মূল লক্ষ্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে সংগঠনকে চাঙ্গা রাখা। সেই লক্ষ্যেই আজ, বৃহস্পতিবার গ্রামবাংলার মানুষের দাবিদাওয়া নিয়ে কৃষক সংগঠনকে সামনে রেখে ‘নবান্ন চলো’ অভিযানে নামছে বামেরা। উদ্যোক্তা কৃষক সংগঠন হলেও আজকের কর্মসূচিতে সামিল হবে ১৭টি বাম দল ও তাদের নানা গণসংগঠন। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও আহ্বান জানিয়ে রেখেছেন, ‘‘যাঁরাই আক্রান্ত, তাঁরাই নবান্ন অভিযানে পা মেলান!’’ এই পরিস্থিতিতে লক্ষাধিক মানুষ নিয়ে আজ কলকাতা থেকে নবান্নমুখী মিছিলে শহরের রাস্তা ভাসিয়ে দেওয়াই বামেদের প্রাথমিক লক্ষ্য।
কলকাতায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ, খিদিরপুরের মো়ড় এবং হাওড়ার দিকে জিটি রোড-কাজিপাড়া মোড় ও সাঁতরাগাছি ফ্লাইওভার বাসস্ট্যান্ড— এই চারটি জায়গায় আজ জমায়েত হবেন বাম কর্মী-সমর্থকেরা। তার পরে মিছিল নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হবে নবান্নের দিকে। কলকাতা ও হাওড়ার পুলিশ কর্তৃপক্ষকে সে কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। বাম নেতৃত্বের বক্তব্য, পুলিশ কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না করলে তাঁরা শান্তিপূর্ণ ভাবেই নবান্নে দাবিপত্র দিতে চান। তবে এই কর্মসূচির জেরে সকাল ১১টার পর থেকেই যে শহরের বেশ কিছু অংশ অবরুদ্ধ হয়ে পড়তে পারে, তার ইঙ্গিত স্পষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বামেদের ‘নবান্ন চলো’র সময়ে নবান্নে থাকছেন না। উত্তরবঙ্গ থেকে আজ বিকালে তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা। সিপিএমের কৃষক সভার রাজ্য সভাপতি মদন ঘোষ বুধবার বলেছেন, ‘‘আমরা আগাম জানানো সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী ফিরবেন বৃহস্পতিবার বিকালে। ফলে, আমরা তাঁকে কোনও দাবিপত্র দিতে পারব না। অন্য কাউকেও দেব না। কারণ, দিয়ে লাভ নেই!’’
প্রথমে ঠিক ছিল, মোট পাঁচটি পয়েন্টে জমায়েত করে নবান্ন অভিযান হবে। কিন্তু উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি শহরে আসছেন বলে পুলিশের অনুরোধ মেনে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের সামনে কোনও জমায়েত করছে না বামেরা। মদনবাবুর দাবি, বামপন্থী কৃষক সংগঠনগুলিই লক্ষাধিক লোক আনবে। তার পরেও কলকাতার আশেপাশের দক্ষিণবঙ্গের জেলা এবং উত্তরবঙ্গ থেকে অল্প সংখ্যায় হলেও বিভিন্ন বাম গণ-সংগঠনের তরফে আরও মানুষ আসবেন। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে বিরোধী দলনেতা সূর্যবাবু-সহ বামফ্রন্টের নেতৃত্ব থাকবেন। খিদিরপুরে মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তী প্রমুখ, সাঁতরাগাছিতে হান্নান মোল্লা, জিটি রোডের মোড়ে মদনবাবু নিজে, সঙ্গে সিপিএমের হাওড়া জেলার সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার এবং বর্ধমানের অমল হালদারের থাকার কথা। মিছিলে যোগ দেওয়ার আগে বাম বিধায়কদের বিধানসভায় জমায়েত হওয়ার জন্যও হুইপ জারি করা হয়েছে।
মদনবাবুর বক্তব্য, ‘‘কৃষকদের দাবি নিয়ে গ্রামের মানুষের স্বার্থে আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে অভিযান করতে চাই। এর জন্য দীর্ঘদিন ধরে প্রচার চালানো হয়েছে।’’ সকাল ১১টা থেকে জমায়েত হয়ে অভিযান শুরু হওয়ার কথা দুপুর একটায়। কৃষকদের আত্মহত্যার প্রতিবাদ, ফসলের ন্যায্য দাম, সারের দাম কমানো, গ্রামের সকল মানুষের জন্য রেশন-সহ বিভিন্ন দাবিতে বামেদের এই নবান্ন অভিযান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy