ভবিষ্যতে যাতে ফের ময়না-তদন্ত করা যায়, সেই জন্য মাটিতেই পোঁতা হল দুই ছাত্রের দেহ। ছবি: মেহেদি হেদায়েতুল্লা।
শিক্ষক নিয়োগ ঘিরে গোলমালে নিহত দুই যুবকের দেহ দাহ করলেন না তাঁদের পরিজনেরা। শনিবার উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিটে গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া দোলঞ্চা নদীর ধারে পাশাপাশি মাটি খুঁড়ে চাপা দিয়ে রাখা হল রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের দেহ। দুই পরিবারই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে। তারা তদন্তভার পেলে ফের ময়না-তদন্তের প্রয়োজন হতে পারে ভেবেই মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে রাখার এই সিদ্ধান্ত।
এ দিকে, রাজেশ ও তাপসকে খুনের ঘটনায় পুলিশ শুক্র ও শনিবার মিলিয়ে মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। সকলেই এলাকার বাসিন্দা। তাঁদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাপসের বাবা বাদল বর্মণের বক্তব্য, ‘‘আমাদের ধারণা, পুলিশের গুলিতেই আমার ছেলে ও রাজেশ মারা গিয়েছে। পুলিশ নিজেদের দোষ ঢাকতে নিরীহদের গ্রেফতার করছে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘তদন্ত করেই গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’ পুলিশ গুলি চালায়নি বলেও দাবি করছেন তাঁরা।
রাজেশের ময়না-তদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, গুলিতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে, গুলি ছোড়া হয়েছিল দূর থেকে। সেই খবর পাওয়ার পরেই গ্রামবাসীরা অনেকে ফের দাবি করেন, পুলিশই রাইফেল থেকে গুলি করেছে। রাজেশের বাবা নীলকমল সরকার বলেন, ‘‘পুলিশই গুলি করেছে। তাই আমরা চাই সিবিআই তদন্ত করুক।’’
তাপসের মা মঞ্জুদেবী বলেন, ‘‘ছেলেটাকে গুলি করার পরে যখন হাসপতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন একটা গ্রামে গাড়ি আটকে রাখা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থাতেই ছেলেকে মারধর করা হয়। সেই মারধরের চিহ্নও দেহ দেখলে বোঝা যাবে। তাই আমিও চাইনি, ওর দেহ দাহ করতে।’’
নীলকমলবাবু জানান, শুক্রবার রাতে পুলিশ দাড়িভিট ও লাগোয়া মাঠপাড়া, সুখানিভিটা গ্রামে তল্লাশিতে যায়। তাঁর দাবি, ‘‘সেই সময় পুলিশ অনেকের উপরে নির্যাতন করেছে। ওই গ্রামগুলি থেকে অনেকেই পালিয়ে গিয়েছেন। তাই পুলিশের উপরে আমাদের আস্থা কমেছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইটালিতে বসে আশ্বাস দিয়েছেন, ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাতেও ক্ষোভ কমছে না। পুলিশ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
শনিবার সিপিএম ও বিজেপির অনেক নেতা এলাকায় যান। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবালের অভিযোগ, ‘‘বিরোধীরা এলাকা আরও অশান্ত করছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy