এ বারের বন্ধের কেন্দ্রে উত্তর দিনাজপুর জেলার দাড়িভিট গ্রাম। তাকে ঘিরেই কৌশল সাজাচ্ছে বিজেপি ও তৃণমূল। বিজেপির নেতারা এ দিনও যান দাড়িভিটে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ হেমতাবাদে সভাও করেছেন। জবাব দিতে আজ, বুধবার দাড়িভিটে আসছেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। যাবেন নিহতদের বাড়িতে। এর মধ্যেই ‘অপরিচিত’ মুখের ভিড়ে উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
বুধবারের বন্ধকে ঘিরে গোলমালের আশঙ্কা করছে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশমহল থেকে সাধারণ মানুষ। গত বেশ কয়েকটি ঘটনার অভিজ্ঞতা মানুষের উৎকণ্ঠা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। রায়গঞ্জে আদিবাসীদের তাণ্ডব থেকে সম্প্রতি দাড়িভিট স্কুলে যা হয়ে গেল, এই সব ঘটনা বিচার করে অনেকেরই প্রশ্ন, বুধবার গোলমাল হলে পুলিশ তা সামাল দিতে পারবে তো?
রাজনৈতিক ভাবে যখন গোটা জেলা তেতে রয়েছে, তখন এমন প্রশ্ন স্বাভাবিক। মঙ্গলবারও হেমতাবাদের সভায় দিলীপবাবু আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের মন্ত্রী গোলাম রব্বানি থেকে পুলিশ, সকলকে। দাবি করেছেন দাড়িভিট কাণ্ডের সিবিআই তদন্ত। উল্টো দিকে, তৃণমূল সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরেই দলের জেলা পর্যবেক্ষক হিসেবে নিহতদের বাড়িতে যাবেন শুভেন্দু। পরে ইসলামপুর বাস টার্মিনাসে তাঁর জনসভা করার কথা।
বন্ধ সফল করতে বিজেপি যেমন রাস্তায় নেমে পড়েছে, তেমনই বন্ধ রুখতে প্রশাসনও প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বুধবার এই জেলায় জেলাশাসকের নির্দেশে ‘নো ভেহিক্যাল ডে’ পালন করা হয়। বন্ধে জরুরি পরিস্থিতিতে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়েছে। জেলার বিভিন্ন সরকারি দফতরের যে সমস্ত কর্মীর বাড়ি অপেক্ষাকৃত দূরে, তাঁরা এ দিন দফতর বা আশপাশে থেকে গিয়েছেন।
থাকার ব্যাপারে অবশ্য হোটেল, গেস্ট হাউসে জায়গা মিলছে না ইসলামপুরে। স্থানীয় মানুষ থেকে হোটেল, গেস্ট হাউসের মালিকদের দাবি, গত কয়েক দিন ধরেই বেশ কিছু ‘অপরিচিত’ ঢুকছে শহরে। এক হোটেল মালিক বলেন, ‘‘সচরাচর এই সময় বেশির ভাগ ঘর ফাঁকা পড়ে থাকে। কিন্তু এ বার যেন ব্যতিক্রম।’’ কোথা থেকে আসছেন এই লোকজন? স্থানীয়দের দাবি, কলকাতা, মেদিনীপুর, আশপাশের জেলা— সব জায়গা থেকেই লোক আসছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনটি ভবনে প্রায় ২০০ মানুষের থাকার বন্দোবস্ত রয়েছে। শনিবার থেকে ভবনগুলির কোন ঘর ফাঁকা নেই বলেই জানিয়েছেন পুর চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল অগ্রবাল।
তৃণমূলের ইসলামপুর টাউন কমিটির সভাপতি গঙ্গেশ দে সরকার বলেন, ‘‘পরিকল্পনামাফিক শহরে বহিরাগতদের ঢোকাচ্ছে বিজেপি।’’ বিজেপির ইসলামপুর শহর মণ্ডলের সভাপতি সৌম্যরূপ মণ্ডলের পাল্টা দাবি, ‘‘ইসলামপুর ও চোপড়ার বিভিন্ন পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন বাকি রয়েছে। সেগুলি দখল করতেই তৃণমূল বহিরাগত দুষ্কৃতীদের জড়ো করছে।’’
জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার বলেন, ‘‘উপযুক্ত কারণ ছাড়া বহিরাগতরা ঢুকে থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ উত্তরবঙ্গের আইজি আনন্দ কুমারও জানান, ‘‘ইসলামপুরের পরিস্থিতির উপর পুলিশ নজর রাখছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy