সারদা-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পরে যে থানার লক-আপে প্রথম রাত কাটাতে হয়েছিল কুণাল ঘোষকে, এ বার তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকায় সেই বিধাননগর (দক্ষিণ) থানায় সংস্কারের কাজ হবে। বুধবার তাঁর সাংসদ কোটার টাকা খরচ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তাতে ওই সরকারি ভবনের সংস্কারে কোনও বাধা রইল না বলে জানিয়েছেন কুণাল।
কুণালের সাংসদ তহবিলের টাকা ছাড়ার দায়িত্ব কলকাতা পুরসভার। তৃণমূলের সাসপেন্ডেড সাংসদ কুণালের অভিযোগ, তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা তিনি বিভিন্ন খাতে খরচ অনুমোদনের পরেও পুরসভা সেই টাকা ছাড়ছিল না। বাধ্য হয়ে তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। এ দিন হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক পুরসভার আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দেন, কুণালের সাংসদ তহবিলের ওই টাকা অবিলম্বে ছাড়তে হবে। কুণালের আইনজীবী শুদ্ধসত্ত্ব বন্দ্যোপাধ্যায় ও অয়ন চক্রবর্তী আদালতে জানান, কুণালের অনুমোদন করা প্রায় ১০ কোটি টাকা আটকে রাখা হয়েছে। কোন প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে ওই টাকা ছাড়া হবে, ২৫ জানুয়ারি পুরসভার প্রতিনিধি হিসেবে ডিজি (এমপি-ল্যাড)-কে আদালতে তা জানাতে বলেছেন বিচারপতি।
কুণাল বলেন, ‘‘আগের টাকা আটকে রয়েছে বলে পরের ১৫ কোটি টাকা খরচের অনুমোদন দিতে পারছি না। এ বার সেগুলিরও অনুমোদন দিতে পারব।’’ বিধাননগর (দক্ষিণ) থানা ছাড়াও কুণালের সাংসদ তহবিলের টাকায় যে সরকারি ভবনগুলির সংস্কার হবে তার মধ্যে সাঁতরাগাছি থানা, পাঁচটি সংশোধনাগার, কলকাতা পুলিশ হাসপাতাল এবং বিধাননগর ও শিলিগুড়ি কমিশনারেট রয়েছে।
২০১৩ সালের ২৩ নভেম্বর এক পুলিশকর্তার বিরুদ্ধে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন কুণাল। সেখানেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। সেই রাতটা সেখানেই কাটাতে হয়েছিল তাঁকে। কুণালের কথায়, ‘‘থানার ভিতরটা দেখে খারাপ লেগেছিল। মনে হয়েছিল, সংস্কার জরুরি। পুলিশ হেফাজতে পরের রাতগুলি আমাকে ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানায় রাখা হয়েছিল। তুলনায় ইলেকট্রনিক্স থানা বেশ পরিচ্ছন্ন।’’ কুণাল জানান, পরবর্তী কালে সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকাকালীন দু’দফায় চার দিন তাঁকে বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার লক-আপে রাখা হয়েছে। ২০১৫ সালে পুজোর পরে তিনি প্রেসিডেন্সি জেলে বসে তাঁর সাংসদ তহবিলের টাকা খরচের অনুমোদন পাঠান। সেই তালিকাতেই ছিল বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার নাম।
কুণালের এই সিদ্ধান্তে অস্বস্তিতে পড়ে রাজ্য সরকার। কারণ, যে পরিকাঠামোর পিছনে সরকারের খরচ করার কথা তা কুণালের সাংসদ তহবিলের টাকায় করতে স্বভাবতই আপত্তি ছিল রাজ্যের। তাই পুরসভাও টাকা ছাড়তে গড়িমসি করে বলে অভিযোগ।
কুণাল বলেন, ‘‘গ্রেফতার হওয়ার আগের দিন ২২ নভেম্বর অনেকগুলি প্রকল্পের অনুমোদনপত্রে সই করেছিলাম। সেই আড়াই কোটি টাকাও আটকে রয়েছে। জেলে বসেও আমাকে অনুমোদনপত্রে সই করতে দেওয়া হচ্ছিল না। এর প্রতিবাদে অনশন করি। অবশেষে আদালত সই করার অনুমতি দেয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy