Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

রসগোল্লায় না, বরাত গেল লাড্ডুর

পাহারায় কোনও ত্রুটি রাখতে চান না তৃণমূল নেতারা। স্ট্রংরুমের কাছে জটলা হতে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী, তাই রাতপাহারার কৌশলও বদলে ফেলল তৃণমূল।

প্রস্তুতি: তুঙ্গে গণনাকেন্দ্রের প্রস্তুতি। জলপাইগুড়ি। নিজস্ব চিত্র

প্রস্তুতি: তুঙ্গে গণনাকেন্দ্রের প্রস্তুতি। জলপাইগুড়ি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৯ ১১:৫৬
Share: Save:

বিজেপি বাঙালির সংস্কৃতি ভুলিয়ে দিয়ে জোর করে উত্তর ভারতের সংস্কৃতি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলল তৃণমূল। যদিও বিজেপি সেই দাবি অস্বীকার করেছে।

বিজেপির অন্দরের খবর, দল লোকসভা ভোটে জিতবে ধরে নিয়ে স্থানীয় স্তরে লাড্ডু মজুত রাখার নির্দেশ এসেছে দলের উপর মহল থেকে। প্রতিটি মণ্ডল তথা বুথ কমিটিকে অন্তত ১০০টি করে লাড্ডু কিনে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। প্রয়োজন হলে আরও বেশি লাড্ডু জোগাড়ের ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু বিজেপির বুথ স্তরের অনেক নেতা দাবি তুলেছিলেন, মিষ্টিমুখের জন্য বাঙালির একেবারে নিজস্ব রসগোল্লা খাওয়ানো হোক। সে দাবি খারিজ হয়ে গিয়েছে। দলের নির্দেশ—রসগোল্লা নয়, খাওয়াতে হবে লাড্ডুই। বিজেপির জেলা সম্পাদক বাপি গোস্বামী বলেন, “অনেকে সুগারের ভয়ে বেশি রসের মিষ্টি খেতে চান না, তা ছাড়া রসে মাখামাখি হওয়ার ভয় থাকে। তা ছাড়া সারা দেশে লাড্ডুর কদর রয়েছে।” তাই শুনেই তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রথম কথা হল বিজেপি জিতবে না। তাই রসগোল্লা বা লাড্ডু কোনও কিছুরই প্রয়োজন হবে না। কিন্তু কথা হল, কেন তারা বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতির উপরে তাদের শীর্ষ নেতারা যেখান থেকে এসেছেন, সেখানকার সংস্কৃতি চাপিয়ে দেবেন? এই দল খুবই বিপজ্জনক।’’ বিজেপির অন্দরেরও খবর, বেশ কয়েকজন স্থানীয় নেতা রসগোল্লার বদলে লাড্ডুর সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট। তাঁরাও ঘনিষ্ঠ মহলে বলছেন, লাড্ডু খাওয়ালে অনেক প্রশ্ন উঠবে। যাঁরা বিজেপির দিকে ঝুঁকেছেন, তাঁদের অনেকে বিরূপও হয়ে যেতে পারেন। যদিও বিজেপির নেতাদের কথায়, ‘‘মিছিমিছি বিতর্ক হচ্ছে। লাড্ডু সহজে বিতরণ করা যায়, সে কারণেই ওই মিষ্টির কথা ভাবা হয়েছে।’’

তৃণমূলের দাবি, যেমন করে হোক জেতার চেষ্টা করছে বিজেপি। সে কারণে ইভিএম যন্ত্রই বদলে দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে। তাই পাহারায় কোনও ত্রুটি রাখতে চান না তৃণমূল নেতারা। স্ট্রংরুমের কাছে জটলা হতে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী, তাই রাতপাহারার কৌশলও বদলে ফেলল তৃণমূল। এক সঙ্গে জড়ো হচ্ছেন না তাঁরা। স্ট্রংরুমে যাওয়ার রাস্তার পাশে কারও বাড়ির বারান্দায় বসে, কোনও দোকানের বন্ধ ঝাঁপের আড়ালে বসে থাকছেন। সেখান থেকেই নজর রাখবেন তৃণমূলকর্মীরা। সন্দেহজনক গাড়ি বা ব্যক্তি দেখলেই বেরিয়ে আসবেন সকলে, খবর দেওয়া হবে জেলা নেতাদের। এ ভাবেই রাতদিন স্ট্রংরুমে নজরদারি চালাচ্ছে তৃণমূল।

মঙ্গলবার দুপুরে স্ট্রংরুমে গিয়ে দেখা মিলল মহম্মদ রফিকুলের। রোজা চলছে তবু ঠায় বসে টিভির ক্যামেরায় পর্দা রেখে। রফিকুল বলেন, “অপরিচিত কাউকে দেখলেই নেতাদের জানাচ্ছি।” স্মার্ট ফোনে ভিডিয়ো তুলে নিচ্ছেন তেমন কিছু দেখলে। সৌরভ বলেন, “রাতের বেলাতেই ইভিএম বদলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বাইনোকুলার হাতে কয়েকজনকে দেখাও গিয়েছে। সে কারণে কেন্দ্রীয় বাহিনী আশেপাশে কাউকে থাকতে দিচ্ছে না। তবে আমরাও নজর রাখছি। দিনরাত পাহারা চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE