সিউড়ি আদালতে সিআইডি অফিসার সিঞ্চন রায়চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
সাত্তোরের বধূকে পুলিশি নির্যাতনের মামলায় সিআইডি-র দেওয়া চার্জশিট খুশি করতে পারেনি আদালতকে। তার পরই সিআইডি-র তদন্তকারী অফিসার (আইও) প্রশান্ত নন্দী তদন্তের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সোমবার, রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার সেই আবেদন মঞ্জুর করলেন বীরভূমের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়।
আইও বদলের নির্দেশ দিতে গিয়ে সিজেএম বলেন, “তদন্তটাই এখানে আসল। কে তদন্তকারী অফিসার সেটা বিষয় নয়। যেহেতু তদন্তকারী অফিসার অসুস্থ, তাই সিাইডির এই আবেদন মঞ্জুর করা হল।” তদন্তের দায়িত্ব নিচ্ছেন সুপ্রকাশ পট্টনায়ক বলে সিআইডি সূত্রের খবর।
এ দিকে নির্যাতিতার পরিবারের আশঙ্কা, তদন্তকারী অফিসার বদলে অহেতুক মামলায় দেরি হবে। এ দিন নির্যাতিতার পক্ষে আইনজীবী আশিস চৌধুরী বলেন, “তদন্তকারী অফিসার বদল হওয়া মানে তদন্তের কাজে দেরি হওয়া। আমরা সিবিআই তদন্ত চেয়েছি। সিাইডির তদন্তের গতি প্রকৃতির উপর, সেটা নির্ভর করছে।”
প্রসঙ্গত, মামলায় দু’মাসের মধ্যে চার্জশিট দিয়েও গত ১২ মার্চ আদালতে ধাক্কা খায় সিআইডি। ওই চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে ওসি (এসওজি) কার্তিকমোহন ঘোষ, দুই কনস্টেবল দীপক বাউরি ও কাশীনাথ দাস, ইলামবাজার থানার মহিলা কনস্টেবল আলপনা লোহারের নাম রয়েছে। যে চার্জশিট জমা করেছিল সিআইডি, তাতে বিস্তর ফাঁক দেখে খুশি হতে পারেনি আদালত। পুনর্তদন্তের নির্দেশ দেন সিজেএম। কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশের দিন দু’য়েকের মাথায় সিআইডি-র পক্ষ থেকে ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিক সিঞ্চন রায়চৌধুরী আবেদন করেন যে, আইও প্রশান্ত নন্দীকে বদল করতে হবে। কারণ তিনি অসুস্থ। শুক্র-শনিবার সিজেএম ছুটিতে থাকায় এ দিন শুনানি হয়। সিআইডি-র আবেদন মঞ্জুর করেন বিচারক। সিঞ্চনবাবু আদালতের বাইরে বেরিয়ে বলেন, “আদালত আমাদের আবেদন মেনে নিয়েছে।”
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জানুয়ারি বোমাবাজিতে অভিযুক্ত পাড়ুই থানার সাত্তোরের এক বিজেপি সমর্থককে খুঁজতে বর্ধমানের বুদবুদ থানার কলমডাঙা গ্রামে তাঁর কাকিমার বাপের বাড়িতে যায় বীরভূম জেলা পুলিশের এক বিশেষ দল। ওই কর্মীকে না পেয়ে তাঁর কাকিমাকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে পুলিশ ও তৃণমূলের কিছু নেতা-কর্মী অকথ্য অত্যাচার চালান বলে অভিযোগ। বুদবুদে হওয়া এফআইআরে এসডিপিও (বোলপুর), সিআই (বোলপুর), ওসি (স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ) এবং সাত্তোরের কিছু তৃণমূল নেতা-কর্মীর নাম ছিল। তুমুল হইচই শুরু হওয়ায় রাজ্য সরকার সিআইডি-কে তদন্তভার দেয়।
নির্যাতিতা এ দিনও আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “জানি না, তদন্তকারী অফিসার বদল হলেও নিরপেক্ষ তদন্ত করা সম্ভব কি না?”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy