Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পেরেক বেরোলেও পর্যবেক্ষণে করিম

শনিবার সকালে একটি লোহার মরচে ধরা পেরেক করিমের ডান চোখে ঢুকে যায়। ওই রাতেই ভর্তির আধ ঘণ্টার মধ্যে শল্যচিকিৎসক সুদীপ্ত মল্লিক ও তাঁর সহকারীরা অস্ত্রোপচার করে পেরেকটি বার করেন। তার পরে শিশুটিকে চক্ষু চিকিৎসক সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে ভর্তি করানো হয়।

করিমের চোখ থেকে বার করা হয়েছে পেরেক। নিজস্ব চিত্র

করিমের চোখ থেকে বার করা হয়েছে পেরেক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৭ ০৫:০৯
Share: Save:

এখনও ফুলে আছে চোখ। তবে মরচে ধরা পেরেক সুন্দরবনের জীবনতলার বাসিন্দা আট বছরের করিম মোল্লার চোখের বিশেষ কোনও ক্ষতি করতে পারেনি। পরবর্তী কালের সম্ভাব্য সমস্যা এড়াতে তাকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন চিকিৎসকেরা।

শনিবার সকালে একটি লোহার মরচে ধরা পেরেক করিমের ডান চোখে ঢুকে যায়। ওই রাতেই ভর্তির আধ ঘণ্টার মধ্যে শল্যচিকিৎসক সুদীপ্ত মল্লিক ও তাঁর সহকারীরা অস্ত্রোপচার করে পেরেকটি বার করেন। তার পরে শিশুটিকে চক্ষু চিকিৎসক সমীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনে ভর্তি করানো হয়।

চিকিৎসকেরা জানান, পেরেকটি ডান চোখের উপর দিয়ে ঢুকে চোখ ও মস্তিষ্কের মাঝখানের একটি হাড়ে আঘাত করে। তবে চোখ বা মস্তিষ্কের বড় ধরনের কোনও ক্ষতি হয়নি। চোখটির ‘অপটিক্যাল নার্ভ’ এবং পেশির কোনও ক্ষতি হয়েছে কি না, তা দেখার জন্য রবিবার সকালে ফের থ্রিডি সিটি স্ক্যান করানো হয়। তাতেও দেখা গিয়েছে, চোখের ক্ষতি হয়নি।

পেরেকের মরচের কোনও অংশ মস্তিষ্কের ভিতরে থেকে গেলে পরে যাতে সমস্যা না-হয়, তা দেখার জন্যই তাকে আপাতত ৪৮ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন চিকিৎসেকরা। নিউরোলজিস্ট আজ, সোমবার করিমকে আবার পরীক্ষা করবেন বলে জানান এনআরএস হাসপাতালের সুপার হাসি দাশগুপ্ত।

শনিবার করিমের আত্মীয়স্বজন প্রথমে তাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা সম্ভব না-হওয়ায় তাকে আনা হয় কলকাতায়। ন্যাশনাল, এসএসকেএম, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ঘুরে অবশেষে তার ঠাঁই হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালে। রাত সাড়ে ৮টায় এনআরএস তাকে ভর্তি নেয় এবং তার আধ ঘণ্টার মধ্যেই অস্ত্রোপচার করা হয়।

প্রশ্ন উঠছে, একটি শিশুর চোখের এই ধরনের সঙ্গিন অবস্থায় শহরের কয়েকটি সরকারি হাসপাতাল তাকে ফিরিয়ে দিল কী ভাবে?

ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন বা আইএমএ-র রাজ্য শাখার সম্পাদক চিকিৎসক শান্তনু সেন রবিবার জানান, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কোনও জরুরি বিভাগ থেকে কোনও রোগীকে ফেরানো যায় না। এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে রোগীকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ‘‘সংগঠনের কাছে লিখিত অভিযোগ এলে তদন্ত করে দেখা হবে,’’ বলেন শান্তনুবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE