Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

‘সব শান্ত দেখে বেরিয়ে পড়লাম শহর ঘুরতে’

রাতটা ছিলেন বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের ভোটের সরঞ্জাম বিতরণ কেন্দ্রে।

ভোটের কাজের অবসরে বিষ্ণুপুরের রাসমঞ্চের সামনে সত্যব্রত হালদার (বাঁ দিকে) এবং গুরুপদ রুইদাস। নিজস্ব চিত্র

ভোটের কাজের অবসরে বিষ্ণুপুরের রাসমঞ্চের সামনে সত্যব্রত হালদার (বাঁ দিকে) এবং গুরুপদ রুইদাস। নিজস্ব চিত্র

শুভ্র মিত্র
বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০১৯ ০৩:৩৫
Share: Save:

ভোটের ‘ডিউটি’তে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে যেতে হবে শুনে মনটা নেচে উঠেছিল কলকাতার গড়িয়ার মহামায়াতলার যুবক সত্যব্রত হালদারের। ভেবেছিলেন, যদি হয়ে ঘুরে দেখা যায় মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুর। কিন্তু বুথে ভোট করাতে গিয়ে কি আর বেড়ানোর সুযোগ মিলবে— এই সংশয়ে কিছুটা দমেও গিয়েছিলেন। শনিবার দুপুরে বিষ্ণুপুরে পৌঁছে ওই স্কুল শিক্ষক জানতে পারেন, তাঁকে ভোটের দায়িত্বে যেতে হবে না। ‘রিজার্ভ’ হিসাবে রাখা হবে। তখনই ঠিক করে ফেলেন, সময় পেলে বিষ্ণুপুরের পোড়ামাটির মন্দিরগুলি ঘুরে ফেলবেন। সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যান বাঁকুড়া জেলারই সারেঙ্গার একটি স্কুলের শিক্ষাকর্মী প্রৌঢ় গুরুপদ রুইদাসকে। রবিবার সকালে জুটিতে বিষ্ণুপুর ঘুরতে বেড়িয়েও পড়েন।

রাতটা ছিলেন বিষ্ণুপুর হাইস্কুলের ভোটের সরঞ্জাম বিতরণ কেন্দ্রে। সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ বেরোন বাইরে টিফিন করতে। সত্যব্রতর কথায়, ‘‘বাইরে বেরিয়ে দেখি, রাস্তাঘাট সুনসান। কোথাও কোনও গোলমাল নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের শিবির পাশাপাশি রয়েছে। সবাই মিলেমিশে মুড়ি, তেলেভাজা ভাগ করে খাচ্ছেন। গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে হয়নি। নির্ভয়ে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়ি।’’

হাইস্কুল মোড়ের সামনে দিয়ে সেই সময় টোটো নিয়ে যাচ্ছিলেন বাপি গোস্বামী। তাঁকে থামিয়ে সত্যব্রত ও গুরুপদ দর কষাকষি করে ৩০০ টাকা ভাড়া ঠিক করেন। বাপি বলেন, ‘‘এমনিতেই রাস্তায় লোক নেই। যাত্রী আদৌ পাব কি না, সংশয় ছিল। তবুও কপাল ঠুকে বেরিয়ে পড়েছিলাম। এ সময় ট্যুরিস্ট নেই বললেই চলে। তাই ওঁদের পেয়ে ভালই হল। আমিই তাঁদের বলে দিয়েছি, চিন্তা নেই। সব ঘুরিয়ে দেখাব। ইতিহাসও বলে দেব।’’ সত্যব্রতরা বাপিকে বলে দেন, যেখানেই ঘোরান দুপুর ১২টার মধ্যে হাইস্কুলে ফিরিয়ে আনতে হবে। সেই সময় তাঁদের রিপোর্ট করতে হবে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

একে একে রাসমঞ্চ, শ্যামরায় মন্দির, জোড়বাংলো, মদনমনোহন মন্দির, গড়দরজা, লালজিউ মন্দির ঘুরে দেখেন তাঁরা। লালজিউ মন্দির চত্বরের পার্কে বসে সত্যব্রতকে দেখিয়ে গুরুপদ বলেন, ‘‘কলকাতার ছেলে, বিষ্ণুপুর দেখার ইচ্ছা হয়েছে। বললাম, ‘চলুন। আমারও অনেকদিন দেখা হয়নি। দুই দাদা-ভাইয়ে একটু ঘুরে নিই’।’’ পাশ থেকে সত্যব্রত বলেন, ‘‘রথ দেখা, কলা বেচা— দু’টোই হল। দোকান খোলা পেলে বিষ্ণুপুরের ঘোড়াও কিনব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE