সংরক্ষণ করা হয়েছে রানিগঞ্জ রেল স্টেশন লাগোয়া এই ভবনটিই। নিজস্ব চিত্র
আবর্জনার স্তূপ ও আগাছার জঙ্গলে চাপা পড়েছিল প্রায় ১৬৬ বছরের পুরনো ভবন। কিন্তু দেশের অর্থনীতির ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে আসানসোল ডিভিশনের রানিগঞ্জ স্টেশন লাগোয়া ওই ভবনটি। সম্প্রতি সেই ভবনই সংরক্ষণ ও সংস্কার করে দ্বারোদঘাটন করা হয়েছে। দ্বারোদঘাটন করেছেন ডিআরএম (আসানসোল) প্রশান্তকুমার মিশ্র।
রেল সূত্রে জানা যায়, ১৮৫৫-র ৩ ফেব্রুয়ারি কলকাতা থেকে রানিগঞ্জ পর্যন্ত রেল-যাতায়াত শুরু হয়। প্রাথমিক ভাবে কয়লা পরিবহণের জন্যই এই রেললাইন পাতা হয়েছিল। ওই সময়ের তথ্য সংগ্রহের জন্য রেলকর্তারা আর্কাইভে রাখা পুরনো নথি ঘাঁটতে শুরু করেন। তখনই জানা যায়, রানিগঞ্জ থেকে কলকাতা পর্যন্ত রেললাইন পাতা থেকে যাবতীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য ১৮৫৩-য় রানিগঞ্জে একটি কার্যালয় তৈরি করা হয়। সেখানে চার্লস কোলস অ্যাডলে নামে এক জনকে চিফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে নিয়োগ করা হয়। ওই কার্যালয়েরই একাংশে ছিল ইংরেজ ওই ইঞ্জিনিয়ারের বাসভবন। এই ইতিহাস শিল্পাঞ্চলের পড়ুয়াদের জানাতে চলতি বছরের গত ৩ ফেব্রুয়ারি র্যালি ও রানিগঞ্জের ওই রেল ভবন দেখানো-সহ বেশ কিছু কর্মসূচি নেয় রেল।
প্রশান্তবাবু জানান, পুরনো নথি থেকে জানা গিয়েছে, ওই কার্যালয়ে বসেই দিনের পর দিন রেললাইন পাতা-সহ অন্য পরিকাঠামো তৈরির জন্য নকশা বানিয়েছিলেন অ্যাডলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আরও আধুনিক হয়েছে রেলের পরিকাঠামো। কিন্তু বিস্মৃতির আড়ালে চলে গিয়েছে ইতিহাস। প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘ঐতিহ্যের প্রতি সম্মান জানিয়ে ভবনটি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করা হয়েছে।’’
রেল সূত্রে জানা যায়, বিশাল বাগানের মাঝে প্রায় তিন হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে ছ’টি ঘর বিশিষ্ট ভবনটি তৈরি করা হয়। কিন্তু আবর্জনার স্তূপ ও আগাছার জঙ্গলের মাঝে বহু বছর ধরে ভবনটি অব্যবহৃত পড়েছিল। ডিআরএম জানান, ভবন সংস্কারের জন্য প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে তা স্কুল পড়ুয়া ও শহরবাসীর জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। রেল সূত্রে জানা যায়, ভবনের ভিতরে শিল্পাঞ্চলে রেল-আগমন পর্বের নানা ছবি প্রদর্শন করা হচ্ছে। সংরক্ষণ করা হয়েছে পুরনো আমলের কিছু আসবাবপত্রও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy