এ রাজ্যে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) ভূমিকা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুলল কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। প্রতিনিধিদল নিয়ে সোমবার সিইও-র কাছে অভিযোগ জানিয়ে বেরিয়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের মন্তব্য, ‘‘এমন মূক ও বধির নির্বাচন আধিকারিক আগে দেখিনি!’’
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধর্নায় সঙ্গে থাকা রাজ্য পুলিশের ডিজি, তৎকালীন পুলিশ কমিশনার, বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার এবং তৎকালীন এডিজি (আইনশৃঙ্খলা)-কে ভোটের কাজে রাখা নিয়েই সিইও আরিজ আফতাবের বিরুদ্ধে তোপ দাগছে বিজেপি। ধর্নায় মুখ্যমন্ত্রীর পাশে ওই পুলিশ আধিকারিকদের ছবি দেখিয়ে মুকুল এ দিন বলেন, ‘‘এঁদের দিয়ে কী করে নিরপেক্ষ ভোট করানো হবে! এঁরা কী করে নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন! বরং, এ ভাবে ভোট না করিয়ে সার্টিফিকেট লিখে দিন। যে ভাবে ভোট হচ্ছে, তা সিপিএম আমলেও হতো না। এ ভাবে ভোট না করানোই ভাল।’’
কমিশন এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তৃণমূলও। কমিশনের কাছে এ দিনই তারা অভিযোগ করেছে, দক্ষিণ মালদহের বিজেপি প্রার্থী শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীর স্বামী আর কে মিত্র কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে উপদেষ্টা হিসেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ন্ত্রণের অন্যতম দায়িত্বে আছেন। তাঁকে দায়িত্বে রেখে ‘নিরপেক্ষ’ ভোট হতে পারে না। রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ অবশ্য ভোটের কাজে নেই। সেই প্রশ্নের জবাবে মুকুলের বক্তব্য, ‘‘তাঁর নিয়ন্ত্রণে কী থানা নেই! তিনি কী বলছেন না, কী ভাবে ভোট হওয়া উচিত? আমার কথা নয়। রাজ্যের ভোটারদের ধারণা, সিইও ‘অফিস’ ম্যানেজ হয়ে গিয়েছে।’’ বিজেপি নেতার দাবি, এমন বহু পুলিশ অফিসার আছেন, যাঁরা অতীতে নির্বাচনের প্রক্রিয়া বাদ গিয়েছিলেন, তাঁদের সরিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু সে সব নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখানো হচ্ছে। তাঁর অভিযোগ, হুগলির ধনেখালিতে দেওয়াল লিখতে দেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু রির্টানিং অফিসার কিছুই বলছেন না। সিইও-র কাছে এ সবই তাঁরা জানিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সিইও সঞ্জয় বসু অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা লিখিত কোনও অভিযোগ পাইনি। ক্যামেরায় দেখেছি।’’ তাঁরা কি কোনও রিপোর্ট তলব বা পদক্ষেপ করবেন? সেই প্রশ্নের জবাবে সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘পরে দেখব।’’ হুগলির বিষয়ে একটি মৌখিক অভিযোগ এসেছে বলে কমিশন সূত্রের বক্তব্য।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বামফ্রন্টের একটি প্রতিনিধিদলও এ দিন সিইও-র কাছে দরবার করতে গিয়েছিল। সিইও-র ভূমিকা নিয়ে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেবের বক্তব্য, ‘‘সিইও-র দফতরকে আলাদা করে দেখার কিছু নেই। আমরা নির্বাচন কমিশনে যে সব অভিযোগ করেছিলাম, তার জবাব পাইনি। সামগ্রিক ভাবে কমিশন দায়িত্ব পালন করছে না।’’ রবীনবাবুর আরও সংযোজন, ‘‘সিইও-র দফতর কখনও কখনও অতি সক্রিয় হচ্ছে। আবার কখনও ঠিকমতো কাজ করছে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy