Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
ঘরে বাইরে

শ্রীমান ৪২০

সম্ভবত ভারতীয় আইনের সব চাইতে পরিচিত ধারা। কিন্তু কখন কাজে লাগে? জানাচ্ছেন আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায়।সম্ভবত ভারতীয় আইনের সব চাইতে পরিচিত ধারা। কিন্তু কখন কাজে লাগে? জানাচ্ছেন আইনজীবী তমাল মুখোপাধ্যায়।

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৫ ০২:০২
Share: Save:

‘শ্রী ৪২০’ রাজ কপূর, ‘খোকা ৪২০’ দেব।

মাঝে ‘চাচি ৪২০’ কমল হাসান। কে না জানে ‘৪২০’ মানেই ঠগ, জোচ্চোর, জালিয়াত, লোক ঠকানোই যার কারবার? যে নেতা বছর-বছর মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নিয়ে যান, তাঁকে কি ৪২০ বলা চলে?

কে আসল ‘শ্রী ৪২০’?

ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ ধারার মোদ্দা কথা টাকাকড়ি-সম্পত্তি হাতানো বা দামি কিছু নষ্ট করার ছক কষে প্রতারণা করা। যেমন, অর্থলগ্নি সংস্থার নামে জনতাকে টুপি পরিয়ে টাকা তোলা। লোহাকে সোনা, বেগুনকে সেগুন, পুঁতিকে মোতি বলে বেচে দেওয়া। দলিল জাল, চেকে সই নকল, কেপমারি। দোষ প্রমাণ হলে সাত বছর পর্যন্ত শ্রীঘর পাকা।

বাড়িতে ৪২০

মানসিক বিকার বা এড্‌সের মতো মারাত্মক কিছু চেপে বিয়ে করা আলবত চারশো বিশি কারবার। ভুল বুঝিয়ে শ্বশুরের বাড়ি-গাড়ি লিখিয়ে নেওয়াও তা-ই। তা বলে বউকে পট্টি পরিয়ে বাজারের টাকা ঝেড়ে দিলে নিশ্চয়ই লোক ঠকানোর মামলা হবে না। পুলিশ তো পুলিশ, প্যাঁচাও হেসে ফেলবে!।

বইয়ের বাইরে

‘ফোট্টোয়েন্টি’ বলতে আইন যা বোঝে, আমজনতা বোঝে তার চেয়ে অনেকটা বেশি। আমরা ভাবি, প্রেমে ধোঁকা দিলে ৪২০, টিউশনের নোট দেব বলে না দিলে ৪২০, ভোটে জিতে নেতা কথা না রাখলেও ৪২০! কিন্তু এটা কথার কথা, এর কোনওটার জন্যই ৪২০ ধারায় মামলা করা যাবে না! টাকাকড়ির প্রসঙ্গ না থাকলে ৪২০ ধারা কথা বলে না।

ছদ্মবেশী

ছদ্মবেশ, বা নিজেকে অন্য কেউ বলে জাহির করে ঠকানো নির্ঘাত চারশো বিশি। তা বলে বহুরূপীকে কেউ ৪২০ বলে না। স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পরে আয়া সেজে ছেলেমেয়ের কাছে থাকতে চাওয়া বাবাকেও নয় (চাচি ৪২০, সঙ্গের ছবিতে)।

গৌতম মুনির রূপ ধরে বাড়িতে ঢুকে ঋষিপত্নী অহল্যাকে ভোগ করেন দেবরাজ ইন্দ্র। গুরুতর অপরাধ, সন্দেহ নেই। কিন্তু ৪২০ নয়। টাকাকড়ির ব্যাপার নেই কি না!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE