Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Higher Secondary Exam 2020

পাশে দাঁড়াল প্রশাসন, উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন সঞ্জয়ের

সঞ্জয়ের সেই লড়াইয়ের কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়।

ফল বেরোনোর পরের দিনও জুতো সেলাই করছেন সঞ্জয়।—ফাইল চিত্র।

ফল বেরোনোর পরের দিনও জুতো সেলাই করছেন সঞ্জয়।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ০৫:২৯
Share: Save:

লকডাউনে মাঝপথে বন্ধ হয়েছিল পরীক্ষা। সংসারের খরচের পাশাপাশি কলেজে ভর্তির টাকা জোগাড়ে জাতীয় সড়কের পাশে জুতো সেলাইয়ের সরঞ্জাম নিয়ে বসতেন তিনি। লকডাউনে রোজগার হত না বললেই চলে। তবু ছেঁড়া জুতোর অপেক্ষায় দিন কাটত মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের কনুয়া হাইস্কুলের ফার্স্টবয় সঞ্জয় রবিদাসের।

সঞ্জয়ের সেই লড়াইয়ের কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। পরীক্ষার ফলে দেখা গেল, সঞ্জয় ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। ফের তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশাসন। তাঁকে সংবর্ধনাও দিয়েছেন অনেকেই। শুক্রবার ফল বার হওয়ার পরের দিনই তাঁর সঙ্গে দেখা করে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র। জেলাশাসক তাঁর সঙ্গে দেখা করে আশ্বাস দেওয়ায় উচ্ছ্বসিত সঞ্জয় ও তাঁর পরিজনেরা। জেলাশাসক বলেন, ‘‘ওর পড়াশোনার জন্য সব সাহায্য করা হবে। ওদের আরও কিছু সমস্যা রয়েছে। সেগুলিও মেটানোর চেষ্টা করা হবে।’’ চাঁচলের বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওর পড়াশোনায় কোনও সমস্যা যাতে না হয় প্রশাসন তা দেখবে।’’

চাঁচলের কনুয়ার বাসিন্দা সঞ্জয়ের বাবা যখন মারা যান তখন তাঁর বয়স দেড় বছর। অন্যের জমির ধান কেটে, দিনমজুরি করে সংসারের হাল ধরেন মা কল্যাণী। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই মায়ের কষ্ট দেখে জুতো সেলাই শুরু করে সঞ্জয় ও দাদা সাগর। দাদা সাগর মাধ্যমিক পাশ করার পরে ভিন্‌ রাজ্যে শ্রমিকের কাজে চলে যান। এখন অবশ্য লকডাউনে কর্মহীন হয়ে বাড়িতেই রয়েছেন তিনি।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সঞ্জয়ের ফলের দিকে তারা নজর রেখেছিল। তাই ফল বার হতেই জেলাশাসকের নির্দেশে তাঁকে মালদহে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেন চাঁচলের বিডিও। সঞ্জয় কোথায় ভর্তি হতে চান, তা নিয়ে জেলাশাসক খোঁজ নেন। এ ছাড়া সঞ্জয়দের একটিই মাত্র ভাঙাচোরা ঘর। আবাস যোজনায় একটি ঘর ও দাদা সাগরের একটি কাজের ব্যবস্থা হলে ভাল হয়—জেলাশাসককে এমন আবেদনও জানিয়েছেন সঞ্জয়।

সঞ্জয় বলেন, ‘‘এ ভাবে জেলাশাসক নিজে কথা বলবেন ভাবতেই পারছি না।’’ পরিবারের কিছু সমস্যার কথা জেলাশাসককে জানিয়েছেন তিনি। উনি সব শুনে আশ্বস্ত করেছেন। সঞ্জয়ের কথায়, ‘‘জীবনে বড় হতেই হবে। এখন কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, কবে পড়াশোনা শুরু হবে, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Higher Secondary Exam 2020 Chanchal Sanjay Ravidas
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE