Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

চেন্নাইয়ে পাকড়াও জেএমবি জঙ্গি আসাদুল্লা

গোয়েন্দারা জানান, আসাদুল্লা জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের চেন্নাই মডিউলের চাঁই। তার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের নিত্যানন্দপুর-ডাঙাপাড়ায়।

আসাদুল্লা শেখ ওরফে রাজা

আসাদুল্লা শেখ ওরফে রাজা

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:২৩
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গ থেকে পালিয়ে চেন্নাইয়ে আশ্রয় নিয়েছিল সে। সেখানকার এক ইটভাটায় সুপারভাইজার হয়ে বাংলার যুবকদের চাকরি দিয়ে জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগ করত আসাদুল্লা শেখ ওরফে রাজা। ইটভাটাতেই ওই যুবকদের জঙ্গি কাজকর্মের প্রশিক্ষণ দিত সে। সেই আসাদুল্লাকে মঙ্গলবার চেন্নাই থেকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে ওই যুবকের হাত ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে সন্দেহ করছে এসটিএফ।

গোয়েন্দারা জানান, আসাদুল্লা জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের চেন্নাই মডিউলের চাঁই। তার বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের নিত্যানন্দপুর-ডাঙাপাড়ায়। এ দিন ভোরে চেন্নাইয়ের থোরিয়াপক্কনম এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে ধরা হয়। চেন্নাইয়ের আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিনের ট্রানজিট রিম্যান্ডে তাকে কলকাতায় পাঠানোর নির্দেশ দেন।

২৬ অগস্ট গয়ার বুনিয়াদগঞ্জ থানার পাঠানটোলিতে ধরা পড়ে এ দেশে জেএমবি-র ‘আমির’ বা চাঁই ইজাজ আহমেদ। সঙ্গী পাকড়াও হয়েছে জেনে সে-দিনেই গয়া থেকে পালায় তার সঙ্গী আসাদুল্লা। সে থাকতে শুরু করে চেন্নাইয়ে।

এসটিএফ সূত্রের খবর, ইজাজের মতো আসাদুল্লাও গয়ায় বাচ্চাদের জামাকাপড় ফেরি করত। তার আড়ালে চলত জঙ্গি সংগঠনের কাজ। আসাদুল্লা গয়া থেকে পালানোর পরে তার সেখানকার ডেরায় হানা দিয়ে বোমার মালমশলা এবং বোমা তৈরির যন্ত্রাংশ উদ্ধার করেছিল বিহার পুলিশ।

গোয়েন্দারা জানান, আসাদুল্লার নাম প্রথম জানা যায় ২০১৪ সালে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের সময়। বছর দশেক আগে জেএমবি-তে নাম লিখিয়েছিল সে। কওসর, মৌলানা ইউসুফের সঙ্গে দক্ষিণ ভারতে সংগঠনের কাজ দেখভাল করত। পরে সে চেন্নাই মডিউলের মাথা হয়ে যায়। এক তদন্তকারী জানান, আসাদুল্লার কাছ থেকে সেখানে প্রশিক্ষণ নেওয়া বেশ কয়েক জনের নাম মিলেছে।

এ দিন ভাতারের ডাঙাপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, দু’কামরার মাটির বাড়ি আসাদুল্লাদের। উঠোনে আগাছা। টিনের চাল ভাঙাচোরা। বোঝা যায়, দীর্ঘদিন ওই বাড়িতে কেউ থাকেন না। স্থানীয়রা জানান, খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণের পরেই আসাদুল্লা বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। কিছু দিন পরে তার স্ত্রী দুই মেয়েকে নিয়ে মঙ্গলকোটের কুলসুনো গ্রামে বাপের বাড়ি চলে যান। সেই থেকেই ওই বাড়ি তালাবন্ধ।

ভাই কী ভাবে জঙ্গি হয়ে উঠল, সেই বিষয়ে ধারণা নেই আসাদুল্লার দিনমজুর দাদা এবনেসুদ শেখ ও বাসেদ শেখের। তাঁরা জানান, চেন্নাইয়ে ইটভাটার কাজে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল ভাই। আর কোনও যোগাযোগ নেই। তাঁরা বলেন, “ভাই যদি দোষী হয়, তা হলে সাজা পাবে। আর নির্দোষ হলে ছাড়া পাবে। আমরা কিছুই জানি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Terrorist JMB Chennai
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE