Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Kalyan Banerjee

বঙ্গ-রাজনীতিতে তপ্ত করোনা সভা

লোকসভায় তৃণমূলের সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি আক্রমণ করেন কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীকে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:০৭
Share: Save:

লোকসভায় আজ করোনা নিয়ে আলোচনার একটা বড় অংশ জুড়ে রইল বঙ্গ রাজনীতির তরজা।

লোকসভায় তৃণমূলের সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি আক্রমণ করেন কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরীকে। তাঁকে ‘মুর্শিদাবাদের নয়া মিরজাফর’ বলতেও ছাড়েননি এই তৃণমূল সাংসদ। করোনা-আলোচনায় অংশ নিয়ে বঙ্গের শাসকদলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলকে ‘চালচোর তৃণমূল’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি। অধীরও নিজের বক্তৃতায় করোনা মোকাবিলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হন।

লোকসভায় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের কোন জেলায় কত জন পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছেন তার কোনও তথ্য দেয়নি রাজ্য সরকার। তাই ২৫ হাজারের বেশি শ্রমিক ফেরত যাওয়া জেলাগুলিতে কোনও কেন্দ্রীয় অর্থ সাহায্য দেওয়া সম্ভব হয়নি। কল্যাণ আজ ওই অভিযোগ নস্যাৎ করে দাবি করেন, রাজ্যের ২৩টির মধ্যে ২০টি জেলায় ২৫ হাজারের বেশি পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছিলেন লকডাউনের সময়। সেই তথ্য নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অর্থ মন্ত্রককে পাঠিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় বঞ্চনার শিকার হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।

নির্মলার মতো প্রায় একই অভিযোগ করেছিলেন অধীরও। বক্তৃতায় আজ সরাসরি কংগ্রেসের দলনেতাকে নিশানা করেন কল্যাণ। তিনি বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী তো পাঁচ মাস দিল্লিতে বসেছিলেন। তিনি কী ভাবে জানবেন, কত জন পরিযায়ী শ্রমিক বাংলায় ফিরেছেন? রাজ্য সরকার কী ভাবে তাঁদের সাহায্য করেছে? উনি তো নিজের কেন্দ্রের জন্য পাঁচ পয়সাও ব্যয় করেননি।’’

করোনা নিয়ে বলতে উঠে অধীর সরাসরি নিশানা করেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে। তিনি বলেছেন, ‘‘করোনা-কালে বাংলার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। রাজ্য সরকার পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারছে না। চিকিৎসা নেই, হাসপাতালে বেড নেই— স্বাস্থ্যমন্ত্রী আপনি দ্রুত পদক্ষেপ করুন, না হলে রাজ্যের অবস্থা আরও ঘোরালো হবে।’’ এর পরেই পরিযায়ী শ্রমিক প্রসঙ্গ তুলে অধীর বলেন, ‘‘লকডাউনের সময় ১২ লক্ষের বেশি শ্রমিক বাংলায় ফিরেছেন। তাঁরা খেতে পাচ্ছেন না। খাবারের অভাবে ওই শ্রমিকদের অনেকেই আবার ভিন্ রাজ্যে কাজের সন্ধানে চলে যাচ্ছেন। এর মধ্যে মুর্শিদাবাদের অবস্থা সব চেয়ে খারাপ।’’ এই সময়ই নিজের আসন থেকে অধীরকে লক্ষ্য করে ‘মুর্শিদাবাদের নয়া মিরজাফর’, ‘মুর্শিদাবাদের নয়া মিরজাফর’ বলতে থাকেন কল্যাণ।

তৃণমূলের সচেতকের নিশানা থেকে আজ বাদ পড়েননি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনও। কল্যাণের কটাক্ষ, ‘‘করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যে লড়াই চলছে, তা কেউ একা লড়ছে না। রাজ্যগুলি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে একযোগে লড়াই করছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত স্বাস্থ্যমন্ত্রী শুধু প্রধানমন্ত্রীকেই করোনা-যুদ্ধের জন্য কৃতিত্ব দিচ্ছেন।’’ হর্ষ বর্ধনের জবাব, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মুখ্যমন্ত্রীরা, পুলিশ প্রশাসন— সকলে একসঙ্গে লড়াই করছেন।’’ তৃণমূল সাংসদের দাবি, করোনা মোকাবিলায় রাজ্যগুলির পুঁজির প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অবিলম্বে পশ্চিমবঙ্গের জন্য অর্থ বরাদ্দ করুন।

করোনা নিয়ে বাংলার সরকারের বিরুদ্ধে সার্বিক ব্যর্থতার অভিযোগ করেন বিজেপির লকেট। বাংলার শাসকদলকে ‘চালচোর তৃণমূল’ বলে উল্লেখ করে তাঁর অভিযোগ, “যখন পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনে পশ্চিমবঙ্গে ফেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন এটি করোনা এক্সপ্রেস। করোনা ছড়াতে রাজ্যে আসছে। তিনি শুধু চকের গণ্ডি কেটে গিয়েছেন নিজের রাজনৈতিক লাভের জন্য।’’ তাঁর অভিযোগ, প্রথমে করোনাকে গুরুত্বই দেয়নি বাংলার সরকার। বলা হয়েছে, যে দিল্লির হিংসা থেকে নজর ঘোরানোর জন্য করোনা আমদানি করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE