প্রতীকী ছবি।
তিনি দমে যাওয়ার লোক নন। তালের রসে (তাড়ি) এ বার ‘যুদ্ধ’ জিততে চান আরামবাগের যুব তৃণমূল নেতা মির চঞ্চল!
চঞ্চল নিজে ওই রসের রসিক নন। আয়োজন তিনি করতে চাইছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের জন্য। যাতে জওয়ানরা সন্তুষ্ট হন! যাতে ভোটের দিন তিনি বুথের ধারে-কাছে যেতে পারেন! যাতে আর ‘খালি হাতে’ ফিরতে না-হয়!
‘‘২০১৬-র বিধানসভা ভোটের আগের রাতে জওয়ানদের খাবারের আপ্যায়নে ১২০০ টাকার বেশি খরচ করেছি, জানেন। কিন্তু ভোটের সকালে বুথের কাছে যেতেই ওঁরা বলে কিনা, ভাগ ইঁয়াসে! দল আমার বুথে হেরে গেল। পঞ্চায়েত ভোটে দাঁড়ানোর কথা লজ্জায় দলকে বলতে পারিনি,’’ আফসোস যায় না চঞ্চলের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আরামবাগের নৈসারইয়ের ৪ নম্বর বুথে দীর্ঘদিন ধরে দলের পক্ষে ভোট করানোর দায়িত্ব পালন করছেন মির চঞ্চল। গত বিধানসভা ভোটে আরামবাগ বিধাননভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা জিতলেও ওই বুথে ৮০ ভোটে হেরে যান সিপিএম প্রার্থী অসিত মালিকের কাছে। দলীয় কর্মীরা চঞ্চলকেই দুষেছিলেন।
তবু উৎসাহ হারাননি চঞ্চল। নিজের প্রতিপত্তি প্রমাণ করতে তিনি মরিয়া। এ বার তালের রসে কি চিঁড়ে ভিজবে? চঞ্চল আশাবাদী, ‘‘গতবারই জওয়ানরা তালের রসের খোঁজ করেছিলেন। দিতে পারিনি। এ বার সেই ব্যবস্থাই করছি। ওঁদের আপ্যায়নে কোনও ত্রুটি রাখব না।’’
ব্যবস্থা বলে ব্যবস্থা! নৈসরাইয়ের প্রায় ৩০টি তাল গাছ বাছা হয়েছে। রস সংগ্রহে পারদর্শী গ্রামবাসীরা চঞ্চলের নির্দেশমতো ওই গাছ থেকে আপাতত রস বের করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। কয়েক দিন বাদেই হাঁড়ি ঝুলিয়ে রস সংগ্রহ করা যাবে বলে জানান চঞ্চল। তিনি বলেন, ‘‘এখন লোকগুলো নিজেদের মতো ব্যবসা করলে করুক। শুধু ভোটের আগের দিন আমার সমস্ত রস চাই বলে চুক্তি করে নিয়েছি।”
আরামবাগে ভোট ৬ মে। ওই লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের তরফে ভোটের কাজ তদারক করছেন পুরপ্রধান স্বপন নন্দী। তিনি অবশ্য দলের যুবনেতার ওই উদ্যোগের কথা জানেন না বলে দাবি করেছেন। স্বপন বলেন, ‘‘বাহিনীর জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা তো বিজেপিই করছে।’’
ভোট-বাজারে অনুব্রত মণ্ডলের ‘নকুলদানা’ প্রসঙ্গ বহুচর্চিত। তাই মির চঞ্চলের তালের রসে নতুন কিছু দেখছেন না সিপিএমের আরামবাগ এরিয়া সম্পাদক পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাজ্য জুড়েই তৃণমূল বাহিনী এবং কমিশনকে আপ্যায়নের কথা বলছে। কেউ বলছে নকুলদানা খাওয়াবে, কেউ তালের তাড়ি!” বিজেপির আরামবাগ জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলের এই ছক বানচাল করতে কমিশনের কাছে দাবি করেছি, ভোটে নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর খাবার-সহ অন্যান্য পরিচর্যার যেন ব্যবস্থা হয়।”
কিন্তু এ বারও যদি জওয়ানরা ভাগিয়ে দেন? ‘‘পরের বিধানসভা ভোটে চেষ্টা করব,’’ চঞ্চল নাছোড়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy