নিয়োগ-দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হল বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্যের। প্রতীকী ছবি।
পনেরো বছর ধরে চলা নিয়োগ-দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হল বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য দিলীপকুমার সিংহের। একই সাজা হয়েছে প্রাক্তন কর্মসচিব দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায় এবং বিশ্বভারতীর বরখাস্ত হওয়া অধ্যাপিকা মুক্তি দেব-এর। বৃহস্পতিবার বোলপুরের এসিজেএম অরবিন্দ মিশ্র ওই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্তদের ১ হাজার টাকা করে জরিমানার নির্দেশ দেন বিচারক। অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ড। পুলিশ সূত্রের খবর, বোলপুর সংশোধনাগারে যাওয়ার পরেই অসুস্থ বোধ করেন দিলীপ সিংহ ও দিলীপ মুখোপাধ্যায়। দু’জনেই ভর্তি বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে।
জাল নথি দিয়ে বিশ্বভারতীতে লেকচারার পদে যোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মুক্তি দেবের বিরুদ্ধে। তদন্তে সিআইডি জানতে পারে, নিয়োগের সময়ে জমা দেওয়া জাল নথির প্রতিলিপি প্রত্যয়িত (অ্যাটেস্ট) করেন দিলীপকুমার সিংহ। আবার কাজে যোগের দিন মুক্তিদেবীর সমস্ত প্রতিলিপির মূল নথিগুলি দেখে নেওয়ার দায়িত্ব ছিল দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়ের। ফলে তিন জনকেই অভিযুক্ত করে জালিয়াতির মামলা শুরু হয় ২০০৪ সালে। পরে ষড়যন্ত্রের ধারাও যুক্ত হয়।
মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ এবং বোলপুর আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ফিরোজকুমার পাল জানান, যড়যন্ত্র ও জালিয়াতি-সহ কয়েকটি ধারায় মুক্তি দেব, প্রাক্তন উপাচার্য এবং প্রাক্তন কর্মসচিব দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। বয়সের কথা উল্লেখ করে সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবীরা এ দিন তাঁদের জামিনের আবেদন জানান। বিচারক তা নাকচ করে দেন। তাঁদের সাজা যাতে কম হয়, সেই আর্জিও রাখেন অভিযুক্তপক্ষের আইনজীবীরা।
এজলাসে বিচারকের সামনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে মুক্তি দেব বলেন, ‘‘রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। সে রকম হয়েছে আমার ক্ষেত্রেও। আমি এ সব বিষয়ে কিছু জানতাম না।’’ দিলীপকুমার সিংহ কোনও রকমে হেঁটে বিচারকের কাছ পর্যন্ত যান। কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন না বলে তাঁকে বসতে একটি টুল দেওয়া হয়। বসেই তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে নিরীহ। ডায়াবিটিস-সহ একাধিক রোগে আক্রান্ত। সম্প্রতি একটি সার্জারিও হয়েছে। তাই আমার সাজা কম করার আবেদন রাখছি।’’ একই আর্জি জানান প্রাক্তন কর্মসচিব।
সওয়াল-জবাব শুনে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন এসিজেএম। মামলা চলাকালীন তিন জনই কয়েক দিন জেল হেফাজতে ছিলেন। সেই দিনসংখ্যা পাঁচ বছরের কারাবাসের সময়সীমা থেকে বাদ যাবে। দিলীপকুমার সিংহের আইনজীবী সৈয়দ মহিউদ্দিন বলেন, ‘‘এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আবেদন জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy