Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

ছিটমহলে জমির মালিকানা দিতে ভূমি আইন সংশোধন

২০১৫ সালে ছিটমহল চুক্তির পরে বাংলাদেশকে ১৭ হাজার একরের কিছু বেশি জমি দেওয়া হয়। বাংলাদেশের থেকে ভারত পায় ৭১০০ একরের কিছু বেশি জমি। ছিটমহলে বসবাসকারী প্রতিটি পরিবারকে সেই জমির মালিকানা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় তার পর থেকেই।

ভূমি আইনের সংশোধনী পাশ হল বিধানসভায়।

ভূমি আইনের সংশোধনী পাশ হল বিধানসভায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:১৬
Share: Save:

ছিটমহলে বসবাসকারীদের জমির স্থায়ী মালিকানা দিতে ভূমি আইনের সংশোধনী পাশ হল বিধানসভায়। বর্তমান আইনের সঙ্গে সোমবার নতুন দু’টি ধারা যুক্ত করা হয়। সংশোধিত আইনকে স্বাগত জানালেও, ছিটমহলের মানুষদের সার্বিক সুযোগ সুবিধা দেওয়ার দাবিতে সরব হন বিরোধীরা। অন্য দিকে সংশোধনী নিয়ে আলোচনার সময় নাগরিক পঞ্জিকরণ (এনআরসি) প্রসঙ্গ টেনে নাম না-করে বিজেপির সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিন বর্তমান ভূমি আইনে ৩-বি নামে নতুন ধারা যুক্ত করে ছিটমহলের সব জমিকে খাস হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩-বি (২) ধারা যুক্ত করার ফলে ওই জমিতে বসবাসকারী পরিবারগুলিকে জমির আইনি অধিকার দেওয়া সম্ভব হবে। ২০১৫ সালে ছিটমহল চুক্তির পরে বাংলাদেশকে ১৭ হাজার একরের কিছু বেশি জমি দেওয়া হয়। বাংলাদেশের থেকে ভারত পায় ৭১০০ একরের কিছু বেশি জমি। ছিটমহলে বসবাসকারী প্রতিটি পরিবারকে সেই জমির মালিকানা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় তার পর থেকেই। কিন্তু এত দিনেও কাজ বিশেষ এগোয়নি। এ নিয়ে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে গিয়ে প্রবল উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিন দিনের মধ্যে অধ্যাদেশ জারি করার নির্দেশও দেন তিনি। তবে বিধানসভা অধিবেশন আসন্ন বলে সেই পথে না-হেঁটে আইন সংশোধন করারই সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী এ দিন বলেন, ‘‘দু’বছর আগেই এটা হতে পারত। কোচবিহারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিষয়টা বুঝেছিলেন। তাই তাড়াহুড়ো করে করা হল।’’

ছিটমহলের বাসিন্দাদের সার্বিক পুনর্বাসনের উপরে জোর দেন কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা। তাঁকে আশ্বাস দিয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, যত দ্রুত সম্ভব ছিটমহলকে পঞ্চায়েতের আওতায় আনতে হবে। বাংলাদেশ থেকে এ দেশে আসা মানুষদের শিক্ষা সংক্রান্ত শংসাপত্রের সমস্যা মেটানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষামন্ত্রীকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘৫৭৯ কোটি টাকা কেন্দ্র দিয়েছে। এখনও ৪২৬ কোটি টাকা আমরা পাই। একটা সেতু তৈরি করতেই ৪০০ কোটি টাকা লাগছে। রাস্তা, হাসপাতাল অন্যান্য পরিকাঠামো সব হচ্ছে। সেখানকার মানুষদের রেশন, ভোটার কার্ড, বিদ্যুৎ, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ইত্যাদি সমস্যা আমরা দেখছি।’’ বিরোধীদের দাবি মেনে ছিটমহলের বাসিন্দাদের ‘কন্যাশ্রী’, ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।

পাশাপাশি, বিজেপির নাম না-করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘অনেকে এনআরসি করে ৫০ বছর আগেকার লোকদেরও তাড়িয়ে দিচ্ছে। দেশ বিভাগের পরে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, ১৯৭১ সালের মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা এ দেশের নাগরিক। কিন্তু কোনও কোনও রাজনৈতিক দল তাঁদের উপর অত্যাচার করছে। ইতিমধ্যে অসমে অনেকে আত্মহত্যা করেছেন। আমরা চাই, সেখানকার বৈধ নাগরিকেরা সম্মানের সঙ্গে থাকুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Land law amendment Assembly West Bengal Enclave
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE