Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পাতে পড়া ডিম, সয়াবিন চাখবেন থানার বড়বাবুরা

পুলিশ সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে বৈঠকে উপস্থিত প্রতিটি থানার অফিসার-ইন-চার্জদের উদ্দেশে পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী জানান, স্কুলগুলিতে সপ্তাহে এক দিন নিয়ম করে গিয়ে মিড-ডে মিলের খাবার খেয়ে দেখতে হবে।

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

শান্তনু ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০৭:৪০
Share: Save:

মিড-ডে মিলের ভাত-ডিমের ঝোল বা আলু-সয়াবিনের তরকারি এ বার খেয়ে দেখবেন থানার বড়বাবুরাও। সম্প্রতি হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের অপরাধ-দমন বৈঠকে উপস্থিত আধিকারিকদের এমনই নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।

রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে মিড-ডে মিলের মান বজায় থাকছে কি না, সে দিকে নজর দিতে সব সময়েই স্থানীয় প্রশাসনকে এগিয়ে আসার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশিকাতেও স্পষ্ট বলা রয়েছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে প্রতি দিন খাবারের মান পরীক্ষা করে দেখতে হবে। হাওড়া শহরে তার সঙ্গে এ বার যুক্ত হল পুলিশি পরীক্ষা।

কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী প্রায় সব প্রশাসনিক বৈঠকেই মিড-ডে মিলের মান বজায় রাখার উপরে জোর দেন। স্থানীয় প্রশাসনকে খোঁজ-খবর রাখতে বলেন। সে জন্যই স্থানীয় থানার বড়বাবুদের এই কাজে অংশ নিতে বলা হয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের স্কুলে মিড-ডে মিলের খাবারের মান নিয়ে মাঝেমধ্যেই অভিযোগ ওঠে। কখনও পচা বা আধসিদ্ধ খাবার, চালে কাঁকর ভর্তি ভাত দেওয়া হচ্ছে বলে যেমন অভিযোগ রয়েছে, তেমনই সরকারের নির্ধারিত রুটিন মানা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ আসে। আবার, ভাল মানের চাল-ডাল কিনেও নিম্ন মানের খাবার দেওয়া হয় বলেও কখনও সখনও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, সব জায়গায় রান্নাঘরও স্বাস্থ্য সম্মত হয় না। রাজ্যের কয়েকটি জায়গায় সেই খাবার খেয়ে পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়েছে, এমন নজিরও আছে।

রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, সর্বশিক্ষা মিশন প্রকল্পে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের মিড-ডে মিল দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। ভাত, ডিমের ঝোল, সয়াবিন, মাংস থাকে সেই মেনুতে।

হাওড়া শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে ১৪টি থানা এলাকায় প্রায় কয়েকশো স্কুলে মিড-ডে মিল চলে। পুলিশ সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে বৈঠকে উপস্থিত প্রতিটি থানার অফিসার-ইন-চার্জদের উদ্দেশে পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী জানান, স্কুলগুলিতে সপ্তাহে এক দিন নিয়ম করে গিয়ে মিড-ডে মিলের খাবার খেয়ে দেখতে হবে। কথা বলতে হবে প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের সঙ্গে। কমিশনারেটের শীর্ষ কর্তাদের ব্যাখ্যা, উর্দিধারী আধিকারিক যদি স্কুলে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে খাবার খান তা হলে খুদেরাও উৎসাহ পাবে। মিড-ডে মিলের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও বিষয়টিতে সতর্ক থাকবেন। ইতিমধ্যেই নিজেদের এলাকার স্কুলগুলিতে ঘুরতে শুরু করেছেন থানার বড়বাবুরা।

হাওড়ার জেলাশাসক চৈতালি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘খুবই ভাল উদ্যোগ। এলাকার বি‌ভিন্ন জায়গায় পুলিশের আধিকারিকেরা যান। তাই মিড-ডে মিল নিয়ে যদি তাঁরা কখনও কোনও খবর পান এবং সেটি আমাদের জানান, তা হলে খুবই উপকার হবে।’’ উদ্যোগটি ভাল বলে মনে করছেন হাওড়া বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক সুবীরকুমার বেরা। তিনি বলেন, ‘‘কোনও একটা জায়গায় নজরদারি থাকা তো দরকার।’’ বালি শিক্ষা নিকেতন বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি সুব্রত গোস্বামীর কথায়, ‘‘পুলিশি পরীক্ষা চালু হলে খাবারের মান নিয়েও কেউ কোনও গাফিলতির অভিযোগ তুলতে পারবেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Midday meal Howrah police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE