জেলের তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ আরাবুল ইসলামের। ছবি সৌজন্য: এবিপি আনন্দ।
জেলে বসেও বেজায় চটে আরাবুল ইসলাম। আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের কয়েকজন অফিসারের ‘ষড়যন্ত্রে’ এ বারের ইদ ভাল কাটল না তাঁর। একে জেলবন্দি, তার উপর সেখানেও ‘ষড়যন্ত্র’।
গ্রেফতার হওয়ার পর গত কয়েক সপ্তাহে ভাঙড়ের এই তৃণমূল নেতা একাধিকবার ঘনিষ্ঠ মহলে অভিযোগ করেছেন যে, দল আদৌ তাঁর পাশে দাঁড়াচ্ছে না। আর তার কারণ দলের ভাঙড়েরই কিছু নেতা। তাই চেষ্টা চরিত্র করে এসএসকেএমে ভর্তি হওয়ার পর, সেই কিছু নেতার ‘সৌজন্যে’ ফের আলিপুর জেলেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে, এমনটাই বার বার নিজের কাছের লোকেদের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি।
তাই দলের উপর ভরসা না করে, আইনি লড়াই নিজের মত করেই চালাচ্ছেন তিনি। কয়েক দিন আগেই তিনি বেশ আশ্বস্ত হয়েছিলেন যখন মাছিভাঙায় নিহত হাফিজুর মোল্লার স্ত্রী সাবিনা খাতুন গত ৭ জুন আদালতে হলফনামা দিয়ে বলেন যে তাঁর স্বামীর খুনে আরাবুল যুক্ত নন। ভাঙড়ে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ অনুগামী বলেন, “দাদা ভেবেছিলেন এ বার জামিন হয়ে যাবে। কিন্তু তার পরও ১৩ জুন আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়ায় রীতিমত ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।”
আরও পড়ুন: ছেলের নিষ্কৃতিমৃত্যু চাইলেন রাজীব হত্যাকারীর মা
আর তার মধ্যেই জেলে যতটুকু বাড়তি সুযোগ সুবিধা পাচ্ছিলেন সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হল!
এসএসকেএম থেকে ফেরার পর থেকেই আরাবুলের ঠিকানা আলিপুর জেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ড। হাসপাতালে থাকলে অন্য ওয়ার্ডের মত ভিড় থাকে না। খাবার থেকে শৌচাগার— সবই একটু ভাল মানের পাওয়া যায়। সকালে মাখন-পাউরুটি-কলার সঙ্গে একটা ডিম। আর দুপুর বা রাতে দু’বেলাই মাছ বা ডিম। সঙ্গে বিকেলে একটা ফল।
আরও পড়ুন: নীতি পুলিশি চলবে না, হিজাব খুলে প্রতিবাদ ইরানি তরুণীর
কিন্তু রোজ রোজ এই থাবারেও মন ভরছিল না। আর তখনই আলাপ মনিরুল মোল্লার সঙ্গে। মনিরুল সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হলেও তার কদর একটু বেশি, কারণ সে জেলের ক্যান্টিন চালায়। জেল সূ্ত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরেই অনেক বন্দি থেকে শুরু করে নিচু তলার জেল কর্মীরাও অভিযোগ জানাচ্ছিলেন যে— মনিরুল আরাবুলের একটু বেশিই যত্ন-আত্তি করছে। ক্যান্টিনের মেনুতে না থাকলেও, আরাবুলের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে চিকেন কষা-পরোটা। এক জেলকর্তার দাবি, “এ রকম আরও ভাল-মন্দ খাবার নাকি আরাবুলের কাছে নিয়মিত মনিরুল পৌঁছে দিচ্ছে, এই অভিযোগ ক’দিন ধরেই আসছিল।” শুধু খাবার নয়, আরাবুল ইসলামের বিছানা ঠিক করে দেওয়া, বা রোজ কাচা বিছানার চাদরের ব্যবস্থাও নাকি করে দিচ্ছিল মনিরুল।
আরও পড়ুন: হাঁসফাঁস গরম থেকে মুক্তি মিলল, কিন্তু এ বৃষ্টি সাময়িক
জেল সূত্রে খবর, এ সব কারণেই শুক্রবার, অর্থাৎ ইদের আগের দিন, মনিরুলকে ক্যান্টিনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয় জেল কর্তৃপক্ষ। পরের দিন সরিয়ে দেওয়া হয় মনিরুলের পার্টনার লাল্টু দেবনাথকেও। তার জেরে শনিবার উৎসবের দিনেও ভাল-মন্দ খাওয়ার জো নেই ভাঙড়ের এই নেতার। আর এই সব কিছুর পিছনে ষড়যন্ত্র আছে, বিশ্বাস ভাঙড়ের ‘তাজা নেতা’র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy