Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জাহাজ খালাসে দেরি

বন্দরে জাহাজ আছে। কিন্তু সেই জাহাজ থেকে বার্থে নামানো পণ্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। কারণ, কন্টেনারবাহী ট্রেলার বন্দরের বাইরে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৪:০৯
Share: Save:

বন্দরে জাহাজ আছে। কিন্তু সেই জাহাজ থেকে বার্থে নামানো পণ্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। কারণ, কন্টেনারবাহী ট্রেলার বন্দরের বাইরে যাওয়া নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। ফলে কলকাতা বন্দরের পাঁচটি কন্টেনার বার্থেই জাহাজ থেকে পণ্য নামানোর সময় অন্তত ১৫ ঘণ্টা করে বেড়ে গিয়েছে। আগে ৮০০ কন্টেনারবাহী একটি জাহাজ ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই পণ্য নামিয়ে ফের সাগরে ভাসতে পারত। এখন সেই কাজে ৮৫ থেকে ৯০ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। ফলে মোটা টাকা গুনাগার দিতে হচ্ছে বন্দর ব্যবহারকারীদের।

সমস্যা আরও বেড়েছে যাত্রী পরিবহণের পথ বদলে যাওয়ায়। ব্রেসব্রিজ, হাইড রোড, সিজিআর রোড দিয়ে আগে শুধু বন্দরের পণ্যবাহী ট্রেলার-লরি যাতায়াত করত। ওই পথে যাত্রিবাহী গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করত পুলিশ। কিন্তু বন্দরের ব্যবহারের জন্য নির্দিষ্ট রাস্তাই এখন যাত্রী পরিবহণের অন্যতম মাধ্যম। তাই বন্দর থেকে ট্রেলার-লরি বেরোনো কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ। তার জেরে কন্টেনারের পাহাড় জমছে বন্দরের মধ্যে।

বন্দরকর্তারা জানান, আগে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বন্দরের ট্রেলার-লরির চলাচল নিয়ন্ত্রণ করত পুলিশ। বাকি ১৭ ঘণ্টা বন্দরে খালাস হওয়া পণ্য বিনা বাধায় গন্তব্যের উদ্দেশে বেরিয়ে যেত। পুলিশ এখন সরকারি ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, রাত ১১টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্দরের গাড়ি চলবে। অর্থাৎ ১৭ ঘণ্টার বদলে মাত্র সাত ঘণ্টা কন্টেনারবাহী ট্রেলার-লরি বন্দরে যেতে বা আসতে পারবে।

যদিও বন্দরের এক কর্তা জানান, সরকারি নির্দেশে যা-ই থাকুক, গত শনি-রবিবার পুলিশ সহযোগিতা করেছে। নইলে সোমবার থেকে বন্দরে জাহাজের সংখ্যা কমে যেত। সপ্তাহের শেষ দু’দিনে প্রায় সারা দিন গাড়ি বেরিয়েছে। সোমবার দুপুরেও চার ঘণ্টার জন্য বন্দরের গাড়ি ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। রবিবার সারা দিন গাড়ি চালিয়ে ১১০০ কন্টেনার বন্দরের বাইরে আনা গিয়েছে। অথচ মাঝেরহাটের সেতুভঙ্গ পর্বের আগে গড়ে ১৫০০-১৭০০ কন্টেনার আনা সম্ভব হত। তার উপরে এখন ট্রেলার ও যাত্রিবাহী গাড়ি একসঙ্গে চলায় যানজটও বাড়ছে ভীষণ ভাবে।

বন্দরের দাবি, পাঁচটি জাহাজ সোমবারেও মাল খালাস করেছে। কিন্তু বিভিন্ন বার্থে এখনও প্রায় ৬৫০০ কন্টেনার আটকে আছে। দিনে মাত্র সাত ঘণ্টা ট্রেলার-লরি চললে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়া কঠিন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে কলকাতা পুলিশের সাহায্য চাওয়া হচ্ছে বলে জানান বন্দরের কর্তারা।

‘‘পুলিশ বিকল্প কিছু পথের সন্ধান করছে। আশা করছি, কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। জাহাজ থেকে পণ্য নামানো আগের মতোই স্বাভাবিক হয়ে যাবে,’’ বলেন বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Port Ship Clearing Bridge Collapse
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE