Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

শবরদের পাতে আলুপোস্ত-ডিম, হঠাৎ এই আয়োজন কেন?

লালগড়ের বিডিও মহম্মদ ফৈজান আসরাফ আনসারি বলেন, “পূর্ণাপাণির জঙ্গলখাসে শবরদের দু’বেলা রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত মেডিক্যাল টিম ওদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে।’’ জঙ্গলমহলে খাদ্যের অভাব নেই, দাবি করেছে প্রশাসন।

লালগড়ে মৃত পল্টু শবরের স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

লালগড়ে মৃত পল্টু শবরের স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
লালগড় শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৫৯
Share: Save:

শুকনো ভাতের সঙ্গে শুধু আলুসেদ্ধ নয়। বুধবার দুপুরে শবরদের পাতে পড়ল ডাল, আলুপোস্ত আর ডিম! রাতে আলু-কুমড়োর তরকারি, ডাল। একই সঙ্গে শুরু হল বেআইনি মদের ভাটির বিরুদ্ধে অভিযান।

লালগড়ের বিডিও মহম্মদ ফৈজান আসরাফ আনসারি বলেন, “পূর্ণাপাণির জঙ্গলখাসে শবরদের দু’বেলা রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। নিয়মিত মেডিক্যাল টিম ওদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে।’’ জঙ্গলমহলে খাদ্যের অভাব নেই, দাবি করেছে প্রশাসন। মেদিনীপুর লোধা-শবর কল্যাণ সমিতির সম্পাদক বলাইচন্দ্র নায়েকের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘যদি খাদ্যের অভাব না-ই থাকে, তা হলে হঠাৎ এই আয়োজন কেন?’’ জেলাশাসক আয়েষা রানির জবাব, ‘‘কোথাও মানুষের সাময়িক সমস্যা হলে প্রশাসন পাশে দাঁড়ায়। এ ক্ষেত্রে তাই করা হচ্ছে।’’

মঙ্গলবার রাত থেকেই ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড় ব্লকের পূর্ণাপাণির এই গ্রামে শবর পরিবারগুলিতে বিলি করা হয়েছে খাবার। এ দিন সকালে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা ভাত, ডাল, আলুপোস্ত রান্না করেন। শবররা সেই খাবার বাড়িতে নিয়ে যান। যাঁরা চেয়েছেন, তাঁদের কাঁচা ডিমও দেওয়া হয়। দুপুরে খাবার নিয়ে এসে তিন মেয়েকে খাওয়াচ্ছিলেন মৃত পল্টু শবরের স্ত্রী ময়না। নিজে অবশ্য খেলেন না। খাবেন কখন? ময়নার জবাব, ‘‘মন ভাল নেই। পরে খাব।’’

আরও পড়ুন: সরকারি চালে পেট ভরে না, নেই চালের পলিথিনও

গত মঙ্গলবার ডিএম মৃতদের বাড়ি যাওয়ার পরে শবর পরিবারগুলিকে ত্রাণের চাল ও জামাকাপড় পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগ, সেই চালে ছিল পোকা। এ দিন মৃতদের পরিবারগুলিকে দশ কিলোগ্রাম করে ভাল চাল দেওয়া হয়। বিলি করা হয় বিস্কুটের প্যাকেট। এ দিন জঙ্গলখাসে যান জেলা পরিষদের সভাধিপতি, লালগড়ের বিডিও-সহ অন্যেরা।

আরও পড়ুন: ‘অনাহারে মারা যাচ্ছে, কেউ বলতে পারবে না’

অভিযোগ, পূর্ণাপাণি ও সংলগ্ন এলাকায় চলছে বহু বেআইনি মদের ভাটি। এ দিন ১৫টি ভাটি ভেঙেছে আবগারি দফতর। ঝাড়গ্রাম জেলার আবগারি সুপার মিলন বিশ্বাস জানান, ১০৫ লিটার মদ ও ৯৮০ লিটার মদ তৈরির উপকরণ নষ্ট করা হয়েছে। তবে কাউকে ধরা যায়নি। এ দিন দেখা গেল বেশ কিছু বাড়ির সামনে সিভিক ভলান্টিয়ার। আবগারি দফতর সূত্রে দাবি, শবরদের গ্রামে কারা মদ বিক্রি করছে, তার উপরে নজর রাখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE