Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Jadavpur University

টাকা বন্ধ, ঘরে মুদিখানার জিনিস বিলি গবেষকদের

সুনন্দবাবু জানান, টাকার অভাবে কয়েক জন গবেষক বাধ্য হয়েই শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কহীন খুচরো কাজ নিচ্ছেন।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩২
Share: Save:

অতিমারির ক্রমবর্ধমান প্রকোপে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন পিএইচ ডি স্তরের গবেষকেরাও। এতটাই যে, তাঁদের অনেকে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, অর্থাভাবে বাড়ি বাড়ি মুদিখানার জিনিসপত্র পৌঁছে দিচ্ছেন কেউ কেউ। পাঁচ মাস ধরে ফেলোশিপের টাকা পাচ্ছেন না যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৪০০ গবেষক। তাঁদের কেউ কেউ শিক্ষাজগতের বাইরে গিয়ে কিছু কিছু খুচরো কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন।

যাদবপুরে রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান (রুসা) প্রকল্পে যে-ক’জন পিএইচ ডি গবেষক, পোস্ট ডক্টরাল গবেষক এবং রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট রয়েছেন, গত পাঁচ মাস তাঁদের হাতে ফেলোশিপের কোনও টাকা পৌঁছয়নি। বিনা পারিশ্রমিকেই তাঁরা গবেষণার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ওখানকার কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে পিএইচ ডি করছেন সুনন্দ বসু। তিনি বলেন, ‘‘প্রজেক্ট ও গবেষণার কাজ চলছে। আমরা কখনও বাড়িতে বসে, কখনও ল্যাবরেটরিতে গিয়ে কাজ করছি। কিন্তু পারিশ্রমিক পাচ্ছি না। অতিমারির মধ্যে নতুন প্রজেক্ট আসা বা নতুন প্রজেক্টে যোগ দেওয়াও সম্ভব নয়।’’

সুনন্দবাবু জানান, টাকার অভাবে কয়েক জন গবেষক বাধ্য হয়েই শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কহীন খুচরো কাজ নিচ্ছেন। কেউ কেউ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জোগান দিচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। এর ফলে ভীষণ রকম অবসাদে ভুগছেন গবেষকেরা। বার বার কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি।

সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য শনিবার জানান, এই জটিলতার মূলে আছে করোনা। রুসা থেকে গবেষণা এবং অন্যান্য খাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ কোটি টাকা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ-পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে মাত্র ৪০ কোটির কিছু বেশি টাকা। তার উপরে সেই টাকা আসার কিছু দিন পরেই শর্ত চাপানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শূন্য শিক্ষকপদ পূরণ করতে হবে। নইলে বাকি টাকা আর পাওয়াই যাবে না। ‘‘শিক্ষক নিয়োগের জন্য আমরা সব দিক থেকে প্রস্তুতি চালিয়েছিলাম। শতাধিক পদে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত ইন্টারভিউয়ের দিনক্ষণও ঠিক হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেই শুরু হয়ে যায় করোনার প্রাদুর্ভাব। ফলে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রুসা থেকেও আর টাকা পাওয়া যায়নি,’’ বললেন সহ-উপাচার্য।

গবেষকদের নিয়োগপত্রে বলা হয়েছিল, বিভিন্ন প্রজেক্টে গত বছরের মার্চ থেকে চলতি বছর মার্চের মধ্যে ফেলোশিপের টাকা দেওয়া হবে। তার পরে, গত ২৭ মার্চ প্রজেক্টগুলির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ায় রুসা। কিন্তু ফেলোশিপ নিয়ে আর কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি এবং টাকাও আসেনি বলে জানান সহ-উপাচার্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jadavpur University PHD Scholars Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE