প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার ( টেট ) প্রশ্ন ‘ফাঁস’ নিয়ে তদন্ত শুরু হল। পুলিশ জানায়, টেট-এর প্রশ্নপত্র আগেই বাইরে চলে যাওয়া নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই চুরি ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে গোয়েন্দা বিভাগের স্পেশ্যাল সেল তদন্ত শুরু করে।
১১ অক্টোবর গোটা রাজ্যে টেট পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা শুরুর আধ ঘণ্টা আগে একটি টিভি চ্যানেলের অফিসে একটি প্রশ্নপত্র আসে। তার প্রতিলিপি গড়িয়াহাট থানায় জমা দেন ওই চ্যানেলের এক প্রতিনিধি। প্রথমে পুলিশ সেই প্রতিলিপি পাঠায় শিক্ষা দফতরকে। পরে চ্যানেলের তরফে ওই প্রতিলিপি পাঠানো হয় শিক্ষাসচিবের কাছেও।
প্রাথমিক ভাবে শিক্ষা দফতরের কর্তাদের একাংশ সামগ্রিক ভাবে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উড়িয়ে দেন। তাঁরা দাবি করেন, পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে হোয়্যাটসঅ্যাপ-এ প্রশ্ন ছড়িয়ে পড়েছে। এটা ‘সাইবার অপরাধ’ হলেও প্রশ্ন ফাঁস নয়। পরবর্তী কালে সিবিআই তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। আদালতে সরকারপক্ষ জানায়, এ নিয়ে দু’মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করা হবে। আদালত জানায়, ২৩ নভেম্বর হলফনামা দাখিল করতে হবে রাজ্যকে।
গোয়েন্দারা জানান, হলফনামায় যাতে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কিছু জানানো যায়, তাই পুজোর পরে মানিকবাবু অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতেই মামলা করেছে পুলিশ। এক গোয়েন্দা অফিসার জানান, সংবাদমাধ্যম থেকে গড়িয়াহাট থানায় দেওয়া চিঠিটাও মামলার নথিতে রয়েছে। শিক্ষা দফতরের কর্তাদের একাংশ পুলিশকে জানান, প্রশ্নপত্র কী ভাবে বাইরে এল, সেটা খুঁজে বার করতে হবে। নবান্ন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই প্রশাসন ঠিক করেছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে না, যা আদালতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে আগের শুনানির দিন। লালবাজারের একাংশ জানাচ্ছেন, টেট প্রশ্নপত্রের একাধিক সেট ছিল। যেটি বাইরে এসেছে, সেটির সঙ্গে মূল প্রশ্নপত্রগুলির কয়েকটির কিছু মিল রয়েছে। কী ভাবে ওই প্রশ্নপত্রটি বেরো, তা খুঁজে বার করতে সাইবার অপরাধের তদন্তে পারদর্শী অফিসারদের সাহায্য নেওয়া হতে পারে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, প্রশ্নপত্র পরীক্ষার আগে বাইরে এনেছেন কোনও পরীক্ষাকেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ডিউটিরত কোনও কর্মী বা শিক্ষক। তাঁদেরই কেউ মোবাইলে ছবি তুলে তা হয়তো পাঠিয়েছেন বাইরে। এ ব্যাপারে রবিবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র বাইরে এল কী ভাবে তা জানার জন্যই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’’ কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান পল্লবকান্তি ঘোষ বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy