Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

অনীতদের সভায় উপচে পড়ল ভিড়

ঘটনাচক্রে, এ দিনের সভায় বিনয় ছিলেন না। তিনি সর্বদল বৈঠকের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বলে দল সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তাই এ দিনের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ নেতা এল এন রাই। তাঁর পাশে ছিলেন জিটিএর সভাসদ সতীশ পোখরেল, অনীত থাপা, শিরিং দহেলরা।

গুরুঙ্গকে যে মোর্চা থেকেই সরিয়ে দেওয়া হতে পারে, তার ইঙ্গিত মিলেছে অনীতের কথায়। ফাইল চিত্র।

গুরুঙ্গকে যে মোর্চা থেকেই সরিয়ে দেওয়া হতে পারে, তার ইঙ্গিত মিলেছে অনীতের কথায়। ফাইল চিত্র।

অনির্বাণ রায় ও প্রতিভা গিরি
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৯
Share: Save:

সামনেই পাহাড় নিয়ে সর্বদল বৈঠক। তার মুখে পাহাড়ে নিজেদের নিঃসংশয় নেতৃত্ব কায়েম করার চেষ্টা করলেন মোর্চার বিনয় তামাঙ্গ-অনীত থাপার শিবির। গুরুঙ্গের অডিও বার্তার নিষেধ না শুনে কাতারে কাতারে মানুষ রবিবার ভিড় করলেন দার্জিলিঙের মোটরস্ট্যান্ডে তামাঙ্গ-থাপা শিবিরের সভায়। ভিড় টানার পরীক্ষায় সফল হয়ে আজ, সোমবার, মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সভাপতির পদ থেকে গুরুঙ্গকে সরানোর পথও কার্যত তৈরি করে ফেললেন বিনয়-অনীত শিবির। মোর্চার সভাপতির পদে বিনয়েরই বসার কথা। সেক্ষেত্রে সর্বদল বৈঠকে বিনয় আরও কর্তৃত্ব নিয়ে যেতে পারবেন। ভবিষ্যতে কেন্দ্রের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হলে, তাতেও বিনয়ের যাওয়ার রাস্তা আরও মসৃণ হবে।

ঘটনাচক্রে, এ দিনের সভায় বিনয় ছিলেন না। তিনি সর্বদল বৈঠকের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বলে দল সূত্রে দাবি করা হয়েছে। তাই এ দিনের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্রবীণ নেতা এল এন রাই। তাঁর পাশে ছিলেন জিটিএর সভাসদ সতীশ পোখরেল, অনীত থাপা, শিরিং দহেলরা। গুরুঙ্গকে যে মোর্চা থেকেই সরিয়ে দেওয়া হতে পারে, তার ইঙ্গিত মিলেছে অনীতের কথায়। অনীত বলেন, ‘‘আমাদের দল থেকে বার করার দাবি তোলা হয়েছিল। এ বার কাদের পালা, তা এ দিনের সভা বুঝিয়ে দিয়েছে। আগামীকাল আরও স্পষ্ট হবে।’’

রাই, পোখরেল, থাপাদের দাবি, গুরুঙ্গের অডিও বার্তায় যে কেউ কান দেননি, তার কারণ পাহাড়ের মানুষ হিংসার পথে আর এক পা-ও হাঁটতে চান না। তারপরেই পোখরেল তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেন, ‘‘যাঁরা হিংসায় বিশ্বাসী, তাঁদের দলেও রাখতে চান না পাহাড়বাসী।’’ এরপরে তাঁর দাবি, তাই সোমবার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের পরে পাহাড়ে নতুন জনমুক্তি মোর্চার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে।

সেই ‘নতুন মোর্চা’য় কোনও নেতার একাধিপত্য থাকবে না বলেও এ দিন জোর দিয়ে দাবি করেছেন অনীত, সতীশরা। তাঁরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জিটিএর কেয়ারটেকার বোর্ডে রাজ্য সরকার মনোনীত চেয়ারম্যান হওয়ার পরে এ দিনই ছিল বিনয়দের দার্জিলিঙে প্রথম জনসভা। স্বভাবতই, বিনয় মঞ্চে কর্তৃত্ব করবেন বলে ভেবেছিলেন অনেকেই। কিন্তু, সেই জনসভাতেই বিনয় নিজে না থেকে অন্য নেতাদের হাতে সভার ভার দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি একা সিদ্ধান্ত নিয়ে হাঁটার পক্ষে নন।

তাঁর অনুগামীদের তাই দাবি, পাহাড়ের রাজনীতিতে বিনয় ব্যতিক্রমী গণতন্ত্রের পথই দেখাচ্ছেন। জিএনএলএফ-গোর্খা লিগের অনেক নেতাও একান্তে তা স্বীকার করেছেন। অনীত বলেছেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে সকলের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে যিনি চলতে পারবেন তিনিই নেতা হবেন। আমরা সেই ভাবে চলব।’’ তাঁর কথায়, সতীর্থদের জন্য সব সময় দরজা খোলা রাখা হবে। কাউকে অপমান, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE