Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

লাখ টাকায় চাকরি! পোস্টারে পুরপ্রধানের নম্বর

পোস্টারে যোগাযোগের দু’টি ফোন নম্বরও রয়েছে। তার একটি হচ্ছে পুরসভার ল্যান্ডলাইন নম্বর, অন্যটি খোদ তৃণমূল পুরপ্রধানের মোবাইল নম্বর!

বিতর্ক এই পোস্টারে। —নিজস্ব চিত্র।

বিতর্ক এই পোস্টারে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্ষীরপাই শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৮ ০৪:৪২
Share: Save:

পুরভবন থেকে কয়েক হাত দূরে আনাজ বাজার। স্বাধীনতা দিবসের সকালে সেখানেই কয়েকটি পোস্টার দেখে চোখ কপালে ওঠে ক্ষীরপাই শহরের বাসিন্দাদের। স্পষ্ট লেখা— ‘ক্যাজুয়াল কর্মী নিয়োগ চলছে। ডোনেশন: এক ডাম্পার গুটি (স্টোনচিপস্‌), নগদ এক লক্ষ টাকা’। বিশেষ দ্রষ্টব্য হিসেবে নীচে আবার লেখা, ‘সর্বনিম্ন এক লক্ষ টাকা লাগবেই’।

পোস্টারে যোগাযোগের দু’টি ফোন নম্বরও রয়েছে। তার একটি হচ্ছে পুরসভার ল্যান্ডলাইন নম্বর, অন্যটি খোদ তৃণমূল পুরপ্রধানের মোবাইল নম্বর!

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে কেউ বা কারা দু’টি পোস্টার সাঁটিয়েছিল। বুধবার সকালে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরেই অবশ্য সেগুলি ছিঁড়ে ফেলা হয়। তবে ‘ক্ষীরপাই পৌর ইঞ্জিনিয়ারিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’-এর নামে ওই পোস্টার ঘিরে ততক্ষণে পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকায় শোরগোল পড়েছে। পুরসভার দাবি, ওই নামে কোনও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই। তা ছাড়া, ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের স্থান হিসেবে পোস্টারে লেখা রয়েছে পুরসভার দো’তলা। সেখানে আদতে পুরপ্রধান বসেন। গোটা ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছেন পুরপ্রধান দুর্গাশঙ্কর পান। তিনি বলেন, “একেবারে ভুয়ো পোস্টার। কোনও অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কেউ এই কাজ করেছে। আমি থানায় অভিযোগ করেছি। দলকেও সব জানিয়েছি।”

পুরসভা সূত্রের খবর, চার জন স্থায়ী কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। তবে কোনও অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হচ্ছে না। যদিও ক্ষীরপাইয়ের তৃণমূল কাউন্সিলর সুজয় পাত্রের দাবি, “মাস খানেক আগে তিন জন অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়েছে। আমি জানতে পর্যন্ত পারিনি। পুরসভায় প্রচুর অনিয়ম হচ্ছে।” পুরপ্রধান অবশ্য বলেন, “এক মাস আগে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়নি।”

ক্ষীরপাইয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিরোধ রয়েছে বহু দিন ধরেই। দ্বন্দ্ব এখানে দুই কাউন্সিলর গৌতম ভট্টাচার্য এবং সুজয় পাত্রের মধ্যে। গৌতমবাবু পুরপ্রধানের অনুগামী বলে পরিচিত। তৃণমূলের একাংশের ধারণা, এই গোষ্ঠী রাজনীতির জেরেই ওই পোস্টার পড়েছে। ক্ষীরপাই পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলর সিপিএমের শিশির প্রামাণিক কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে বিজেপির স্থানীয় নেতা তথা জেলা কমিটির সদস্য তরুণ কুমার দে বলেন, “এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের। টাকার বখরা নিয়েই এ সব হচ্ছে।” তৃণমূলের ক্ষীরপাই ব্লক সভাপতি চিত্ত পালের অবশ্য বক্তব্য, “দলের বদনাম করতেই কে বা কারা এমন কাণ্ড করেছে। আমরা দোষীকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Khirpai Poster Job
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE