প্রতীকী ছবি।
ভোট প্রচারে ফেসবুক ‘লাইভ’-এর পরে এ বার প্রজেক্টরের সাহায্য স্বল্প দৈর্ঘ্যের ফিল্ম দেখানোর কৌশল নিল বীরভূম জেলা সিপিএমের সোশ্যাল মিডিয়া টিম। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে সিউড়ি শহরের ১২, ১০ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রজেক্টর ও স্ক্রিন ব্যবহার করে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি দেখানো হয়েছে।
১৭ মিনিটের এই তথ্যচিত্রটি যাঁরা তৈরি করেছেন, জেলা সিপিএমের সোশ্যাল মিডিয়া টিমের সদস্যদের দাবি, কেন্দ্রে মোদী আর রাজ্যে মমতার সরকার কেন ‘এক’, সেটার বিপক্ষে বামপন্থীরা কেমন আন্দোলন গড়ে তুলেছেন— ভোটাদের সামনে তার তুলনামূলক বিচার তুলে ধরাই টাইটেলবিহীন স্বল্প দৈর্ঘ্যের ফিল্মটির উপজীব্য। সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ এবং ছাত্র সংগঠন এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক মতিউর রহমান ও রুদ্রদেব বর্মন, যাঁরা বামেদের
সোশ্যাল মিডিয়া দলের দায়িত্বেও রয়েছেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, কেন্দ্রের নোটবন্দি, কর্মসংস্থানের অভাব, জিএসটি এবং রাজ্যের টেট-এসএসসি কেলেঙ্কারি, সারদা-নারদ কেলেঙ্কারির মতো বিষয়গুলিকে এই তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে।
ওই দু’জনের কথায়, ‘‘আমরা চাইছি, ভোট দেওয়ার আগে মানুষ যেন কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের জনবিরোধী নীতিগুলির কথা মাথায় রাখেন। এর সঙ্গে ওই ছবিতে রয়েছে দুই সরকারের নীতির বিরুদ্ধে বামপন্থীদের আন্দোলন ও বিভিন্ন কর্মসূচি।’’ দুই নেতার দাবি, স্ট্রিট কর্নার বা জনসভা থেকে বাম নেতৃত্ব সব সময়েই এই বিষগুলি নিয়ে সরব হয়েছেন। মতিউর, রুদ্রদেব বলছেন, ‘‘আমাদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজ বা বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে মানুষের কাছে প্রতিনিয়তই বিষয়গুলিকে সামনে রাখা হচ্ছে। কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির প্রতি আসক্ত তরুণ প্রজন্মের পাশাপাশি সব শ্রেণির মানুষের কাছে আমাদের বক্তব্য পৌঁছে দিতেই ফিল্ম বানানোর পরিকল্পনা।’’ ছবির শেষে থাকছে বীরভূম ও বোলপুর কেন্দ্রের দুই সিপিএম প্রার্থীর বার্তা।
ভোট প্রচারে সোশ্যাল মিডিয়ার ভরপুর ব্যবহারে কোনও রাজনৈতিক দলই পিছিয়ে নেই। ফেসবুক ‘লাইভ’-এ প্রার্থী তো আছেন-ই। সোশ্যাল মিডিয়ার রমরমা বাজারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ভোটপ্রচারে ‘লাইভ’-এ থেকেছে জনসভা, নেতাদের বক্তব্য থেকে দলবদলও। হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম— প্রচারে বাদ যাচ্ছে না কিছুই।
সব রাজনৈতিক দলেরই বক্তব্য, মানুষের কাছে নিজের কথা বলার সহজতম মাধ্যম এখন সোশ্যাল মিডিয়া। জেন-ওয়াইয়ের কাছে তা আকর্ষণীয়ও বটে। বিশেষত, জেলায় যখন নতুন প্রজন্মের ভোটার বেড়েছে অনেকটাই।
তবে শুধুই নতুন প্রজন্ম সোশ্যাল মিডিয়ায় আচ্ছন্ন, এমন ভাবাটা ভুল হবে। এখন মাঝবয়সি থেকে বয়স্ক— প্রায় সবার হাতেই স্মার্টফোন। রয়েছে নানা সোশ্যাল অ্যাকাউন্টও। প্রার্থী কোথায় প্রচারে যাচ্ছেন, কী বলছেন তার ছবি ভিডিয়ো আপলোড করা হলে সমর্থকেরা মুহূর্তে ছড়িয়ে দেন অন্তর্জালে।
দিন কয়েক আগে সিপিএমের দুই প্রার্থীর ভোট প্রচারের ফেসবুক লাইভ করেছিল সোশ্যাল মিডিয়া টিম। এ বার তার সঙ্গে জুড়ল পাড়ায়
পাড়ায় ফিল্ম দেখানো। তাদের দাবি, নির্বাচনী প্রচারে এই তথ্যচিত্র প্রভাব ফেলবে।
বিজেপি-তৃণমূলের অবশ্য কটাক্ষ, বীরভূমে ভোট ২৯ তারিখ। ভোটে হালে পানি পাবে না বুঝে সিপিএম এখন শেষবেলায় তথ্যচিত্র দেখাতে শুরু করেছে। যাদের সঙ্গে মানুষই নেই, সেই দলের তরফে ফেসবুক লাইভ-ই হোক বা তথ্যচিত্র, তাতে লাভ কিছু হবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy