বিচারাধীন বন্দির মৃত্যু নিয়ে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান করে রিপোর্ট পেশ করার জন্য বুধবার কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট। প্রতীকী ছবি।
জেল হেফাজতে তাঁর বাবা কী ভাবে মারা গেলেন, ছেলে তার জবাব পাননি। অবশেষে সেই অনুসন্ধানে নামতে হচ্ছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে। ছেলের আবেদনের ভিত্তিতে ওই বিচারাধীন বন্দির মৃত্যু নিয়ে পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান করে রিপোর্ট পেশ করার জন্য বুধবার কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক।
পুলিশ জানায়, মুর্শিদাবাদের বহরমপুর রাধারঘাটের বাসিন্দা মওলা শেখের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তিকে গুরুতর আঘাত করার অভিযোগ ছিল। ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর গ্রেফতার করা হয় মওলাকে। বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বহরমপুর জেলে ছিলেন। মওলার ছেলে রুবেলের অভিযোগ, ওই বছরের ১০ নভেম্বর কলকাতা থেকে তাঁদের বাড়িতে ফোন করে জানানো হয়, তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। পরের দিন রুবেল এবং তাঁর পরিবারের অন্যেরা কলকাতায় পৌঁছে দেখেন, মওলার মৃতদেহের সুরতহাল ও ময়না-তদন্ত হয়ে গিয়েছে তাঁদের না-জানিয়েই। পুলিশ রুবেলকে জানায়, অসুস্থ হয়ে পড়ায় ৫ নভেম্বর মওলাকে প্রথমে বহরমপুর থেকে আলিপুর জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।
৯ নভেম্বর তিনি সেই হাসপাতালেই মারা যান। কী করে বাবা মারা গেলেন, তা জানতে চেয়ে হাসপাতাল ও জেল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন রুবেল। অভিযোগ, তাঁকে কোনও নথি দেওয়া হয়নি। গত বছর তথ্য জানার আইনের সাহায্য নিয়ে রুবেল তাঁর বাবার মৃত্যু সংক্রান্ত কিছু নথি জোগাড় করেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। অগত্যা হাইকোর্টে মামলা করেন ওই যুবক। তাঁর আইনজীবী সৌম্যজিৎ দাস মহাপাত্র ও রিমা দাস জানান, তথ্য জানার আইনের সাহায্য নিয়ে যে-নথি মেলে, তাতে দেখা যায়, মওলার স্বাস্থ্যপরীক্ষার রিপোর্টের তারিখে গোলমাল আছে। রিপোর্ট পেশ হয়েছে ২০১৭ সালের ১০ নভেম্বর। কিন্তু তাতে তারিখ লেখা হয়েছে ৫ নভেম্বর, ২০১৭। আইনজীবী জানান, জেল হেফাজতে থাকাকালীন ওই অভিযুক্ত কী ভাবে মারা গেলেন, তা জানতে চাওয়া হয় মামলার আবেদনে। মামলায় অভিযোগ করা হয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী বিচার বিভাগীয় কোনও ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে মওলার সুরতহাল করানো হয়নি। তা করানো হয়েছে কলকাতা পুলিশের এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টরকে দিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy