Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ে আটকে মমতার মঞ্চে

মঙ্গলবার মানবাজার গার্লস হাইস্কুলে যখন এই উদ্যোগ চলছে, তখন পূর্ব বর্ধমানে মাটি উৎসবের মঞ্চে জেলায় পাঁচ মাসে ১১৬টি নাবালিকা বিয়ে আটকানোর জন্য কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের প্রশংসায় ভরাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান ও মানবাজার শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০২
Share: Save:

নাবালিকা বিয়ে রুখে আন্দোলনের পথ খুলেছিল পুরুলিয়ার মেয়েরা। সে জেলারই মানবাজারে শিক্ষাবর্ষ শুরুর দিনে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে না দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের লিখিত অঙ্গীকার করালো স্কুল।

মঙ্গলবার মানবাজার গার্লস হাইস্কুলে যখন এই উদ্যোগ চলছে, তখন পূর্ব বর্ধমানে মাটি উৎসবের মঞ্চে জেলায় পাঁচ মাসে ১১৬টি নাবালিকা বিয়ে আটকানোর জন্য কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদের প্রশংসায় ভরাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলছেন, “কত সাহস নিয়ে কন্যাশ্রীর মেয়েরা বাল্যবিবাহ রুখেছে। ওদের প্রতি আমার ভালবাসা ও আশীর্বাদ রইল। পুলিশকে ওদের সাহসিকতার জন্য পুরস্কার দিতে বলব।”

আগে পড়াশোনা, পরে বিয়ে— পুরুলিয়ার রেখা কালিন্দী, বীণা কালিন্দী, আফসানা খাতুনদের এই লড়াই এখন ছড়িয়ে পড়েছে রাজ্যে। ফুটবল খেলতে চেয়ে বিয়ে রোখার আর্জি নিয়ে থানায় হাজির হয়েছে মানবাজারের সায়রা খাতুন। স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দ্বারস্থ হয়ে বিয়ে আটকেছে নদিয়ার ধানতলার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী খাদেজা মণ্ডল। এই সব মেয়েদের হাত আরও শক্ত করছে স্কুলে-স্কুলে গড়ে ওঠা ‘কন্যাশ্রী ক্লাব’।

বর্ধমানেও ক্লাব সদস্যদের তৎপরতা কম নয়। সহপাঠীরা সবাই স্কুলে আসছে কি না, নিয়মিত খোঁজ রাখে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর গার্লস হাইস্কুলের কন্যাশ্রী ক্লাব। কেউ টানা দিন কয়েক না এলেই বাড়িতে হাজির হয় তারা। সে ভাবে তিন সহপাঠীর বিয়ে আটকেছে তারা। আউশগ্রামের ওরগ্রাম চতুষ্পল্লি হাইমাদ্রাসায় সহপাঠীর বিয়ের খবর পেয়ে দল বেঁধে গিয়েছিল ‘কন্যাশ্রী’রা। সেই কিশোরীকে স্কুলের হস্টেলে রেখে পড়া চালানোর সাহসও জুগিয়েছে।

এ কাজের জন্য এ দিন দশটি কন্যাশ্রী ক্লাবের সভানেত্রীর হাতে শংসাপত্র তুলে দেন মমতা। পূর্বস্থলীর রিঙ্কি মণ্ডল, জামালপুরের কুমকুম শেঠ, কাটোয়ার পাপড়ি দে-রা বলে, “আরও ভাল করে কাজ করতে উনি উৎসাহ দিয়েছেন।”

কন্যাশ্রী প্রকল্পের পূর্ব বর্ধমান জেলা আধিকারিক শারদ্বতী চৌধুরী বলেন, “আমাদের চোখ ও কান হচ্ছে কন্যাশ্রী মেয়েরা। সহপাঠীর বিয়ে রোখার পাশাপাশি, কন্যাশ্রীরা সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের কাউন্সেলিংও করছে।” বিয়ে রুখতে স্কুলের উদ্যোগ দেখে অভিভাবক লক্ষ্মীমণি হাঁসদা, ভূদেব মাহাতোরা বলেন, ‘‘মেয়েরা যদি বড় হয়ে স্বাবলম্বী হয়, সেটা তো ভালই। তখন ওরাই নিজেদের জীবন ঠিক করে নেবে।’’

বিডিও (মানবাজার-১) নীলাদ্রি সরকারের আশা, ‘‘অন্য স্কুল এ পথে হাঁটলে, এই উদ্যোগও সামাজিক আন্দোলনের চেহারা নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE