Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Mid-Day Meal

মিড-ডে মিলের সঙ্গে পাঠমালাও

স্কুল বন্ধ প্রায় পাঁচ মাস। কবে খুলবে, কেউ জানেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, অগস্ট মাসটা দেখে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

আর্যভট্ট খান
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২০ ০৪:৩৯
Share: Save:

করোনার জন্য স্কুল বন্ধ থাকায় খুদে পড়ুয়াদের জন্য কলম ধরলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ের সব থেকে প্রয়োজনীয় অংশগুলো লিখে ‘ওয়ার্কশিট’ বা পাঠমালা তৈরি করেছেন তাঁরা। মিড-ডে মিলের চাল-আলুর সঙ্গে সেই পাঠমালা দেওয়া হবে। অথবা স্কুল খুললে যদি এক মাসও সময় মেলে, ওই প্রয়োজনীয় অংশগুলো পড়িয়ে দেবেন শিক্ষকেরা।

স্কুল বন্ধ প্রায় পাঁচ মাস। কবে খুলবে, কেউ জানেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, অগস্ট মাসটা দেখে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিন্তু অতিমারির যা পরিস্থিতি, তাতে প্রশ্ন উঠছে, অগস্টের শেষেও স্কুল খোলা যাবে কি? বিভিন্ন স্কুলে অনলাইন ক্লাস হলেও প্রথম থেকে পঞ্চমে কার্যত কিছুই হচ্ছে না। তাই ওই সব শ্রেণির বিভিন্ন বিষয়ের যে-সব অংশ না-পড়লে পরের শ্রেণিতে সমস্যা হবে, তেমন কিছু অংশ নির্বাচন করে তাঁরা নিজেরা লিখে পাঠমালা তৈরি করছেন বলে জানাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকেরা।

কলিকাতা অনাথ আশ্রম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল মুখোপাধ্যায় জানান, দ্বিতীয় শ্রেণিতে যুক্তাক্ষর সেখানো হয়। খুদেরা সেটা না-শিখে কী ভাবে পরের শ্রেণিতে উঠবে? গণিতেরও কিছু অংশ আছে, যেগুলো না-পড়ে পরের শ্রেণিতে উঠে গেলে কোনও অঙ্কই করতে পারবে না। অতি জরুরি পাঠ না-নিয়েই পরের শ্রেণিতে উঠলে ভীষণ সমস্যা হবে। ‘‘তাই আমরা কয়েক জন শিক্ষক মিলে জরুরি অংশগুলি লিখে ওয়ার্কশিট তৈরি করে ফোটোকপি বানিয়ে রাখছি। এটাকে প্রতিটি বিষয়ের সংক্ষিপ্তসার বলা যেতে পারে। স্কুল খোলার পরে যদি এক মাসও সময় মেলে, ৩০টি ক্লাসে তা পড়িয়ে দেব,’’ বললেন উৎপলবাবু।

এখন মিড-ডে মিলের সঙ্গে ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ বা ঘরের পড়া দেওয়া হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, বিষয়টাই যদি না-জানে, তা হলে খুদেরা সেই সব টাস্ক করবে কী ভাবে? পাঠমালা তৈরি করছেন শিশু শিক্ষা নিকেতনের শিক্ষক দীপক রায়ও। তিনি বলেন, ‘‘সরকারি প্রাথমিক স্কুলের বহু পড়ুয়া আর্থিক দিক থেকে অনেক পিছিয়ে। তাদের মা-বাবাও পড়া দেখিয়ে দিতে পারেন না। স্কুল বন্ধ থাকায় সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওরাই। পড়াশোনার সঙ্গে অনেকেরই কোনও সম্পর্ক নেই। তাই আমরা যতটা পারছি, সব ক্লাসের প্রতিটি বিষয়ের সব থেকে প্রয়োজনীয় অংশগুলো ওদের জন্য লিখে রাখছি।’’ শিশু শিক্ষা সদন নামে একটি স্কুলের শিক্ষিকা বন্দনা ভট্টাচার্য ঘটক বলেন, ‘‘যে-সব জায়গা পড়ুয়ারা বুঝতে পারবে না, সুযোগ পেলে আমরা তা বুঝিয়ে দেব। প্রশ্নও করব।’’ উৎপলবাবু জানান, আপাতত ন’জন শিক্ষক এই কাজ করছেন। আরও কিছু শিক্ষক যোগ দিচ্ছেন শীঘ্রই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE