প্রতীকী ছবি।
আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে ফরাসি সংস্থা লুই দ্রেফু আর্মাতিয়োর (এলডিএ) দায়ের করা মামলায় জিতল ভারত।
মঙ্গলবার লন্ডনে এ সংক্রান্ত রায় ঘোষণা করে আদালত জানিয়ে দিয়েছে, ওই ফরাসি সংস্থা ভারত সরকারের বিরুদ্ধে তাদের হলদিয়া বন্দরে বিনিয়োগে সুরক্ষা দিতে না পারার যে অভিযোগ তুলেছেন, তা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, হলদিয়া বন্দরে এলডিএ-র বিনিয়োগের পরিমাণ ৫১% ছিল না। ফলে এলডিএ সালিশি আদালতে আসার যোগ্যই নয়। তার ফলে এলডিএ ভারত সরকারের কাছে এ দেশে ব্যবসা করতে না পারার জন্য যে ২২৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়েছিল, তা মানেনি আদালত। একই ভাবে কলকাতা বন্দরও ফরাসি সংস্থার কাছে ২২৭ কোটি টাকা চেয়েছিল। সেই দাবিও মানেনি কোর্ট। তবে এই মামলা চালানোর খরচ হিসেবে এলডিএ-কে ভারতকে ৫০ কোটি টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় কোর্ট।
হলদিয়া বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে এই জয় বিশেষ আনন্দের। মামলায় সাক্ষী হিসেবে রাজ্য সরকার তার অফিসারদের পাঠিয়েছিলেন। যে পরিমাণ খরচ এলডিএ-কে মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে, তা বিশেষ উল্লেখযোগ্য।’’
২০০৯ সালের এপ্রিলে এবিজি ইনফ্রালিজিস্টিক এবং তার সহযোগী সংস্থাকে হলদিয়া বন্দরের ২ ও ৮ নম্বর বার্থে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে পণ্য খালাসের বরাত দিয়েছিল কলকাতা বন্দর। পরে এবিজি-র সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধে ফরাসি সংস্থা এলডিএ।
সংস্থার অভিযোগ ছিল, বরাত পাওয়ার পর থেকে স্থানীয় ঠিকাদাররা তাদের কাজ করতে বাধা দিয়েছে। এই নিয়ে কয়েক মাসের টানাপড়েনের পরে ২০১২-এর ৩১ অক্টোবর বন্দরের সঙ্গে পণ্য খালাসের চুক্তি থেকে বেরিয়ে যায় এবিজি-এলডিএ। কারণ হিসেবে তারা আইন-শৃঙ্খলার সমস্যা, স্থানীয় ঠিকাদারদের প্রতি বন্দরের পক্ষপাতিত্ব এবং ব্যবসায় তাদের লোকসানের কথা তুলে ধরে। এ নিয়ে মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে দেশের সর্বোচ্চ সালিশি আদালতে এই মামলার বিচার চলছে। এই মামলা চলাকালীনই এলডিএ আন্তর্জাতিক আদালতে চলে যায়।
ফরাসি সংস্থার মূল বক্তব্য ছিল, ভারত-ফ্রান্স দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুযায়ী ফরাসি সংস্থার বিনিয়োগের নিরাপত্তা দিতে বাধ্য ভারত। দেশের বিভিন্ন আদালতে বন্দর বারবার বলেছে, হলদিয়ায় বন্দরের এলাকায় আইনশৃঙ্খলাজনিত ঘটনা ঘটেনি। যদিও লন্ডনে সালিশি আদালতে রাজ্যের দুই আমলা মণীশ জৈন এবং সুকেশ জৈন সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলেন।
এ দিন রায় শুনে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘এই ঘটনায় আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার হয়েছিল। বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে মিডিয়ার একাংশ আমায় কাঠগড়ায় তুলেছিল। আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায়ে প্রমাণ হল সত্যমেব জয়তে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy