Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
State News

আজ বন্‌ধে বাম-কংগ্রেস, বিরোধিতায় নামছে তৃণমূল, সঙ্ঘাতের আশঙ্কা রাজ্যে

বামেদের হরতাল ১২ ঘণ্টার। সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তবে কংগ্রেস বাংলায় ১২ ঘণ্টার বন্‌ধে যাচ্ছে না। অন্যান্য রাজ্যের কংগ্রেস সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্‌ধের ডাক দিলেও বাংলার কংগ্রেস সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত ৬ ঘণ্টার বন্‌ধ পালন করবে বলে প্রদেশ কংগ্রেস জানিয়েছে।

ভারত বন্‌ধকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ার সম্ভাবনা পশ্চিমবঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত।

ভারত বন্‌ধকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ার সম্ভাবনা পশ্চিমবঙ্গে। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৮:০১
Share: Save:

সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনেই দেশব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস এবং পাঁচটি বাম দল। সামিল হচ্ছে আরও অনেকগুলি বিরোধী দল। কিন্তু বন্‌ধকে ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ সবচেয়ে বাড়ার সম্ভাবনা পশ্চিমবঙ্গেই। কারণ এ রাজ্যের শাসক দল বন্‌ধের বিরোধিতার কথা ঘোষণা করে দিয়েছে। যে ইস্যুতে বন্‌ধের ডাক, সেই পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার পথে নামছে তৃণমূলও। কিন্তু অফিস-কাছারি, দোকান-বাজার খোলা রাখতে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে তৃণমূল যে সক্রিয় হবে, সে ইঙ্গিত দিয়ে দিয়ে রেখেছে তারা।

বামেদের হরতাল ১২ ঘণ্টার। সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। তবে কংগ্রেস বাংলায় ১২ ঘণ্টার বন্‌ধে যাচ্ছে না। অন্যান্য রাজ্যের কংগ্রেস সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্‌ধের ডাক দিলেও বাংলার কংগ্রেস সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত ৬ ঘণ্টার বন্‌ধ পালন করবে বলে প্রদেশ কংগ্রেস জানিয়েছে।

সিপিএম বন্‌ধ পালনের পাশাপাশি অবস্থান বিক্ষোভও করবে। কলকাতায় এবং প্রতিটি জেলার বিভিন্ন এলাকায় সোমবার সকাল থেকে মিছিল এবং জমায়েত করবেন সিপিএম নেতা-কর্মীরা। জনবহুল এলাকায় রাস্তার উপর অবস্থান বিক্ষোভ এবং অবরোধ চলবে বলে সিপিএম সূত্রে জানানো হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীর কুশপুত্তলিকাও দাহ করা হবে বিক্ষোভে।

আরও পড়ুন
সোশ্যাল মিডিয়ায় এ বার নজরদারি চালাবেন রাজ্যের আমলারা

মূলত পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন এবং রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদেই দেশজোড়া বন্‌ধের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস ও বাম দলগুলি। সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, এনসিপি, ডিএমকে, এমডিএমকে এই বন্‌ধে সামিল হচ্ছে। জেডি(ইউ)-এর যে অংশটি শরদ যাদবের সঙ্গে রয়েছে, তারও সামিল হচ্ছে বন্‌ধে। তবে দেশ জুড়ে বিজেপি বিরোধী ঐক্যের অন্যতম প্রধান প্রবক্তা যে দল, সেই তৃণমূল সামিল হচ্ছে না এই হরতালে। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন। তিনি বলেন, ‘‘যে ইস্যুতে বন্‌ধের ডাক দেওয়া হয়েছে, সেই ইস্যুগুলির প্রতি আমাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে। কিন্তু আমাদের অনেক দিনের ঘোষিত নীতিই হল বন্‌ধ-অবরোধের রাজনীতি না করা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে যখন বাংলাকে শক্ত অর্থনৈতিক ভিতের উপরে দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে, তখন বন্‌ধ-অবরোধে কর্মদিবস নষ্ট করাকে আমরা সমর্থন করি না।’’

আরও পড়ুন
বিশ চাকায় নিষেধাজ্ঞা, চড়ছে পরিবহণ খরচ

পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে তৃণমূল অবশ্য পথে নামছে বন্‌ধের দিনেই। কেন্দ্রীয় কর্মসূচি কলকাতাতেই হবে। মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করবে তৃণমূল। তবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আহ্বান, বন্‌ধের বিরোধিতা করে দোকান-বাজার খোলা রাখা হোক এবং রাস্তায় যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হোক। অফিস-কাছারি খোলা রাখার নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য সরকারও। সোমবার অফিসে না গেলে এক দিনের বেতন কাটা যাবে রাজ্য সরকারি কর্মীদের, বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে নবান্ন।

আরও পড়ুন
বঙ্গের শিক্ষাঙ্গনে প্রচার চালাবে ভিএইচপি

এক দিকে বাম-কংগ্রেস, অন্য দিকে তৃণমূল— পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দু’পক্ষের পরস্পর বিরোধী কর্মসূচির জেরে পরিস্থিতি সোমবার উত্তপ্ত হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এক দিকে বন্‌ধ সফল করতে রাজ্যে রাস্তায় নামবে সিপিএম, কংগ্রেস-সহ অন্তত ছ’টি দল। অন্য দিকে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাস্তায় নামলেও বন্‌ধ ব্যর্থ করার চেষ্টা করবে তৃণমূল। ফলে সঙ্ঘাতের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজ্যের রাজনৈতিক শিবির।

বন্‌ধের দিনে রাস্তায় বেরনোয় যদি যানবাহনে ভাঙচুর হয়, সরকার ক্ষতিপূরণ দেবে, জানিয়েছে প্রশাসন। তবে গোটা দেশের সঙ্গে রাজ্যের নানা অংশেও যে সোমবার বিভিন্ন দল সড়ক ও রেল অবরোধের চেষ্টা চালাবে, তা বলাই বাহুল্য। সে সবের মাঝে যান চলাচল কতটা স্বাভাবিক থাকবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েই যাচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE