জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মত। ফাইল চিত্র।
টানা হেফাজতে রেখেও জয়প্রকাশ চৌহান ওরফে হিম্মতের বিরুদ্ধে হওয়া মামলার নথিপত্র ঠিকমতো কেন জোগাড় হয়নি, আদালতে সেই প্রশ্ন তুললেন খোদ বিচারক। সাতদিনের পুলিশি হেফাজত শেষে চম্পাসারি এলাকায় প্রায় ১০ একর সরকারি জমি দখল করে আশ্রম কর্তৃপক্ষকে বিক্রি করার মামলায় সোমবার আদালতে তোলা হয় হিম্মতকে। এজলাসে তুলেই বিচারকের এই প্রশ্নের মুখে পড়েন তদন্তকারী অফিসার।
চম্পসারিতে পূর্ত দফতরের জমি দখল, আদিবাসী দম্পতির জমি দখলের মামলাটি প্রধাননগর থানার পুলিশ তদন্ত করছে। আর আশ্রমের জমি দখলের মামলাটি দেখছে কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখা। এ দিন তাদের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিচারক। আদালত সূত্রের খবর, এসিজেএম বিচারক সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্তকারী অফিসারের কাছে জানতে চান, আশ্রমকে কারা জমি বিক্রি করল সেই সংক্রান্ত কোনও নথি সাত দিনেও কেন জোগাড় করা গেল না? ওই জমি কেনাবেচার সঙ্গে জয়প্রকাশ চৌহানকে হেফাজতে নেওয়ার কী সম্পর্ক রয়েছে সেটাও জানতে চান তিনি।
এর পরে সরকারি আইনজীবী সুদীপ রায় বসুনিয়া আদালতকে জানান, চম্পাসারিতে সরকারি জমি দখল করে বিক্রি করে দেওয়ার বিভিন্ন ঘটনা একটি বড় কেলেঙ্কারি। ওই আশ্রমের প্রচুর জমি। তিনি জানান, অভিযুক্ত হিম্মত সরকারি জমি প্রভাব খাটিয়ে অন্যের নামে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। আরও কয়েকজনের বয়ানও গোয়েন্দারা রেকর্ড করেছেন। সেই সংক্রান্ত কিছু নথি যোগাড় করার জন্য আরও ৭ দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়েছেন গোয়েন্দারা।
সরকারি আইনজীবী আদালতের কাছে আর্জি জানান, এর আগে ১০ দিনের হেফাজত চাওয়া হয়েছিল, তখন আদালত ৭ দিনের হেফাজত দিয়ে বলেছিল, তদন্তের প্রয়োজনে আবার হেফাজতের আবেদন করবেন। সেই হিসেবেই আরও কিছুদিনের হেফাজত দেওয়ার আবেদন করেন তিনি। শেষে বিচারক সব পক্ষের সওয়াল শুনে হিম্মতকে আরও ৩ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন। এই প্রসঙ্গে কমিশনারেটের এক শীর্ষ কর্তা বলেছেন, ‘‘আদালতের পর্যবেক্ষণ নিয়ে কোনও মন্তব্য করার প্রশ্নই নেই। আমরা তদন্ত করে নথিপত্র আদালতে জমা করব। গোয়েন্দা শাখাকেও দ্রুত করার জন্য বলা হয়েছে।’’
এ দিন বিকেলে শিলিগুড়ি হয়ে দার্জিলিংয়ের দিকে রওনা হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন আদালতে তোলার পথে হিম্মত দাবি করেন তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। হিম্মত আরও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আমার আস্থা রয়েছে। সুবিচার পাব।’’
৫ অগস্ট থেকে পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন হিম্মত। এ দিন তাঁর আইনজীবী মলয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘শীর্ষ আদালতের নির্দেশিকা অনুসারে, কোনও মামলায় অভিযুক্তকে জেরার জন্য ১৫ দিনের বেশি পুলিশি হেফাজতে রাখা যায় না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সরকারি জমি বিক্রি হয়ে গেল, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসারদের ধরা হচ্ছে না কেন?’’ মলয়বাবুর দাবি, কবে, কখন জমি দখল হয়েছে, তার কোনও হিসেব এফআইআরে নেই হিম্মত অসুস্থ বলেও দাবি করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy