মাস খানেক আগেই সেনা মহড়া নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বিতর্ক বেঁধেছিল। রাজ্যকে না জানিয়ে সেনা নামানো যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সেই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকর নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার আগে রাজ্যকে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। একই সুর ছিল রাজ্যপালের। সেই চাপানউতোর থিতু হওয়ার পরে নবান্নকে ফের মহড়া শুরুর কথা জানিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এ বার নৌবাহিনীর।
তার জন্য অবশ্য রাজ্যের কাছে কোনও অনুমতি প্রার্থনা করেনি দিল্লি। নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক শুধু জানিয়েছে, ‘‘চলতি মাসে কলকাতা উপকূলে ‘অপারেশন তৈয়ারি’ নামে দু’দিনের মহড়া চলবে। এতে রাজ্যের কোনও সহায়তা লাগবে না।’’ কিন্তু যে হেতু রাজ্যের জলসীমায় এই মহড়া হচ্ছে, তাই নবান্নকে জানানো হয়েছে— মন্তব্য এক নৌসেনা কর্তার।
এ রাজ্যের জলসীমায় নৌবাহিনী বছরে দু’টি মহড়া চালায়। তার একটি উপকূল নিরাপত্তা সংক্রান্ত। জলপথে জঙ্গি ঢুকলে কী ভাবে তার মোকাবিলা করা হবে, মহড়ায় সেটাই প্রাধান্য পায়। এতে উপকূলরক্ষী বাহিনী, কলকাতা বন্দর, নৌবাহিনী ছাড়া কলকাতা ও রাজ্য পুলিশও অংশ নেয়। অন্য মহ়ড়াটি ‘অপারেশন তৈয়ারি’, যেটার কথা জানিয়ে নবান্নকে চিঠি দিয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। এটি তুলনামূলক ভাবে বড় মাপের এবং কার্যত নৌ-যুদ্ধের কৌশল অভ্যাসের মহড়া। এই মহড়ার মাধ্যমে কলকাতামুখী শত্রু জাহাজ মোকাবিলার প্রস্তুতি নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন নৌসেনা কর্তারা।
নৌবাহিনীর এক কর্তা জানান, কলকাতা বন্দরের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই অপারেশনে স্যান্ডহেডে দাঁড়িয়ে থাকা কোনও জলযানকে শত্রু জাহাজ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। কলকাতায় নৌবহিনীর সদর দফতরে সেই খবর আসার পরে কী ভাবে ওই শত্রু জাহাজকে পরাস্ত করা হবে, ‘অপারেশন তৈয়ারি’তে সেটাই শেখানো হয়। দিনরাতের ওই অপারেশনে নৌবাহিনীর কমান্ডো, হেলিকপ্টার ও যুদ্ধজাহাজ ব্যবহার হয়। প্রয়োজনে রাজ্যের জেটিও ব্যবহার করে নৌসেনা। তবে এ বার রাজ্যের কোনও পরিকাঠামো তারা ব্যবহার করবে না বলে নৌসেনা সূত্রের খবর।
গত ডিসেম্বরের গোড়ায় রাজ্যের ১৭টি এলাকায় গাড়ি গোনার কাজে নেমেছিল সেনাবাহিনী। তা নিয়ে বিস্তর টানাপড়েন চলে। নবান্নের অভিযোগ ছিল, সরকারকে না জানিয়ে সেনা নামিয়েছিল কেন্দ্র। সেনার তরফে একাধিক চিঠি প্রকাশ করে পাল্টা দাবি করা হয়, কলকাতা পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের জানানোই শুধু নয়, দিনক্ষণ বদল করা হয়েছিল পুলিশের পরামর্শ মেনেই। তবে নৌবাহিনীর চিঠি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি নবান্ন। প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্যের জলসীমায় মহড়া হলে মানুষের কোনও ভোগান্তি হবে না। ওরা রাজ্যের সহায়তা চায়নি। আমাদেরও আপত্তি নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy