ধুলোয় ঢেকেছে ফরাক্কা ব্যারাজ সেতু। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
বেহাল পথ, অগুনতি খানা-খন্দ, দেদার ধুলো আর দীর্ঘ যানজট।
এটাই গঙ্গার উপরে ফরাক্কা ব্যারাজের সেতুপথের হাল!
আর সেতুর নীচের গেটগুলোর (যা মূলত জলাধারের জল নিয়ন্ত্রণ করে) কী অবস্থা?
ব্যারাজ সূত্রে খবর, গত দু’বছর আগে পর্যন্ত মূল ব্যারাজের ১০৯টি গেট সংস্কার হয়নি। ১৯৮৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত আট বার গেট ভেঙেছে। তবে ২০১৬ থেকে গেট সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে।
৪৩ বছরের পুরনো এই সেতুর দেখভালের দায়িত্ব ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষের। ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজার শৈবাল ঘোষের দাবি, ‘‘সেতুর নীচের গেট সংস্কারের কাজ চলছে পুরোদমে। ফলে সেতু নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। তবে সেতুর উপরের রাস্তার হাল খারাপ।’’
সেতু কাহিনি
• বয়স: ৪৩ বছর।
• দৈর্ঘ্য: ২২৪৫ মিটার।
• চালু হয়: ২১ এপ্রিল, ১৯৭৫
• নির্মাণকারী: হিন্দুস্তান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (এইচসিসি)
• রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে: ফরাক্কা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ।
• এলাকা: এক দিকে ফরাক্কা শহর, অন্য দিকে মালদহের বৈষ্ণবনগর।
• গঠন: কংক্রিট (নীচে লোহার তৈরি ১০৯টি লকগেট ড্যাম)।
• শেষ পর্যবেক্ষণ: নিয়মিত
কী রকম?
বর্তমানে গোটা সেতুর কোথাও পিচ প্রায় নেই বললেই চলে। অন্তত ৫৫টি জায়গায় বড় বড় গর্ত। বেরিয়ে পড়েছে লোহার শিক। চার জায়গায় কংক্রিটের রেলিং বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে। শ্লথ গতিতে গাড়ি চললেও ধুলোয় ঢেকে যায় গোটা রাস্তা। ধুলো থেকে বাঁচতে সিআইএসএফ জওয়ানেরা পর্যন্ত মাথায় গামছা জড়িয়ে রাস্তা ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন সেতুর পাশের একটি ঘরে।
সেতুর উপরের এই রাস্তা সংস্কার হবে কবে?
সে প্রশ্নের অবশ্য সদুত্তর মেলে না। ব্যারাজ সূত্রে খবর, সেতুপথ সারাতে ২০১৭ সালের মার্চে টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। বরাদ্দও হয়েছে ১০ কোটি ৬ লক্ষ টাকা।
তার পরেও রাস্তা সংস্কার হল না কেন?
শৈবালবাবু বলছেন, ‘‘টেন্ডার, ওয়ার্ক অর্ডার সব হয়ে রয়েছে। কিন্তু দফায় দফায় বৈঠকের পরেও রাজ্য প্রশাসনের অনুমোদন না মেলায় সেতুপথের সংস্কার করা যাচ্ছে না।’’
টাকার যখন অভাব নেই, তখন কেন অনুমোদন মিলছে না এই কাজে?
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ এই সেতুপথ সংস্কার করতে দু’মাস সময় চাইছেন। গুরুত্বপূর্ণ সেতুতে টানা এই কাজ চললে যানজট সামলানো আমাদের পক্ষে অসম্ভব।’’
তা হলে উপায়?
ওই পুলিশ কর্তা জানান, ফরাক্কার বর্তমান সেতুটি দু’লেনের। গঙ্গার উপর আর একটি চার লেনের সেতুর টেন্ডার হয়েছে। সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার ওই সেতুর জন্য বরাদ্দও হয়েছে প্রায় ৫১৭ কোটি টাকা। তিন বছরের মধ্যে সেতু তৈরির কথা। তাই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল, আপাতত পিচের তাপ্পি দিয়ে খানা-খন্দ বন্ধ করা হোক। ততদিনে চার লেনের সেতুটি তৈরি হয়ে যাবে।
তবে জট কাটাতে দফায় দফায় বৈঠক চলছে। কিন্তু সমাধান না মেলায় আপাতত শিকেয় উঠেছে সেতুর উপরে রাস্তা সংস্কারের কাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy