Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
TMC

‘হামলার চেষ্টা’র মুখে টিম পিকে

তৃণমূল সূত্রের খবর, সকাল ১০টা থেকে জামুড়িয়ার নজরুল শতবার্ষিকী ভবনে জামুড়িয়া বিধানসভাকে কেন্দ্র করে ওই কর্মসূচি আয়োজিত হয়।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের লক্ষ্য এ বার ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের দল, ‘টিম পিকে’। ছবি: পিটিআই।

গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের লক্ষ্য এ বার ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের দল, ‘টিম পিকে’। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জামুড়িয়া শেষ আপডেট: ০৮ মার্চ ২০২০ ০৫:৫৮
Share: Save:

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৃণমূলে বেনজির নয়। এ বার লক্ষ্য হয়ে উঠল ভোট-কুশলী প্রশান্ত কিশোরের দল, ‘টিম পিকে’। উপলক্ষ, শাসক দলের ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচি। পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়ায় শনিবারের ওই ঘটনা প্রসঙ্গে অবশ্য প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে চাননি পিকে-র দলের সদস্যেরা। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য ঘটনার তদন্ত করে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন।

এ দিন সকালে ‘টিম পিকে’-র সদস্যদের উপরে হামলার চেষ্টা রুখতে গেলে দলের একাংশ তাঁকে হেনস্থা করে বলে সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ করেন যুব তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান ব্লক সভাপতি (জামুড়িয়া ১) মৃদুল চক্রবর্তী। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের দাবি, ‘কোন্দলে’র জেরে এই ঘটনা ঘটেছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, সকাল ১০টা থেকে জামুড়িয়ার নজরুল শতবার্ষিকী ভবনে জামুড়িয়া বিধানসভাকে কেন্দ্র করে ওই কর্মসূচি আয়োজিত হয়। রূপায়ণের দায়িত্বে ছিলেন আসানসোল পুরসভার মেয়র পারিষদ (ক্রীড়া ও সংস্কৃতি) অভিজিৎ ঘটক। ভবনের বাইরে থাকা তৃণমূল কর্মীরা জানান, কর্মসূচি চলাকালীন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ভবনের বাইরে পিকে-র ‘টিম’-এর পাঁচ সদস্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সভায় আসা কর্মী-সমর্থকদের গাড়িতে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ শীর্ষক স্টিকার সাঁটানোর কাজ তদারক করছিলেন। মৃদুলবাবুর অভিযোগ, ‘‘সেই সময় দলেরই নেতা অলোক দাসের নেতৃত্বে জনা দশেক লোক পিকে-র টিমকে মারতে উদ্যত হন। আমি মাঝে দাঁড়িয়ে বাঁচাতে গিয়েছিলাম। আমাকে ব্যাপক ধাক্কাধাক্কি, হেনস্থা করা হয়।’’

আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস ঠেকাতে নমোর ‘নমস্তে’

এই ঘটনাকে দলের ‘গোষ্ঠীকোন্দলের’ প্রকাশ বলছেন তৃণমূল নেতা, কর্মীদের একাংশ। তাঁরা জানান, দলের অন্দরে ব্লক সভাপতি (জামুড়িয়া ১) সাধন রায়ের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোক হিসেবে পরিচিত অলোকবাবু। কিন্তু হামলার ‘লক্ষ্য’ পিকে-র টিম কেন?

অলোকবাবুর অনুগামী বলে দলে ও এলাকায় পরিচিতদের অভিযোগ, পিকে-র টিম ব্লক সভাপতির কথায় চলছে। সেই মতো রিপোর্ট দলের শীর্ষ স্তরে পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি, অলোকবাবু ঘনিষ্ঠ দলের ছাত্র সংগঠনের এক নেতাকে এ দিন ব্লক সভাপতি আমন্ত্রণ জানাননি বলে দাবি। এ সবের কারণেই ‘হামলার চেষ্টা’ ও ‘হেনস্থা’ কি না, তা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা ছড়িয়েছে এলাকায়। অলোকবাবু অবশ্য অভিযোগ

প্রসঙ্গে কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। উত্তর মেলেনি হোয়াটস অ্যাপ, এসএমএস-এরও। সাধনবাবুর দাবি, ‘‘দলে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু এ দিনের ঘটনা লজ্জাজনক।’’

অলোকবাবুকে নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয়। তাঁর বিরুদ্ধে এর আগে সিপিএম নেতাকে খুনের চেষ্টা, ইকড়া শিল্পতালুকে কারখানায় হামলা, পঞ্চায়েত ভোট অশান্তি পাকানো-সহ নানা অভিযোগ উঠেছে। ২০১৪ সালে এবং ২০১৬ সালে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অলোকবাবুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে দু’বারই তিনি দলে ফেরেন। মেয়র পারিষদ অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘যা হয়েছে বলে অভিযোগ, তা ঠিক হয়নি। দলের শীর্ষ স্তরে বিষয়টি জানানো হবে।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Prashant Kishor TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE