মেজাজে: নকুলদানায় মজে অনুব্রত। আমোদপুরে তৃণমূলের দলীয় দফতরে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
ভোটের দিন তাঁকে নজরবন্দি রাখার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ৩ জন ডব্লিউবিসিএস অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে নজরবন্দি করে রাখার। কিন্তু ভোট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে বীরভূমের সেই অনুব্রত মণ্ডল অবলীলায় জানিয়ে দিলেন, ‘‘নজরবন্দি করলে আমার বয়ে গিয়েছে। ও সব করে লাভ নেই। আমি আমার কাজ করব। জ্বর, সর্দি-কাশি, সব ট্যাবলেটই রয়েছে। ওষুধ তো দিয়েই দিয়েছি!’’
রবিবার সারা দিনই ভোট-প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি। দিনভর জেলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়ে বেড়িয়েছেন। সকাল সাড়ে ১১ টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। ফিরেছেন রাত ন’টা নাগাদ। তিনি বাড়ি ঢোকার পরেই নির্বাচন কমিশন তাঁর বাড়ির সামনে একটি টিম মোতায়েন করে। এক জন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সেই দলে আছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর চার জওয়ান, এক জন ভিডিয়োগ্রাফার এবং এক জন পুলিশ কর্মী। রাতে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে নিজের মোবাইল ফোনও তুলে দিয়েছেন অনুব্রত। কমিশন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল ৭টা পর্যন্ত তাঁর উপর নজরদারি বহাল থাকবে।
আর অনুব্রতের অভিযোগ, ‘‘বিজেপির কথায় কমিশন সব করছে।’’ এ দিন মহম্মদবাজারের দলীয় বৈঠকে অনুব্রতের ছায়াসঙ্গী অভিজিৎ সিংহ কর্মীদের বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের কোনও সিদ্ধান্তে ভয় পাবেন না। বিভ্রান্ত হবেন না।’’ আর জেলা সভাপতির মন্তব্য, ‘‘তোমরা তোমাদের স্তর থেকে খবর নাও।’’ তখনও আনুষ্ঠানিক ভাবে নজরদারির বিষয়টি তাঁকে জানায়নি কমিশন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে কর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন অনুব্রত। নানুর, লাভপুর, আহমদপুর, সাঁইথিয়া, কোটাসুর, মুরারই, নলহাটি, মল্লারপুর, মহম্মদবাজার এবং সিউড়িতে যান। সিপিএম জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদার দাবি, ‘‘পায়ের তলার জমি সরেছে। তাই এখন দৌড়ঝাঁপ করছেন।’’ সে কথা উড়িয়ে অনুব্রত বলেন, ‘‘ভোটের দিন আমি বেরোই না। এগুলি রুটিন বৈঠক।’’ সর্বত্রই মজুত নকুলদানা। কেন? জেলা সভাপতির প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ বারের ভোট তো নকুলদানারই!’’ বৈঠকের ফাঁকে তারাপীঠের মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে আশীর্বাদও চেয়ে নেন তিনি। সম্প্রতি মোদী বলেছিলেন, মমতা তাঁকে কুর্তা-মিষ্টি পাঠান। সে প্রসঙ্গ উঠতেই বললেন, ‘‘ননসেন্স, পরম্পরা জানেন না। পুজোর সময়, দিওয়ালির সময় শত্রুদেরও আমরা মিষ্টি পাঠাই।’’ জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘হারের ভয়ে উল্টোপাল্টা বকছেন ওঁরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy