Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Lok Sabha Election 2019

তৃণমূল সরকার বাংলাকে কাঙাল করে রেখেছে, রামপুরহাটে বললেন শাহ

বাংলার উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই টাকা ভারতের সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছয়নি বলেও দাবি করেন অমিত শাহ।

রামপুরহাটের সভায় অমিত শাহ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

রামপুরহাটের সভায় অমিত শাহ। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:১৪
Share: Save:

রামপুরহাট থেকে ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর। রাজ্যে বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও ওই সভায় হাজির ছিলেন। সেখান থেকে বাংলার তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন শাহ। তিনি বলেন, “বাংলায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। তাদের উপড়ে ফেলতে হবে।”

অমিত শাহ অভিযোগ করেন, মা-মাটি-মানুষ স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার। কিন্তু বাংলার উন্নয়নে কোনও কাজ করেনি তারা। একমাত্র বিজেপিই বাংলাকে এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।

বাংলার উন্নয়নে কোটি কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু সেই টাকা ভারতের সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছয়নি বলেও অভিযোগ করেন অমিত শাহ। তাঁর কথায়, “ইচ্ছাকৃত ভাবে মমতার সরকার বাংলাকে কাঙাল করে রেখেছে। নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় এলে বাংলার মানুষকে বঞ্চিত হতে হবে না।”

রামপুরহাটে অমিত শাহের সভা।

আরও পড়ুন: বাংলায় বাম-কংগ্রেস-বিজেপি এক হয়েছে মোদীকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে: মমতা​

সোনার বাংলা গড়তে মোদীজিকে ফের ক্ষমতায় আনুন। সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা বলেন মমতা ও রাহুল। কোনওভাবেই কি তা সম্ভব? সন্ত্রাসকে নির্মূল করাই মোদী সরকারের লক্ষ্য। পাকিস্তানকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে। পুলওয়ামা হামলায় ৪০ জওয়ান শহিদ হন। কিন্তু চুপ করে বসে থাকেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার। বরং ঘরে ঢুকে সন্ত্রাসবাদীদের নিকেশ করে এসেছে। তা নিয়ে গোটা দেশে উত্সব হচ্ছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে শোকের ছায়া নেমে এসেছিল। জঙ্গিদের প্রতি আপনার ভালবাসা উছলে পড়তেই পারে। কিন্তু সন্ত্রাস নির্মূল করাই লক্ষ্য মোদী সরকারের। বাংলার প্রণব মুখোপাধ্যায়কে নরেন্দ্র মোদী সরকারই ভারতরত্ন সম্মান দিয়েছে। সারদা ও রোজভ্যালির টাকা খেয়েছে তৃণমূল। নরেন্দ্র মোদীকে ফের সরকার গড়তে দিন। ৯০ দিনের মধ্যে সব চোরকে জেলে পোরা হবে। কলকাতা মেট্রোর জন্যও ১২ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই টাকা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছয়নি। কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল—এতদিন যারাই ক্ষমতায় এসেছে বাংলাকে কাঙাল করে রেখেছে। দরিদ্র মানুষের মাথার উপর ছাদ গড়ে দিতে ১৬ হাজার কোটি টাকা দিয়েছিল মোদী সরকার। কিন্তু দরিদ্র মানুষের মাথার উপর ছাদ গড়ে ওঠেনি। আগের কংগ্রেস ও বাম সরকারের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও পার্থক্য নেই। বাংলার জন্য কিছু করেনি ওরা, শুধু নিজেদের আখের গুছিয়েছে। একদিকে মোদী সরকার দরিদ্র মানুষের জন্য এত কাজ করছে। অন্য দিকে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গরিব মানুষের রক্ত চুষছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার। আদিবাসী মা-বোনেদের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা দিচ্ছে মোদী সরকার। ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি। তার মধ্যে সমস্ত আদিবাসী ও দরিদ্র মানুষকে পাকা বাড়ি করে দেবে মোদী সরকার। সকলের বাড়িতে পানীয় জল ও বিদ্যুত্ পৌঁছে দেওয়া হবে। দরিদ্র, দলিত, আদিবাসী সকলের জন্য প্রচুর কাজ করেছে মোদী সরকার। আদিবাসী সমাজের কল্যাণে ডিস্ট্রিক্ট মিনারেল ফান্ডের মাধ্যমে ৩০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতার পর আর কোনও সরকার এমন পদক্ষেপ করতে পারেনি। পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ, দেশের সব প্রান্তের মানুষ নরেন্দ্র মোদীকেই ফের প্রধানমন্ত্রী দেখতে চান। বাংলার সৃষ্টি-সংস্কৃতি সব নষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একমাত্র নরেন্দ্র মোদীই পারেন বাংলাকে রক্ষা করতে। বাংলার উন্নয়নের জন্য গত পাঁচ বছরে চার লক্ষ ২৪ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তা সত্ত্বেও উন্নয়ন হয়নি বাংলায়। কার পেটে গেল সেই টাকা? দরিদ্র মানুষের টাকা আত্মসাত্ করার জন্য এ বার উচিত শিক্ষা দিন তৃণমূলকে। টিএমসি মানে অর্থ তুষ্টিকরণ, মাফিয়া এবং চিটফান্ড দুর্নীতি। বাংলার মানুষকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাঁরা কাকে ভোট দেবেন। বাঙলাকে যাঁরা কাঙাল করে রেখেছেন তাঁদের, না সোনার বাংলা গড়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া বিজেপিকে। তৃণমূল গুন্ডা, ঘুষখোর এবং অনুপ্রবেশকারীদের সরকার। এদের এ বার বিদায় দিন। আদিবাসীদের উন্নয়নে সাত হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। দরিদ্র মানুষের উন্নয়নে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাংলাকে তৃণমূলের সন্ত্রাস থেকে মুক্ত করতে হবে। মা-মাটি-মানুষের সরকার গড়বেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতাদি। কিন্তু ক্ষমতায় এসে সব ভুলে গিয়েছেন উনি। ‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য’ কবিতা লিখেছিলেন কবিগুরু। ঐক্যবদ্ধ ভারতের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। বাংলা থেকে মমতাকে সরাতে পারলে তবেই মুক্ত বাংলা গড়ে উঠবে। সেই চেষ্টাই করছে বিজেপি। এই বীরভূমেই শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁকে প্রণাম জানাই। কৈলাস বিজয়বর্গীয়র নামেই রাতে ঘুম হয় না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

আরও পড়ুন: ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ বিতর্কে দুঃখপ্রকাশ করলেন, ‘প্রচারের উত্তেজনা’য় মন্তব্য, দাবি রাহুলের​

অমিত শাহের আগে এ দিন রামপুরহাটের সভায় সাধারণ মানুষের উদ্দেশে বক্তৃতা করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেন—

উনুনে রান্না করতে কষ্ট হত মোদীজির মায়ের। তখনই দেশের সব মায়ের কষ্ট দূর করার শপথ নেন নরেন্দ্র মোদী। ক্ষমতায় আসার পর তাই উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে ঘরে ঘরে রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিয়েছেন। এ দেশের প্রধানমন্ত্রী নিজে দারিদ্র দেখেছেন। তাই দরিদ্র মানুষের দুঃখ-কষ্ট বোঝেন উনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE