Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সুরক্ষা বাড়াতে বডি স্ক্যানার বিমানবন্দরে

কলকাতা বিমানবন্দরে আপাতত বসছে ১৭টি বডি স্ক্যানার। তা চালু হয়ে গেলে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢোকার আগে যাত্রীদের মোটা জ্যাকেট, জুতো, বেল্ট-সহ শরীরে থাকা যাবতীয় ধাতব বস্তু খুলে স্ক্যানারের ভিতরে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।

কলকাতা বিমানবন্দর।—ছবি সংগৃহীত

কলকাতা বিমানবন্দর।—ছবি সংগৃহীত

সুনন্দ ঘোষ
শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৯ ০৩:০৮
Share: Save:

সব বিমানবন্দরে দেহ-তল্লাশি এখনও হয়। কিন্তু মেটাল ডিটেক্টর ডোর ও হাতে ধরা ‘হ্যান্ড স্ক্যানার’-এর সেই তল্লাশিতে অধাতব অস্ত্র বা অধাতব বিস্ফোরক ধরা পড়ে না। ধরা পড়ে শুধু ধাতব অস্ত্র ও ধাতব বিস্ফোরক। নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করতে ৫০০ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করে এ বার কলকাতা-সহ দেশের ২৮টি বিমানবন্দরে ‘বডি স্ক্যানার’ বসানো হচ্ছে। দেশে এই প্রথম।

কলকাতা বিমানবন্দরে আপাতত বসছে ১৭টি বডি স্ক্যানার। তা চালু হয়ে গেলে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢোকার আগে যাত্রীদের মোটা জ্যাকেট, জুতো, বেল্ট-সহ শরীরে থাকা যাবতীয় ধাতব বস্তু খুলে স্ক্যানারের ভিতরে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। যাত্রীর ছবি ফুটবে মনিটরে। তাঁর শরীরের কোথাও ধাতব বা অধাতব বিস্ফোরক বা অস্ত্র লুকোনো আছে কি না, সঙ্গে সঙ্গেই তা বোঝা যাবে। এই ব্যবস্থায় দু’টি কাজ হবে। প্রথমত, যাত্রীর সঙ্গে কোনও বিস্ফোরক বা অস্ত্র থাকলে তা ধরা পড়বে। দ্বিতীয়ত, এখন দাঁড় করিয়ে সারা গায়ে হাত বুলিয়ে যে-ভাবে তল্লাশি চালানো হয়, সেই অস্বস্তিকর পরীক্ষা থেকে রেহাই পাবেন যাত্রীরা। অধাতব অস্ত্র ও বিস্ফোরক ধরতে বিশ্বের বড় বড় বিমানবন্দরে বসছে বডি স্ক্যানার।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান গুরুপ্রসাদ মহাপাত্র বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘কত দাম পড়বে, কী ভাবে, কাদের কাছ থেকে বডি স্ক্যানার নেওয়া হবে, তা ঠিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিমানবন্দরে স্ক্যানার বসতে ৬-৭ মাস লাগবে।’’ কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, প্রতিটি স্ক্যানারের জন্য দেড় থেকে দু’‌কোটি টাকা খরচ হবে। ‘গ্লোবাল টেন্ডার’ বা বিশ্ব দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে তা কেনা হবে।

বুরো অব সিভিল এভিয়েশন সিকিয়োরিটি (বিসিএএস)-এর তালিকা অনুযায়ী দেশের চার মেট্রো শহর-সহ ২৮টি বিমানবন্দর সব চেয়ে সংবেদনশীল। জম্মু-কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু বিমানবন্দর রয়েছে এই তালিকায়। বিসিএএসের পরামর্শ অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে ২৮টি এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৬টি বিমানবন্দরে বডি স্ক্যানার বসবে।

প্রায় একই সঙ্গে ‘অটোমেটিক ট্রে রিট্রিভাল সিস্টেম’ (এটিআরএস) বসতে চলেছে বিমানবন্দরগুলিতে। কলকাতায় ১২টি এটিআরএস বসার কথা। প্রতিটির জন্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা খরচ হবে। এটি ছোট কনভেয়ার বেল্টের মতো। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য জানান, এখন নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঢোকার সময় যাত্রীর পেন, ওয়ালেট, মানিব্যাগ, ঘড়ি, মোবাইল এবং অন্যান্য সামগ্রী ট্রে-তে রেখে এক্স-রে মেশিনের মধ্য দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মেশিনের অন্য প্রান্তে সেই ট্রে সংগ্রহ করেন যাত্রীরা। এটিআরএসে এই ট্রে-ও কনভেয়ার বেল্টে ঘুরতে থাকবে। যাত্রীরা দেহের স্ক্যান করিয়ে নেওয়ার পরে অন্য প্রান্তে পৌঁছে সেই কনভেয়ার বেল্টের সামনে দাঁড়াবেন। নিজের মালপত্র-সহ ট্রে সামনে এলে তিনি তুলে নেবেন। নিজের মালপত্র নিয়ে ট্রে আবার বেল্টের উপরে রেখে দেবেন। এখন নিরাপত্তা বেষ্টনীর ভিতরে পৌঁছে যাত্রীরা নিজেদের মালপত্র নিয়ে সেখানেই খালি ট্রে রেখে চলে যান। সেই খালি ট্রে এক প্রান্ত থেকে তুলে অন্য প্রান্তে আনতে হয় রক্ষীদের। অভিযোগ, তাতে সময় অপচয় হয়।

বিমানবন্দর সূত্রের খবর, এই এটিআরএসের জন্য বিশ্ব টেন্ডারে এক চিনা সংস্থা সাড়া দিয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকার নিরাপত্তার কারণে সেই সংস্থার দরপত্র বাতিল করে দিয়েছে। নতুন সংস্থার খোঁজ চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Airport Body Scanners
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE