Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

গেরুয়া হানায় কম্পন তৃণমূলে, তৎপর বাম

শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকেই এ বার রাজ্যের বহু মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করেছেন বলে প্রাথমিক পর্যালোচনায় বলেছে সিপিএম ও কংগ্রেস।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০৩:১৮
Share: Save:

নির্বাচন বামেদের খালি হাতে ফিরিয়েছে। কিন্তু ফল ঘোষণার পর থেকেই বিজেপি যে ভাবে তৃণমূল ভাঙাতে উঠেপড়ে লেগেছে এবং রাজ্য প্রশাসনের মধ্যেও ‘আতঙ্কে’র ছাপ দেখা যাচ্ছে, তাতে রাজ্য জুড়ে ডামাডোলের আশঙ্কা করছে বাম শিবির। বিজেপি ও তৃণমূলের ‘খেয়োখেয়ির রাজনীতি’ এবং মেরুকরণের অঙ্কের বাইরে ভিন্ন বিকল্প গড়ে তুলতে এখন থেকেই তৎপর হতে চাইছে তারা। ভোটের সময়ে তাঁদের এলাকাভিত্তিক অভিজ্ঞতার কথা জেনে পরবর্তী কৌশল তৈরির জন্য পরাজিত প্রার্থীদেরও আলোচনায় ডাকতে পারেন বাম নেতৃত্ব।

শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থেকেই এ বার রাজ্যের বহু মানুষ বিজেপিকে সমর্থন করেছেন বলে প্রাথমিক পর্যালোচনায় বলেছে সিপিএম ও কংগ্রেস। কিন্তু ভোটে সুফল পাওয়ার পরেই তৃণমূলের কাউন্সিলর থেকে শুরু করে বিতর্কিত বিধায়ক পর্যন্ত নানা স্তরের মুখকে দলে টানছে বিজেপি। আবার ভোট-পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের উপরে ভরসা রাখতে গিয়ে চার দিনে নাগাড়ে পুলিশ ও সাধারণ প্রশাসনে রদবদল করেই চলেছে তৃণমূলের সরকার। এমতাবস্থায় বাম নেতারা চাইছেন, মানুষের স্বার্থের সঙ্গে জড়িত কিছু বিষয়কে সামনে রেখে ফের দ্রুত আন্দোলনের রাস্তায় নেমে পড়তে এবং প্রয়োজনে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিতে হলে তার আলোচনাও এখন থেকে শুরু করতে।

এক বাম নেতার কথায়, ‘‘বিজেপি সেই পথেই যাচ্ছে, যে পথে তৃণমূল গিয়েছিল! তৃণমূল বাম ও কংগ্রেসকে ভাঙিয়েছিল, বিজেপি এখন তৃণমূলকে ভাঙছে। অন্য দিকে। তৃণমূলকে দেখে মনে হচ্ছে না যে, তারা পরিস্থিতির মোকাবিলা শক্ত হাতে করতে পারবে। রাজ্যের অবস্থা তার ফলে আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখেই আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করতে হবে।’’ বাম নেতৃত্বের একাংশের মতে, কেন হারলাম— এর বিশ্লেষণ যখন তখন করা যেতেই পারে। কিন্তু ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখন থেকে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা জরুরি।

নির্বাচনী পর্যালোচনার জন্যই আগামী ৪ জুন রাজ্য কমিটির বৈঠক ডেকেছে সিপিএম। সেখান থেকে উঠে আসা রিপোর্ট নিয়ে ৭-৯ জুন দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যাবেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকের পরেই রাজ্য বামফ্রন্টের বৈঠক হতে পারে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের বক্তব্য, ‘‘বিজেপি এখন রক্তের স্বাদ পেয়ে দল ভাঙানো এবং মেরুকরণ, দু’টোতেই আরও মরিয়া হবে। তৃণমূল দুর্বল হবে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের দাবি-দাওয়া সামনে রেখে আমাদের দ্রুত সক্রিয় হতে হবে।’’ বাম নেতারা চাইছেন, পরের কোনও নির্বাচনের জন্য আবার ফেলে না রেখে কংগ্রেস-প্রশ্নে কী করণীয়, তা এখনই বামফ্রন্টের বৈঠকে নিষ্পত্তি করে নেওয়া হোক।

পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করার জন্য প্রদেশ কংগ্রেসেও কর্মসমিতির বৈঠক ডাকার তোড়জোড় চলছে। কংগ্রেস নেতারাও মনে করছেন, পরের বিধানসভা ভোটে বিজেপি ও তৃণমূলের বাইরে অন্য বিকল্প মানুষের সামনে রাখতে গেলে এখন থেকে আন্দোলনের ঐক্য গড়তেই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Left Front BJP CPIM CPM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE