Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ভুতুড়ে বিলের জেরে পুলিশ নাজেহাল!

এক বছর আগে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের ৯৬ লক্ষ টাকার ফোনের বিল নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছিল। পুলিশের সন্দেহ ছিল, তাদের ফোনের লাইন ‘হ্যাক’ করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সাইবার অপরাধীরা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮ ০৫:১৮
Share: Save:

হঠাৎ হঠাৎ বিশাল অঙ্কের বিল আসায় ফোনের সাধারণ গ্রাহকের মাথায় হাত পড়ে। ভুতুড়ে বিলের জেরে এ বার পুলিশও নাজেহাল!

এক বছর আগে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের ৯৬ লক্ষ টাকার ফোনের বিল নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছিল। পুলিশের সন্দেহ ছিল, তাদের ফোনের লাইন ‘হ্যাক’ করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সাইবার অপরাধীরা। ফোন গিয়েছে আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার একাধিক দেশে। কিন্তু এখানেই থমকে গিয়েছে তদন্ত। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ছ’মাস পরেও সিআইডি বুঝে উঠতে পারেনি, কারা কী ভাবে এই কাণ্ড ঘটাল।

জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৬ সালের অক্টোবরে সরকারি টেলিকম সংস্থার মাধ্যমে ১০০ ডায়ালের অন্যান্য নম্বরের সঙ্গে নতুন একটি নম্বর যোগ করা হয়েছিল। ওই নতুন ফোনের বিল প্রথম দিকে মাসে গড়ে তিন হাজার টাকার মধ্যে ছিল। অভিযোগ, ২০১৭-র এপ্রিলে ওই নম্বরের বিল আসে প্রায় ৯৬ লক্ষ টাকা। জেলা পুলিশের কর্তারা হতবাক হয়ে যান। কারণ ১০০ ডায়ালে ফোন এলে তা সংশ্লিষ্ট পুলিশকর্মী বিভিন্ন থানায় ট্রান্সফার করে দেন। কিছু ফোনও করা হয়। ফলে ওই টাকা মাসিক বিল আসতে পারে না বলে পুলিশকর্তাদের সন্দেহ হয়। তার পরেই ২০১৭ সালের ২৩ মে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা রুজু করা হয়।

তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ১০০ ডায়ালের সঙ্গে থাকা নম্বরগুলি ব্যবহার করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রায় ৩৫টি দেশে ওই নম্বর থেকে নিয়মিত ফোন করা হয়েছে। যে-সব দেশের মধ্যে আছে ওমান, সোমালিয়া, চাদ, কিউবা, লাটভিয়া, টিউনিজি়য়া, কঙ্গো, জ়িম্বাবোয়ে। এই ফোন পরিষেবার সঙ্গে জড়িত একটি বিদেশি সংস্থার প্রতিনিধিদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিন্তু কোনও সূত্র মেলেনি। গত ডিসেম্বরে ওই তদন্তভার সিআইডি-কে দেওয়া হয়। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, ফোনের সার্ভার হ্যাকার হানা হয়েছিল।

সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের মনে করেন, এতে অতিদক্ষ হ্যাকারেরা জড়িত। ফোনের বেস স্টেশন কন্ট্রোলারে কারসাজি করেও এই কাণ্ড ঘটানো সম্ভব। ‘‘টেলিকম পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কোনও লোক জড়িত কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা দরকার,’’ বলছেন বিভাসবাবু। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, ফোনের সার্ভার-সহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বাজেয়াপ্ত করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য দিল্লিতে পাঠানো হয়েছে।

‘‘সম্প্রতি পুণেতে শিক্ষা দফতরের ফোনে এই ধরনের ভুতুড়ে বিল এসেছিল। তার তদন্ত করছে সিবিআই। সেই ঘটনার সঙ্গে জলপাইগুড়ি কাণ্ডের যোগ থাকতে পারে,’’ বলেন এক গোয়েন্দাকর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jalpaiguri Hacker Cyber Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE