড়তেই চালকের প্রশ্ন, ‘‘ট্রেন বন্ধ?’’ আমি বললাম, ‘‘হ্যাঁ, অবরোধ। রাস্তায় জ্যাম। খুব খারাপ অবস্থা।’’

বুঝলাম, এই ট্যাক্সিচালক জানতেন না কিছুই। আমার থেকে সব শুনে যেন একটু হতাশই হলেন!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rail Block Train Block Sodepur Indian Railway
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE