শিশুপাল সহিস
বাড়ি থেকে বুধবার বেরিয়েছিলেন বিজেপির হয়ে দেওয়াল লিখতে। বৃহস্পতিবার সকালে পুরুলিয়ার আড়শায় বিজেপির যুব মোর্চার কর্মী শিশুপাল সহিসের (২৩) ঝুলন্ত দেহ মিলল গাছে। গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের পরে, জেলার বলরামপুর থানা এলাকায় বিজেপির দুই কর্মী—ত্রিলোচন মাহাতো ও দুলাল কুমারের ঝুলন্ত দেহ মেলে। সে বার ‘তৃণমূল-আশ্রিত’ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছিল বিজেপি। এ বারও পরিবার এবং বিজেপির মৌখিক অভিযোগ, শিশুপালকে ‘খুনের’ পিছনে রয়েছে তৃণমূল।
অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর দাবি, ‘‘বিজেপি বরাবরই অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাতে রাজনৈতিক রং দেয়। পুলিশ তদন্ত করলেই সত্য সামনে আসবে।’’
আড়শার সেনাবনা গ্রামের এই ঘটনা খুন না আত্মহত্যা—তা সরকারি ভাবে জানা যায়নি। তবে জেলার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া বলেন, ‘‘মৃতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই।’’ তিনি জানান, মৃত্যুর কারণ জানতে তিন জন চিকিৎসকের উপস্থিতিতে ময়না-তদন্ত হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়ার ‘ভিডিয়োগ্রাফি’ও করা হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট মেলার আগে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) সিদ্ধিনাথ গুপ্ত জানান, অপমৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।
আড়শার শিরকাবাদ পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য যাদব সহিসের সেজ ছেলে শিশুপাল কলকাতায় নির্মাণ- শ্রমিকের কাজ করতেন। দিন দশেক আগে গ্রামে ফিরে যোগ দেন প্রচারের কাজে। শিরকাবাদ পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। এ দিন বাবা-ছেলের পুরুলিয়া আসনে বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর মনোনয়নের মিছিলে যোগ দিতে পুরুলিয়া শহরে যাওয়ার কথা ছিল।
যাদববাবু জানান, শিশুপাল বুধবার সকালে বাড়িতে বলে গিয়েছিলেন বিজেপির হয়ে এলাকায় দেওয়াল লিখতে যাচ্ছেন। বিকেলে যাদববাবুর সঙ্গে তাঁর এক প্রস্ত মোবাইলে কথাও হয়। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে তাঁর ফোনটি ‘বন্ধ’ থাকায় সন্দেহ হয় বাড়ির লোকের। এলাকায় খোঁজ করে তাঁর হদিস মেলেনি।
এ দিন সকালে খবর আসে, বাড়ি থেকে পৌনে দু’কিলোমিটার দূরে, ফাঁকা জায়গায় একটি গাছে শিশুপালের গলায় দড়ির ফাঁস দেওয়া দেহ ঝুলছে। যাদববাবুর অভিযোগ, ‘‘ছেলে বিজেপির হয়ে ভোটে সক্রিয় ভাবে নেমেছিল বলেই তৃণমূলের লোকেরা ওকে খুন করল। দোষীদের শাস্তি চাই।’’
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস, তৃণমূল-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ত্রিলোচন, দুলালের মতো শিশুপালকেও মেরেছে। আমরা সিবিআই-তদন্ত দাবি করছি।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী জানান, আজ, শুক্রবার থানায় অভিযোগ জানানো হবে।
শান্তিরামবাবুর পাল্টা দাবি, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে জেলায় কিছুটা সাফল্য পেলেও এখন পায়ের তলার মাটি নেই বিজেপির। তাই ওরা মৃত্যু নিয়ে রাজনীতিতে নেমেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy