অনেক পেয়েছেন। এ বার কাজ করুন। তৃণমূল নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোরে দলের বর্ধিত সাধারণ পরিষদের সভায় মমতা বলেন, ‘‘আমি কী পেলাম, আর কী হলাম— এটা রাজনীতি নয়।’’
পদ আর প্রাপ্তির হিসেব নিয়ে দলকে এর আগেও বহু বার সতর্ক করেছেন মমতা। শুক্রবার তাতে নতুন মাত্রা যোগ করে শাস্তির বিধানও দিলেন তৃণমূলনেত্রী। প্রায় সব স্তরের এই প্রবণতায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বিধায়কদের বেতন কাটার মধ্যে দিয়েই সেই কাজ শুরু করার কথাও বলেছেন তিনি।
মমতা এ দিন বলেন, ‘‘অনেক পেয়েছেন। চাওয়া বন্ধ করুন। এ বার দেওয়া শুরু করুন। পঞ্চায়েত, জেলা পরিষদ, পুরসভা, কর্পোরেশন সব পেয়েছেন। আর কী চাই? এ বার কাজ করুন।’’ নেতাদের দুর্নীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘কে কোথা থেকে টাকা তোলে, ভাবে দিদির কাছে খবর আসে না। দিদির কাছে সব খবর কিন্তু আসে।’’ পদ পেতে তৎপর দলের নেতাদের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘‘ভোটে প্রার্থী হতে লবি করবেন না। লবি করলে আমি কেটে দেব। দল এমনিতেই নেতা খুঁজে নেবে।’’
আরও পড়ুন: সিবিআই নিয়ে অন্ধ্রের পথে হাঁটতে চাইছে বাংলা, খবর নবান্ন সূত্রে
নেতা-কর্মীদের একাংশের নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নে দলের বিধায়কদের কাঠগড়ায় তুলে মমতা বলেন, ‘‘এমএলএ-রা ঠিকমতো বিধানসভা না-করলে টাকা কেটে নেওয়া হবে। অসুস্থ থাকলে অনুপস্থিতির কথা পার্টিকে জানান।’’ বিধায়কেরা অবশ্য উপস্থিতির ভিত্তিতেই বিধানসভার বেতন-ভাতা পান। মন্ত্রীদের উদ্দেশেও মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কয়েক জন মন্ত্রী কিছুই করেন না। দল করতে হবে। সরকারের কাজও করতে হবে।’’
এ দিনের সভায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়েও কঠোর মনোভাব জানিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। একাধিক জেলার বিবদমান নেতাদের নাম করে তাঁদের মিলেমিশে কাজ করতে বলেছেন। দলে ক্ষমতাসীন অংশকে নেত্রীর নির্দেশ, ‘‘অনেকে ভুল বুঝে দূরে সরে আছে তাদের ডেকে নিন। না-করলে আমিই ডেকে নেব। ঘরটাকে ছোট করলে হবে না। আপনি ঘর ছোট করলে এরা গুন্ডামি করবে। বিজেপির দিকে চলে যাবে।’’ তার পরেই ‘বসে যাওয়া’ অংশের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘আপনারা আমাকে চিঠি দিন।’’
মালদহ, কোচবিহারের মতো যে সব জেলায় দীর্ঘদিন ধরে গোষ্ঠীবিরোধ চরমে পৌঁছেছে, সেই সব জেলার নেতাদের নাম করে একসঙ্গে কাজ করতে বলেন মমতা। কৃষ্ণননগর পুরসভার চেয়ারম্যানের কাছে সাংগঠনিক বৈঠক না-ডাকার কারণ জানতে চান দলনেত্রী। দলের তরফে হিন্দিভাষী তিন প্রতিবেশী রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত বিধায়ক অর্জুন সিংহের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘না পারলে ছেড়ে দাও।’’
রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে অসম, ত্রিপুরা, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যেও এ বার লোকসভা ভোটে তৃণমূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে তৃণমূলনেত্রী জানিয়ে দেন। লোকসভা ভোটের আগে ভিন্ রাজ্যে সংগঠন বাড়াতে তিনি দলীয় পর্যবেক্ষক রদবদলও করেছেন এ দিন। যার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিংহের কটাক্ষ, ‘‘আগে নিজের রাজ্য বাঁচান। তার পর অন্য রাজ্যে প্রার্থী দেবেন।’’
দলের তহবিল সংগ্রহে এ দিন অনলাইন চাঁদা সংগ্রহের কথা জানান তৃণমূলনেত্রী। নির্বাচনের আগে অর্থ সংগ্রহের জন্য ৫, ১০, ৫০০ ও হাজার টাকা চাঁদা নেবে তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy