বছর চারেক আগে, দল ছাড়ার আগে ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘কৃতজ্ঞতার একটা সীমা আছে!’’
সে তিরের লক্ষ্য যে, তদানীন্তন মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি অধীর চৌধুরী, বলার অপেক্ষা রাখে না।
চার বছর পরে, পুরনো দল কংগ্রেসে ফেরার কথা জানিয়ে সেই হুমায়ুন কবীর বলছেন, ‘‘আমি সত্যিই ওঁর কাছে কৃতজ্ঞ।’’ কার কাছে?
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন বলছেন, ‘‘কে আবার, অধীর চৌধুরী।’’
রাজ্যে পালাবদলের পরে, বছর ঘুরতে না ঘুরতেই রেজিনগরের বিধায়ক হুমায়ুন কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে পা বাড়িয়ে ছিলেন। দল বদলের প্রথম মুখ হুমায়ুনকে পুরস্কৃত করতেও কসুর করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১২ সালের ১৬ নভেম্বর কংগ্রেস ত্যাগের চার দিনের মাথায় রাজ্যের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন হুমায়ুন।
তৃণমূলের এক তাবড় নেতা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘অধীরের খাসতালুকে থাবা বসানোই নয়, হুমায়ুনের তখন পরিচয় ছিল অধীরের প্রধান সেনাপতি!’’
তাই, মাস ছয়েকের মধ্যেই উপনির্বাচনে পরাজিত হলেও দলনেত্রীর ‘স্নেহে’ তাঁর মন্ত্রিত্ব রয়ে গিয়েছিল আরও মাস তিনেক।
তবে, মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসের এক নেতা বলছেন, ‘‘ঠৌঁটকাটা হুমায়ুনের সে সুখ সয়নি!’’ বেসামাল কথা, দলের সমালোচনা, কখনও বা দলের জেলা পর্যবেক্ষককেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দলনেত্রীর কালো তালিকায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের সঙ্গে আড়াই বছরের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় তাঁর। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তাঁকে দল বিরোধী কথা বলার দায়ে বহিষ্কার করা হয়।
তার পর, কখনও বিজেপি কখনও বা সমাজবাদী দলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হলেও যোগ দেননি কোথাও। এক রোখা হুমায়ুন বলতেন, ‘‘প্রয়োজনে রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেব, কিন্তু কোথাও মাথা নোয়াব না।’’
তাঁর গড় মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসের এই প্রবল ‘রক্তক্ষরণের’ মুখে হুমায়ুনের প্রত্যাবর্তনে কী বলবেন অধীর?
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলছেন, ‘‘ভাল তো আসুক না। তবে, ২৪ তারিখ ও দলে যোগ দেওয়ার পরে যা বলার বলব।’’
আর হুমায়ুন বলছেন, ‘‘মনে রাখবেন, আমি অসমেয়র বন্ধু। এই ভরা দুর্দিনে তাই পুরনো দলেই ফিরছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy