Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পাওনা মিলছে না, হাতিয়ার ফেসবুক

এই অস্ত্র কতদূর কাজে আসবে তা স্পষ্ট নয়। টাকা আদায়ের ওই ‘ফেসবুক পোস্ট’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক কনক সরকার এবং তাঁর বিতর্কিত পোস্ট।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক কনক সরকার এবং তাঁর বিতর্কিত পোস্ট।

সুব্রত জানা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৯
Share: Save:

ধার দিয়ে ফেরত পাননি। বারবার তাগাদা দিয়ে হয়রান হয়ে শেষ পর্যন্ত ‘ফেসবুক’-কে টাকা আদায়ের অস্ত্র হিসেবে বেছে নিলেন হাওড়ার এক ব্যবসায়ী! তবে, এই অস্ত্র কতদূর কাজে আসবে তা স্পষ্ট নয়। টাকা আদায়ের ওই ‘ফেসবুক পোস্ট’ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

উলুবেড়িয়ার ফতেপুরের বীরেন নাথ নামে ওই ইমারতি ব্যবসায়ী ফেসবুকে নিশানা করেছেন ফুলেশ্বরের এক ঠিকাদারকে। বীরেনবাবুর অভিযোগ, ধারে মাল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে টাকা শোধ করছেন না ওই ঠিকাদার। তাঁকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। ঠিকাদার অভিযোগ মেনে বলেন, ‘‘অনেক লোকসান হয়েছে। বাড়িঘর বিক্রি হয়ে গিয়েছে। পাওনাদারের জ্বালায় লুকিয়ে বেড়াচ্ছি। ধীরে ধীরে শোধ করে দেব। হাতে টাকা নেই বলে বীরেনবাবুর সঙ্গে দেখা করছি না।’’

বীরেনবাবুর ‘কীর্তি’ দেখে স্থানীয়দের অনেকেই মজা পাচ্ছেন। কেউ আবার ছ্যা ছ্যা করছেন। তাঁদের মতে, থানা-পুলিশ আছে। আইন-আদালত আছে। ব্যবসায়ী সেখানে না-গিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়! টাকা-পয়সা নিয়ে দু’জনের আকচা-আকচি কেন কোটি কোটি লোকের মধ্যে ছড়ানো হবে? একই প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী রেজাউল করিমও।

এ সব গায়ে মাখছেন না বীরেনবাবু। তাঁর একটাই কথা, ‘‘চার বছর থেকে ওই ঠিকাদারের থেকে ৪৫ হাজার ৪৫০ টাকা পাই। অনেক তাগাদা করেছি। কিছুতেই দিচ্ছেন না। কী করব? তাই ফেসবুকে জানালাম। যাতে আর কেউ ওঁকে ধার না-দেন।’’

ঘটনাটা ঠিক কী?

ওই ব্যবসায়ীর দাবি, ২০১৫ সালের গোড়ার দিকে ফুলেশ্বরের ওই ঠিকাদার তাঁর কাছ থেকে ৯৫ হাজার ৪৫০ টাকার ইমারতি দ্রব্য কেনেন। ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়ে বাকি ৪৫ হাজার ৪৫০ টাকা কয়েকদিন পরে দেবেন বলে ধারে মাল নিয়ে যান। কিন্তু আর টাকা মেলেনি। ঠিকাদারের বাড়ি গিয়ে দেখা মিলছে না। ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না। তাই ৪ জানুয়ারি ‘ফেসবুক’-এ ওই ‘পোস্ট’। ঠিকাদারের নাম করে বীরেনবাবু লিখেছেন, ‘আমি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। ২০১৫ সাল থেকে আপনি আমার ৪৫ হাজার ৪৫০ টাকা দিয়ে যাননি কেন’? সঙ্গে ওই ঠিকাদারের সস্ত্রীক ছবি। এই পোস্টে বিস্তর লাইক পড়েছে।

ঠিকাদার না-হয় পাওনা মেটাননি। কিন্তু ফেসবুকে তাঁর স্ত্রীর ছবিও কেন? বীরেনবাবুর উত্তর, ‘‘আমার থেকে মাল নিয়ে ব্যবসা করে ওঁরা দু’জনেই আমোদ করেছেন। তাই।’’ তাঁর সস্ত্রীক ছবি যে বীরেনবাবু ফেসবুকে দিয়েছেন, তা অজানা নয় ওই ঠিকাদারের। তাঁর খেদ, ‘‘আমার কিছু করার নেই। তবে উনি ওটা না-করলেই পারতেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

facebook ফেসবুক
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE