Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

মোদীর ফোনে তাজ্জব অমিত

মিনিট খানেকের এই ‘ফোনালাপ’-এর অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যেই পুরুলিয়ার বেশ কিছু বিজেপি কর্মীর হয়ে গিয়েছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০০:০০
Share: Save:

হঠাৎ পকেটে বেজে উঠেছিল ফোন। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টা। ও পারের কণ্ঠস্বর বেশ চেনা। টেলিভিশনে হামেশাই শোনা যায়। ‘‘ম্যায় নরেন্দ্র মোদি বোল রহা হুঁ।’’ চমকে উঠেছিলেন অমিতকুমার সর্দার। পুরুলিয়া শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কর্মী তিনি। বলেন, ‘‘কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বুঝতে পেরেছিলাম, ও পার থেকে রেকর্ড করা কথা ভেসে আসছে। কিন্তু আমার বুথের নামটাম সব একেবারে নিখুঁত ভাবে বলা। তাক লেগে যাওয়ার মতো ব্যাপারই বটে।’’

মিনিট খানেকের এই ‘ফোনালাপ’-এর অভিজ্ঞতা ইতিমধ্যেই পুরুলিয়ার বেশ কিছু বিজেপি কর্মীর হয়ে গিয়েছে। দলের জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ফোন পেয়েই প্রত্যন্ত এলাকার অনেক কর্মী আমাদের কাছে জানতে চাইছেন, ব্যাপারখানা কী? তাঁরা রীতিমতো উজ্জীবিত।’’ বিজেপির জেলা সম্পাদক বিবেক রঙ্গা জানান, সপ্তাহ দেড়েক ধরে এই ফোন আসার ব্যাপারটা শুরু হয়েছে। এটি একটি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি। সরাসরি দিল্লি থেকে হচ্ছে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘মেরা বুথ সব সে মজবুত’। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় ২,৪৯০টি বুথ রয়েছে। প্রতি বুথের দশ-বারো জন করে কর্মীর নাম আগেই আমাদের দিল্লির সদর দফতরে পাঠাতে হয়েছে।’’ বিবেকবাবু জানাচ্ছেন, দিল্লিতে পাঠানো হয়েছিল জেলার ৪৭টি মণ্ডলের নেতা, কর্মী, শাখা সংগঠনের সদস্যদের নাম ও যোগাযোগের নম্বরও। এ ভাবে রাজ্যের প্রতিটি জেলার ‘ডেটাবেস’ তৈরি হয়েছে। সেখান থেকেই নরেন্দ্র মোদীর রেকর্ড করা কন্ঠস্বর শুনতে পাচ্ছেন কর্মীরা। তিনি বলেন, ‘‘কখনও নরেন্দ্র মোদীর গলা শোনা যেতে পারে। কখনও অমিত শাহের।’’

বলরামপুরের বড় উরমা পঞ্চায়েত এলাকার ডুমারি গ্রামের আনন্দ মণ্ডল বলেন, ‘‘সোমবার সন্ধ্যায় ফোনটা বাজছিল। নম্বর দেখিনি। ধরতেই শুনি প্রধানমন্ত্রীর গলা।’’ হুড়ার অসিত মাহাতোর অভিজ্ঞতাও একই। মোটরবাইকে যাচ্ছিলেন। পকেটের ফোন বেজে ওঠে। প্রথমে ভেবেছিলেন কেউ মজা করছে। তার পরে মালুম হয়, মজা নয়। অসিত বলেন, ‘‘যাঁদের কাছে ফোন আসছে, তাঁদের মধ্যে একটা বাড়তি উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।’’ বিবেক রঙ্গা বলেন, সোমবারই মানবাজারে আমাদের বুথস্তরের সম্মেলন ছিল। উপস্থিত কর্মীদের জিজ্ঞাসা করলাম, কার কার কাছে নরেন্দ্র মোদীর ফোন এসেছিল। দেখলাম বেশ কয়েক জন হাত তুললেন।’’

এ দিকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো কটাক্ষ করছেন, ‘‘সবাই জানেন কাদের আপদে বিপদে ফোন করলেই পাওয়া যায়। রেকর্ড করা কথা শুনিয়ে পুরুলিয়ার মানুষকে ভোলানোর চেষ্টা চলছে। ভোটেই বোঝা যাবে, হিসেবটা কী দাঁড়াল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Narendra Modi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE