Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

এইচআইভি-ছুতমার্গ হাসপাতালেও!

মহিলার স্বামী তাঁকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। অভিযোগ, সেখানে চিকিৎসক রজত দেবনাথ এবং অভিজিৎ সরকার আগের প্রেসক্রিপশন দেখে বলেন, রোগিণীকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া যাবে না। পরিবারের লোকেরা অনুরোধ করলে নার্সেরা প্রেসক্রিপশন ছুড়ে ফেলে দেন বলেও অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৪:৫৬
Share: Save:

এইচআইভি আক্রান্ত জেনে প্রথমে রোগিণীকে হাসপাতালে ভর্তি নিতে অস্বীকার করলেন চিকিৎসক ও নার্সেরা। পরে গণচাপে ভর্তি নিতে বাধ্য হল হাসপাতাল। বুধবার রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, সাধারণ মানুষের মধ্যে এইচআইভি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পেলেও চিকিৎসক-নার্সদের একাংশের এই মানসিকতা কেন!

রোগিণীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রায়গঞ্জের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ৫০ বছরের ওই মহিলা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। কিসানগঞ্জের বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সেখানে রোগিণীর দেহে এইআইভি জীবাণু ধরা পড়ে। মহিলার স্বামী তাঁকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। অভিযোগ, সেখানে চিকিৎসক রজত দেবনাথ এবং অভিজিৎ সরকার আগের প্রেসক্রিপশন দেখে বলেন, রোগিণীকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া যাবে না। পরিবারের লোকেরা অনুরোধ করলে নার্সেরা প্রেসক্রিপশন ছুড়ে ফেলে দেন বলেও অভিযোগ। রোগিণীর পরিবারের বক্তব্য, চিকিৎসকেরা গালিগালাজ করে, নিরাপত্তারক্ষীদের ডেকে তাঁদের বার করে দেন।

এর পর রোগিণীর মেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যান পারিষদ বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করেন। তিনি তৃণমূলের রোগী সহায়তা কেন্দ্রের সদস্যদের হাসপাতালে পাঠান। রোগিণীকে কেন ভর্তি নেওয়া যাবে না, তাঁরা হাসপাতালে গিয়ে তা জানতে চান। এরপরই উত্তেজনা তৈরি হয় হাসপাতালে। সেখানে যান বরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। খবর পেয়ে আসেন হাসপাতালের সুপার গৌতম মণ্ডল। প্রবল চাপের মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত ভর্তি করানো হয় ওই মহিলাকে।

পরে অভিযুক্ত দুই চিকিৎসকের একজন রজত দেবনাথকে শো-কজ করেন সুপার। তবে, অন্য চিকিৎসক বা নার্সদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এদিকে, চিকিৎসক রজত দেবনাথ ছুটিতে রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর। ছুটিতে থেকেও তিনি জরুরি বিভাগে কেন রোগী দেখছিলেন, উঠছে সে প্রশ্নও। ফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিজিৎ সরকার দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি জরুরি বিভাগে ছিলেন না। ফোন ধরেননি রজত দেবনাথ।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘সুপারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি।’’ হাসপাতাল সুপার বলেন, ‘‘একজন চিকিৎসককে শো-কজ করা হয়েছে।’’ উত্তরবঙ্গ মে়ডিক্যালের মানসিক রোগ বিভাগের প্রধান নির্মল বেরার কথায়, ‘‘কাউন্সিলর ও স্থানীয়রা যে রোগিণীর পাশে দাঁড়িয়েছেন, এটা ভাল দিক। তবে যে চিকিৎসক ও নার্সেরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

HIV AIDS Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE