প্রতীকী ছবি।
গরম জলে ফুটিয়ে নয়, সাধারণ জলে আধ ঘণ্টা চাল ভিজিয়ে রাখলেই ভাত তৈরি হয়ে যাবে। ন্যুডলসের মতোই ‘রেডি টু ইট’ হতে পারে ‘কোমল’ প্রজাতির ধান থেকে তৈরি চাল। এই চালের চাষ ও বিপণন বাড়ানোর ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু করেছে রাজ্য।
ক’দিন আগেই বর্ধমানের মাটি উৎসবের উদ্বোধনে ‘কোমল’ চাল হাতে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘এই চাল সাধারণ জলে আধ ঘণ্টা ভেজালেই ভাত হয়ে যাবে। তার পরে চিঁড়ের মতো দই-গুড় দিয়ে মেখে খাওয়া যাবে।’’ নদিয়ার ফুলিয়ায়, রাজ্য কৃষি দফতরের গবেষণাগার ও কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই ধানের বীজ কী ভাবে আরও বাড়ানো যায়, সে নিয়ে গবেষকদের সঙ্গে বুধবার কথা বলবেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ফুলিয়া ধান্য গবষেণাগার থেকে ওই বীজ রাজ্যের সমস্ত কৃষি খামারে দেওয়া হবে। সেখানে চাষ হবে, বীজ তৈরি হবে। তার পরে ইচ্ছুক চাষিদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’
রাজ্য কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষামূলক ভাবে ফুলিয়ায় চাষ করে গবেষকেরা সফল হয়েছেন। কোচবিহার, বীরভূম, নদিয়া, দুই ২৪ পরগনা, বর্ধমান-সহ নানা জেলার ১৮২ জন চাষি বিক্ষিপ্ত ভাবে এই ধান চাষ করছেন। ধান গবেষক তথা ফুলিয়া কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সহ-অধিকর্তা অনুপম পালের কথায়, ‘‘সাধারণ জলে আধ ঘণ্টা, গরম জলে ভিজিয়ে রাখলে ১০ মিনিটে সেদ্ধ হয়ে যাবে কোমল চাল। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ গবেষকেরা এই চাল নিয়ে গবেষণা করে ন্যুডলসের মতো ‘রেডি টু ইট’ করতেই পারেন।’’ তবে এই চালকে মূলত চিঁড়ের বিকল্প হিসেবেই দেখতে চান গবেষকেরা। অনুপমবাবু জানান, এক দিনেই সেদ্ধ ও শুকোনোর কাজ সারতে হবে। রোদে শুকোলে সব চেয়ে ভাল, তাতে নরম ভাব থাকে।
কোমল চালের ইতিহাস পুরনো। অসমের বোরো উপজাতির মধ্যে এর ব্যবহার বেশি। সেখানকার মানুষ কাঠ কাটতে যাওয়ার সময়ে এই চাল বেঁধে নিয়ে যান। অনুপমবাবু বলেন, ‘‘বাড়িতে ফুল গাছ লাগানোর মতোই অসমে এই প্রজাতির ধান গাছ লাগানো হয়। উৎসবে এই চাল ব্যবহার হয়। ১০ বছরের বেশি ওই প্রজাতির ধান আমাদের ধান্য গবেষণাগারে সংরক্ষিত ।’’ ১৮৭৯ সালে ডব্লিউ ডব্লিউ হান্টার তাঁর ‘স্ট্যাটিসটিক্যাল অ্যাকাউন্ট অফ অসম’ বইতে কোমল প্রজাতি ধানের কথা লিখে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy